ঢাকা রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


৩৫ বছর পর সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার রায়, দুইজনের যাবজ্জীবন


১৩ মার্চ ২০২৪ ১২:৩৮

সংগৃহীত

প্রায় ৩৫ বছর আগে পারিবারিক দ্বন্দ্বে রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় দুইজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার (১৩ মার্চ) সকালে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক মোহাম্মদ আলী হোসাইন এই রায় ঘোষণা করেন।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান ও মারুফ রেজা। কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদেরকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করেছেন আদালত।

অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সগিরা মোর্শেদের ভাশুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন এবং মন্টু মোড়লকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ মোহাম্মদ আলী হোসাইনের আদালতে এই রায় ঘোষণা করার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন বিচারক ছুটিতে থাকায় আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক আক্তারুজ্জামান রায় ঘোষণার জন্য ১৩ মার্চ দিন ধার্য করেন।

১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় সগিরার স্বামীর করা মামলায় মারুফ রেজা ও আনাস মাহমুদসহ পাঁচজনকে আসামি করা হয়।

২০২০ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

২০২১ সালের ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালত সগিরা মোর্শেদের ভাসুরসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এর মধ্যদিয়ে দীর্ঘ ৩১ বছর পর এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু হয়।

এরপর গত বছরের ১১ জানুয়ারি মামলার বাদী ও সগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্যদিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এ মামলায় ১৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।

গত ২৫ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ দায়রা জজ মোহাম্মদ আলী হোসাইনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।

মামলার আসামিরা হলেন-সগিরা মোর্শেদের ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী ও তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা ওরফে শাহীন, শ্যালক আনাস মাহমুদ ওরফে রেজওয়ান, মারুফ রেজা ও মন্টু মোড়ল। তারা সবাই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, সগিরা মোর্শেদের পরিবারের সঙ্গে আসামি শাহীনের বিভেদ তৈরি হয়েছিল। এছাড়া শাশুড়ি সগিরাকে অপছন্দ করতেন এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে সগিরা-শাহীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল।

সম্বোধন করা নিয়েও ছিল পারিবারিক দ্বন্দ্ব। সগিরার কাজের মেয়েকে মারধর করেন আসামি ডা. হাসান আলী চৌধুরী। এ নিয়ে পারিবারিক বৈঠকে সগিরাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন শাহীন।

আসামিরা নিজেদের বাসায় বসে সগিরাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডা. হাসান আলী তার চেম্বারে অন্য আসামি মারুফ রেজার সঙ্গে ২৫ হাজার টাকায় হত্যার চুক্তি করেন।

১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে মেয়েকে স্কুল থেকে আনতে সগিরা মোর্শেদ সিদ্ধেশ্বরীর বাসা থেকে বের হন। স্কুলের সামনে পৌঁছলে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় নিহতের স্বামী আব্দুস সালাম চৌধুরী রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

২০১৯ সালের ১৬ জানুয়ারি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আদালতের জিআর শাখায় এ মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

নতুনসময়/এএম


পারিবারিক, দ্বন্দ্ব, রাজধানী, সিদ্ধেশ্বরী, সগিরা মোর্শেদ, মামলা, রায়, আদালত