ঢাকা রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১


ঢাবি ছাত্রী ধর্ষণের মামলায় প্রতিবেদন ১৬ মার্চ


২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০০:১৭

রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১৬ মার্চ দিন ধার্য করেছেন অদালত।

রোববার মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রতিবেদন দাখিল না করায় ঢাকা মহানগর হাকিম বেগম ইয়াসমিন আরা নতুন এ দিন ধার্য করেন।

গত ৫ জানুয়ারি ঢাবির ওই ছাত্রী কুর্মিটোলার অদূরে শেওড়া এলাকায় বান্ধবীর বাসায় যেতে ক্যাম্পাসের বাসে উঠেছিলেন। সন্ধ্যার দিকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল ও গলফ ক্লাবসংলগ্ন সড়কে নামেন তিনি। এরপর এক দুর্বৃত্ত তার মুখ চেপে জোর করে টেনে নিয়ে যায়। অদূরেই ঝোপের মধ্যে নিয়ে ধর্ষণ করে তাকে। একপর্যায়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। ঘটনার অন্তত তিন ঘণ্টা পর রাত ১০টার দিকে চেতনা ফিরলে মেয়েটি সেখান থেকে পালিয়ে আসেন। স্বজনরা ঘটনা জানার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেন।

ওই ঘটনায় ছাত্রীর বাবা রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। এরপর পুলিশ ও র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থা ধর্ষককে শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে মাঠে নামে। শেষ পর্যন্ত ঘটনা জানাজানির তিন দিনের মাথায় র‌্যাব-১-এর একটি দল রাজধানীর কাওলা এলাকা থেকে ভবঘুরে মজনুকে গ্রেপ্তার করে। ওইদিনই সংবাদ সম্মেলন করে র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, গ্রেপ্তার মজনু একজন সিরিয়াল রেপিস্ট (ক্রমিক ধর্ষক)। এর আগেও সে একাধিক ভবঘুরে, ফুটপাতে থাকা প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ করেছে। গ্রেপ্তারের পর সে ঢাবি ছাত্রীকে ধরে নিয়ে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। ঘটনার শিকার মেয়েটিও ছবি দেখে মজনুকে ধর্ষক হিসেবে চিহ্নিত করেছে।

অবশ্য ঘটনার পর ছাত্রীকে উদ্বৃত করে তার স্বজনদের বয়ানে ধর্ষকের দৈহিক গঠনের বিবরণ এবং ঘটনার যে বিবরণ কোনো কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়, তাতে গ্রেপ্তার মজনুর দৈহিক গঠন নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। 'গ্রেপ্তার ব্যক্তি ধর্ষক হতে পারে না'- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন আলোচনাও ছড়িয়ে পড়ে।

তবে চাঞ্চল্যকর ওই মামলার তদন্ত তদারকি কর্মকর্তা ডিবি-উত্তর বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান সম্প্রতি সমকালকে বলেন, এরই মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তার হাতে ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন, ফরেনসিক পরীক্ষার প্রতিবেদন এবং মেয়েটির মোবাইল ফোনের ফরেনসিক প্রতিবেদন হাতে এসেছে। এই ধরনের বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে তারা নিশ্চিত হয়েছেন গ্রেপ্তার মজনুই ধর্ষক। এ ছাড়া ঘটনার শিকার মেয়েটির দেওয়া জবানবন্দি এবং আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে প্রমাণিত গ্রেপ্তার ব্যক্তিই ধর্ষক। এ নিয়ে সন্দেহের কোনো কারণ নেই।

ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, তাদের টিম মামলাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করেছে, সব ধরনের আলামত বিশ্লেষণ করেছে। আসামিকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। সব সাক্ষ্য-প্রমাণ হাতে নিয়েই ধর্ষক মজনুর বিরুদ্ধে শিগগির আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হবে।