ঢাকা সোমবার, ১৭ই নভেম্বর ২০২৫, ৪ঠা অগ্রহায়ণ ১৪৩২


শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ রায় শুনে অশ্রুসিক্ত আবু সাঈদের বাবা-মা, দ্রুত কার্যকরের দাবি


১৭ নভেম্বর ২০২৫ ২১:২২

সংগৃহীত

পীরগঞ্জের বাবনপুর গ্রাম। প্রতিদিনের মতো আজ সকালেও ঘুম থেকে উঠে মাটির ঘরের মেঝে এবং উঠোন ঝাড়ু দিচ্ছিলেন জুলাই বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম। বারবার আনমনা হচ্ছিলেন তিনি। অন্যদিকে, আবু সাঈদের কবরের পাশে বসে আনমনে কি যেন ভাবছিলেন তার বাবা এবং ভাইয়েরা। জুলাই বিপ্লবের প্রথম মামলার রায় হবে, সেই ভাবনাই যেন ঘুরপাক খাচ্ছিল তাদের মনে। রায় উপলক্ষ্যে সকাল থেকে অনেক সহযোদ্ধা এবং ভিড় ভিড় জমান কবরের পাশে। 

 

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডাদেশ শোনার সাথে সাথেই যেন বুকটা কিছুটা হালকা হল বাবা-মায়ের। সেইসাথে, খুশির অশ্রু ঝড়লো পরিবার, এলাকাবাসী এবং সহযোদ্ধাদের। তবে এ রায়ে সন্তুষ্ট হলেও, কার্যকর করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন তারা।

 

সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রায় ঘোষণার সাথে সাথে প্রতিক্রিয়া জানান আবু সাঈদের বাবা-মা, পরিবারের সদস্যসহ এলাকাবাসী ও সহযোদ্ধারা। 

 

শহীদ আবু সাইদের মা মনোয়ারা বেগম জানান, আমার সন্তান না থাকার যে শূন্যতা সেটা হয়তো পূরণ হবে না। কিন্তু শেখ হাসিনার ফাঁসির যে হুকুম হল, তাতে আমি খুশি। শুনেছি হাসিনা ভারত পালিয়ে গেছে। সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে ফাঁসি কার্যকর করতে হবে। আমি যদি সেটা দেখে যেতে পারি, তাহলেই আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে। যদি ফাঁসি কার্যকর করা না হয়, তাহলে আমার ছেলের আত্মা শান্তি পাবে না।

 

শহীদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন জানান, শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের অন্য এমপি মন্ত্রীরা যে শুধু আমার ছেলেকে খুন করেছে সেটা নয়। দুই হাজারেরও বেশি মানুষকে তারা গুলি করে হত্যা করেছে। ১৭ বছরে হাজার হাজার মানুষ গুম-খুন করেছে। শুধু ফাঁসির রায় দিলে হবে না। আমি চাই দ্রুতগতিতে ভারত থেকে তাকে সরকার ফিরিয়ে আনুক এবং ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করুক। তাহলে হাজার হাজার শহীদ পরিবারে কিছুটা হলেও স্বস্তি আসবে। 

 

শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই আবু হোসেন জানান, আমরা কয়েক দিনে আওয়ামী লীগের তাণ্ডব দেখেছি। তারা বিভিন্ন স্থানে বাসে অগ্নিসংযোগ করেছে। বিভিন্ন স্থাপনায় অগ্নিসংযোগ করেছে। তারা আগুন সন্ত্রাস থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। আমরা রায়ে সন্তুষ্ট। এই রায় হওয়ার সাথে সাথে আওয়ামী লীগের লোকজন শহীদ আহত এবং জুলাইযোদ্ধাদের পরিবারগুলোর প্রতি আরো ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তারা তাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালাতে পারে। আমরা উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছি। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাই, শহীদ ও আহত জুলাইযোদ্ধাদের এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।