বিতর্ক থাকা সত্ত্বেও ইহুদিদের ভোট টানতে তৎপর জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক মেয়র নির্বাচন
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে ইসরায়েল ও ইহুদি-বিরোধী মনোভাব (অ্যান্টিসেমিটিজম) বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষাপটে জোহরান মামদানির অবস্থান ও কর্মকাণ্ড বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছে। ফিলিস্তিনি অধিকারের সমর্থক হিসেবে পরিচিত মামদানি নির্বাচিত হলে শহরের প্রথম মুসলিম মেয়র হবেন।
এই রাজনীতিবিদ ইসরায়েল সরকারের নীতির তীব্র সমালোচক এবং ফিলিস্তিনপন্থী হিসাবে পরিচিত। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামলার পর গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের ঘটনার মধ্যে তার বক্তব্য আরও আলোচনার জন্ম দেয়।
'গ্লোবালাইজ দ্য ইন্তিফাদা' স্লোগানটি নিন্দা করতে রাজি না হওয়ায় ইহুদি সম্প্রদায়ের একটি অংশ তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। পরে তিনি ব্যাখ্যা দেন যে তিনি এই স্লোগান ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করবেন।
তিনি আরও বলেন, ইসরায়েলকে একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে নয়, বরং সকল নাগরিকের সমান অধিকারের রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া উচিত।
মামদানির বিডিএস (বয়কট, ডাইভেস্টমেন্ট অ্যান্ড স্যাংশনস) আন্দোলনের প্রতি সমর্থন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বাড়তে থাকা ইহুদি-বিরোধী হামলার প্রেক্ষাপটে ইহুদি সম্প্রদায়ের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করেছে। অনেকের কাছে তার অবস্থান উদ্বেগের কারণ হলেও তিনি পুরো প্রচারাভিযান জুড়ে ইহুদিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করেছেন।
তিনি মূলধারার ও উদারপন্থী ইহুদিদের সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নিউইয়র্ক সিটির ইসরায়েল ডে প্যারেডে এনওয়াইপিডির নিরাপত্তা ব্যবস্থা বজায় রাখার আশ্বাস দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে উপাসনালয়গুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন। এর পাশাপাশি প্রতিনিধি জেরি ন্যাডলার এবং সিটি কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডারের মতো প্রভাবশালী ইহুদি রাজনীতিবিদরাও তাকে সমর্থন দিয়েছেন।
তবে সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এবং কার্টিস স্লিওয়া অভিযোগ করেছেন যে মামদানি ইহুদি ভোটারদের নিরাপদ অনুভূত করাতে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেননি। এছাড়া তারা দাবি করেছেন, অন্য দেশের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা না করে ইসরায়েলকে একতরফাভাবে সমালোচনা করায় মামদানি ভণ্ডামি করছেন।
ইহুদি ভোটারদের সঙ্গে সম্পর্ক সুদৃঢ় করা মামদানির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার অবস্থান অনেকের কাছে বিতর্কিত হলেও সংলাপ, আশ্বাস ও জোট গঠনের মাধ্যমে তিনি বিরোধ কমানোর চেষ্টা করছেন। শেষ পর্যন্ত এই প্রচেষ্টা কতটা সফল হবে এবং তা নির্বাচনের ফলাফলে কীভাবে প্রতিফলিত হবে—সেটিই এখন দেখার বিষয়।
