বদলি নয়, অপসারণ দাবি রাশেদ মেহের চৌধুরীর
-2024-08-11-09-26-30-2024-08-14-18-21-56.jpg)
# অস্থিরতা কাটেনি বিমানে, ১০ দিন ধরে আন্দোলন চলমান
# নানাভাবে দায় কাটানোর চেষ্টা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলছেন আন্দোলনকারীরা
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে অস্থিরতা কাটেনি। গত প্রায় ১০ দিন ধরে কর্মকর্তা কর্মচারীরা অব্যাহতভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের বিমান থেকে বিদাই, দূর্ণীতিবাজদের অপসারণ, অস্থায়ী কর্মচারীদের স্থায়ীকরনসহ বেশকিছু দাবিতে তারা আন্দোলন করে যাচ্ছেন। বিমানে পাঁচ কর্মকর্তার সিন্ডিকেটের সব থেকে বেশি দূর্নীতিবাজ হিসেবে চিহ্নিত ও ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ব্যারিষ্টার ফজলে নূর তাপসের ঘনিষ্ট সহযোগী রাশেদ মেহের চৌধুরীকে অপসারণ না করে তার পদ থেকে বদলি করা হয়েছে। এতে করেও আরও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার বদলির আদেশ দেয়ার পরপরই আবারো আন্দোলন শুরু হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে অস্থিরতা এখন চরম আকার ধারণ করেছে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে ডেপুটেশনে আসা কর্মকর্তাদের পদত্যাগের দাবিসহ বেশকিছু দাবিতে চলছে এই আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এ আন্দোলন শুরু হয় । বুধবারও আন্দোলন করেন বিমানের নানা বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীরা। চলমান এ আন্দোলনকে ঘিরে শুরু হয়েছে চরম অস্থিরতা। অনেকটা আতঙ্কে ডেপুটেশনে আসা কর্মকর্তাসহ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় যারা বিমানে লুটপাট করেছে তারা অফিসেই আসছেন না।
জানা গেছে, আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে বিমানের নিজস্ব কর্মীদের পদ রদবদল করা হয়। এর মধ্যে শাকিল মেরাজকে পরিচালক কর্পোরেট এ্যান্ড প্ল্যানিং করা হয়েছে। আশরাফুল আলমকে পদোন্নতি দিয়ে মার্কেটিং ও সেলসের পরিচালক করা হয়। আল মাসুদ খানকে জনসংযোগ শাখা থেকে লিগ্যাল শাখায় এবং আলোচিত রাশেদ মেহের চৌধুরীকে লিগ্যাল থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারের ইন্ট্রাক্টর হিসেবে বদলি করা হয়।
এদিকে রাশেদ মেহের চৌধুরীকে অপসারণ না করে শুধুমাত্র বদলি করার কারণে ক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। ব্যারিষ্টার ফজলে নুর তাপসের ঘনিষ্ট সহযোগী হিসেবে তিনিসহ অন্তত ৫ কর্মকর্তা বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়েছেন বলে অভিযোগ করছেন তারা। আর এ কারণে তার বদলি নয়, তাকে অপসারণ করতে হবে।
তাদের দাবি, উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা নানাভাবে দায় কাটানোর চেষ্টা করছেন। রাশেদ মেহের চৌধুরীর তারা দ্রুত অপসারণ দাবি করেন।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে তারা বলেন, ‘আমাদের মূল দাবি বিমানের উর্ধ্বতন পদগুলোতে অ্যাডমিন ক্যাডারের নিয়োগ বাতিল।’ আমরা এ দাবিতে আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। পাশাপাশি আমাদের অন্যান্য আরও কিছু দাবি রয়েছে। এর মধ্যে কিছু দাবি মেনেও নেয়া হয়েছে।
তারা বলছেন, আমাদের মূল দাবি থেকে আমরা সরে আসেনি। আমাদের মূল দাবি নিয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্ঠাকে লিখিত আকারে জানাবো।
তাদের অভিযোগ, বিমানে ডেপুটেশনে আসা কর্মকর্তারাই সবকিছুর নিয়ন্ত্রক। বিমানে কাজ করার কোন অভিজ্ঞতা না থাকলেও রাষ্ট্রীয় এই প্রতিষ্ঠানটির সকল গুরুত্বপূর্ণ পদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রন তাদের হাতে। পদোন্নতি, পদায়ন সবকিছুই তাদের হাতে থাকার কারণে নিজস্ব কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে নিস্পেশিত, নিপিড়ত এবং হতাশাগ্রস্থ। আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় পড়ার কারণে কর্মীদের মধ্যে এক ধরনের ক্ষোভেরও সৃষ্টি হয়েছে। বিগত সরকারের লেজুড়বৃত্তি করা কিছু কর্মকর্তার কারণে তাদের বছরের পর বছর ধরে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। তবে আকস্মিকভাবে বিগত সরকারের পতনের পর এ সকল কর্মকর্তা তাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করেন। আর সেই আন্দোলন এখনও চলমান রয়েছে।