ব্যয়ের হিসাব দিয়ে নতুন করে অনুদান চাইলো জুলাই ফাউন্ডেশন
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এই পর্যন্ত জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সার্বিক সহায়তা নিশ্চিতে গঠন হওয়া জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন অর্থ সংকটে ভুগছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) দেয়া এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আয়ব্যয়ের হিসাবের সাথে এসব তথ্য জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংস্থাটি জানায়, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত ব্যক্তিদের সার্বিক সহায়তা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে গঠিত জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠালগ্নে ১০০ কোটি টাকার প্রাথমিক অনুদান পায়। পরবর্তীতে বিভিন্ন দাতা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে আরও ১৯,৮৬,৬৫,৮৯২ টাকা অনুদান যুক্ত হওয়ায় ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত মোট তহবিল দাঁড়ায় ১১৯,৮৬,৬৫,৮৯২ টাকা।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ফাউন্ডেশন শহীদ পরিবারের কল্যাণ, আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মানবিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই–আগস্টের ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থানে—৮৪৫ জন শহীদ ১৪,৬৩৪ জন আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারী ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ব্যয়ের হিসাবে তারা জানায়, ফাউন্ডেশন এখন পর্যন্ত—৮২৩টি শহীদ পরিবারকে ৫ লাখ টাকা করে সহায়তা, তিনটি ক্যাটাগরির ৬,০০৮ জন আহতকে বিকাশ, পে–অর্ডার ও ক্রস–চেকের মাধ্যমে মোট ১১৩,৬৩,০০,০০০ টাকা প্রদান করেছে। এর পাশাপাশি আহতদের চিকিৎসা, পুনর্বাসন, জরুরি সহায়তা, সামাজিক নিরাপত্তা ও শহীদ পরিবারের জীবনমান উন্নয়নে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
সহায়তা পায়নি আরও ২২টি শহীদ পরিবার, ৮,৩২৮ জন আহত ব্যক্তি। আর্থিক সহায়তার অপেক্ষায় রয়েছে। এ জন্য প্রয়োজন অতিরিক্ত ২৪৩,৬২,০০,০০০ টাকা। চলতি তহবিলে মাত্র ৫ লাখ টাকা অবশিষ্ট আছে।
এছাড়াও ফাউন্ডেশনের ৪৪ কর্মকর্তা–কর্মচারীর বেতন, অফিস ভাড়া, প্রশাসনিক খরচ, যানবাহন, জ্বালানি, আসবাবপত্র, চিকিৎসা সরঞ্জাম, জরুরি চিকিৎসা সহ বিভিন্ন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় কার্যক্রম পরিচালনা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছে ফাউন্ডেশনটি।
২০২৪–২৫ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার বিভাগের প্রদত্ত ৩ কোটি টাকার বরাদ্দে অক্টোবর পর্যন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হলেও বর্তমানে তহবিলে অবশিষ্ট মাত্র ৫ লাখ টাকা, যা দিয়ে কার্যক্রম চালানো অসম্ভব।
ফাউন্ডেশন জানায়, মাত্র ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে এক মাসে— ২৭টি জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ভুক্তভোগী পরিবারসহ মোট ৩৯টি পরিবারকে ক্ষুদ্র ব্যবসা, গবাদিপশু, অটোরিকশা, সিএনজি ও বিভিন্ন জীবিকা–উপকরণ প্রদান করে স্থায়ী জীবিকা ও স্বাবলম্বিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এই উদ্যোগ সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে।
