শেখ হাসিনার রায় ঘিরে রাজধানীজুড়ে কড়া নিরাপত্তা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘিরে রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের চারপাশ কড়া নিরাপত্তায় মোড়ানো হয়েছে। গেটের সামনে সেনাবাহিনীকে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। আর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সামনে ও ভেতরে পুলিশ র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। হাইকোর্ট ও ট্রাইব্যুনাল এলাকায় নেয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাজধানীর দোয়েল চত্বর থেকে শিক্ষাভবন অভিমুখী সড়কে যানচলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। সন্দেহভাজনদের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
তবে রাজধানীতে অফিসগামী ও সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক চলাচল দেখা গেছে। সড়কে রয়েছে যানবাহনের ভিড়, চলছে গণপরিবহন ও মেট্রোরেল। পুলিশ বলছে, যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে মাঠে রয়েছে পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলার অপর দুই আসামি হলেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। এর মধ্যে সাবেক আইজিপি মামুন ‘রাজসাক্ষী' হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ মামলার রায়ের এই দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে, গত ১ জুন শেখ হাসিনাসহ এই তিন আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। আনুষ্ঠানিক অভিযোগে এই তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়।
অভিযোগগুলো হলো— গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শেখ হাসিনার উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ প্রদান; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পোড়ানোর অভিযোগ। এই পাঁচ অভিযোগে তিন আসামির বিরুদ্ধে গত ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
আসামি শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান পলাতক। সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এ মামলার একমাত্র গ্রেফতারকৃত আসামি।
