খালেদাকে কারাগারে রেখেই নির্বাচনে যাবে বিএনপি!

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে নানা সংশয় রয়েছে। দলটির শীর্ষ নেতারা নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়ার পক্ষে বিপক্ষে কথা বলে নানা বিভ্রান্তি তৈরি করেছেন। তবে যেকোনো মূল্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। প্রয়োজনে বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাগারে রেখেই দলটি ওই নির্বাচনে অংশ নেবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের দলের মহাসচিবকে এ নির্দেশনা দিয়েছেন।
দলটির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নেওয়া না নেওয়ার সিদ্ধান্তসহ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সেখানেই যেকোনো মূল্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার নির্দেশনা দেন তারেক রহমান। নির্বাচনের আগে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তি না হলে প্রয়োজনে তাঁকে কারাগারে রেখেই নির্বাচন করার নির্দেশ দেন তিনি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রস্তুতি রাখার জন্যও ওই বৈঠকে মির্জা ফখরুলকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়েও তারেককে অবহিত করেন ফখরুল।
আগামী ডিসেম্বরের শেষে একাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচনের আগে দলের মহাসচিবের সঙ্গে তারেক রহমানের এটাই শেষ বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে। গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় তারেকের নির্দেশেই চলছে বিএনপি।
সূত্র আরো জানায়, বৈঠকে ২০ দলীয় জোটসহ উদারপন্থী দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনায় হয়। যত দূর সম্ভব সমন্বয় করে ঐক্য গড়ার তাগিদ দেন তারেক রহমান। ঐক্য না হলে ২০ দলের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে ৩০০ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করার নির্দেশ দেন তিনি। নির্বাচনের মনোনয়ন নিয়ে তারেক কিছু কাজ করছেন, যা ঢাকার সঙ্গে সমন্বয় করা হবে।
লন্ডনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে রোববার সন্ধ্যায় ঢাকায় পৌঁছেছেন বিএনপি মহাসচিব। ফলে এসব বিষয় নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। ঢাকায় ফিরে বিশ্রামে ছিলেন তিনি।
মহাসচিবের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে থাকলে নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া ও প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে। খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে ঢাকায় বিএনপি যে আন্দোলন করছে এ বিষয়টিও তারেককে জানান ফখরুল। তবে শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি যা-ই হোক, ন্যূনতম দাবি আদায় করে নির্বাচনে যাওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয় বৈঠকে। পাশাপাশি নির্বাচনের আগ পর্যন্ত, বিশেষ করে তফসিল ঘোষণার পরও সরকারকে চাপের মুখে রাখার জন্য আন্দোলন করার নির্দেশনা দেন তারেক রহমান।
গত ১৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব মিরোস্লাভ জেনকার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ফখরুল। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিএনপির দুই নেতা তাবিথ আউয়াল ও লন্ডনপ্রবাসী হুমায়ুন কবীর। জাতিসংঘ থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে লন্ডনে তিনি যাত্রাবিরতি করেন। স্থানীয় সময় শনিবার লন্ডনে পৌঁছান মির্জা ফখরুল। তারেকের সঙ্গে বৈঠক শেষে ওই দিনই রাত ৮টায় এমিরেটস বিমানের একটি ফ্লাইটে বাংলাদেশের পথে রওনা হন তিনি। গত ১১ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেছিলেন মির্জা ফখরুল।
আরকেএইচ