ঢাকা রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪, ৬ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


দরকার হলে আমাকে জুতা মারুন কিন্তু আমার উপর রাগ করে দেশের ক্ষতি করবেন নাঃনরেন্দ্র মোদি


২৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৮:১০

‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য এই দেশের বৈশিষ্ট্য। আমরা সবসময় তা বজায় রাখার চেষ্টা করি। ঐক্যের উপর ভিত্তি করেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়।’ রবিবার দুপুরে দিল্লির রামলীলা ময়দানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই মন্তব্যই করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরেই উত্তাল হয়ে ওঠে দেশের বিভিন্ন রাজ্য। অসম থেকে উত্তরপ্রদেশ বিক্ষোভের আগুন জ্বলে ওঠে বিভিন্ন প্রান্তে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় যে এখনও পর্যন্ত অসমে পাঁচজন, কর্ণাটকে দু’জন ও উত্তরপ্রদেশে এক শিশু-সহ মোট ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি বিজেপির বিভাজনের রাজনীতির বিরোধিতা করে দেশব্যাপী আন্দোলনের ডাক দিয়েছে। তাই এবিষয়ে প্রথমে ধীরে চলো নীতির সাহায্য নিলেও এবার তেড়েফুঁড়ে নাগরিকত্ব সংশোধিত আইনের স্বপক্ষে প্রচারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। ১০দিন ধরে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এই কাজ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। রবিবার দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকে যার সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

প্রায় দেড়লক্ষ মানুষের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে CAA নিয়ে বিরোধীরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। বলেন, ‘দেশের মানুষের ভালর জন্যই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাশ হয়েছে। এতে দলিত ও গরিব সব মানুষেরই সুবিধা হবে। কিন্তু, কিছু রাজনৈতিক দল নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে ভুয়ো ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। গুজব ছড়িয়ে অশান্তিতে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে। এতে বিশ্বের দরবারে ভারতের ভাবমূর্তির ক্ষতি হচ্ছে। তবু রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে এই ধরনের মিথ্যের সাহায্য নিচ্ছে কিছু দল। আমি প্রশ্ন করতে চাই, কেন এভাবে আমাকে আক্রমণ করতে গিয়ে দেশের সম্মান নষ্ট করা হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় আমার কুশপুতুল পোড়ানো হচ্ছে। আমি অনুরোধ করব আমাকে আক্রমণ করছেন করুন। দরকার হলে জুতো মারুন কিংবা কুশপুতুল পোড়ান। কিন্তু, আমার উপর রাগ করে দেশের সম্পত্তির ক্ষতি করবেন না। গরিব অটোচালকের অটো ভাঙবেন না। স্বাধীনতার পর থেকে ৩৩ হাজার পুলিশকর্মী নিজের জীবন বলিদান দিয়েছেন। কিন্তু, এখনও তাঁদের উপর অযথা আক্রমণ করেছে নাগরিকত্ব আইনের বিরোধীরা। যে আইন পাশ হয়েছে তাতে কেউ বঞ্চিত হবেন না। তবু মুসলিমদের উসকানোর চেষ্টা চলছে। আমি বলতে চাই সংসদে যে আইন পাশ হয়েছে, তাতে হিন্দু, মুসলিম, শিখ, বৌদ্ধ বা খ্রিশ্চান সবারই সুবিধা হবে।’

ডিটেনশন ক্যাম্প ও এনআরসি(NRC) সম্পর্কে কংগ্রেস ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে বলেও আজকের সভা থেকে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তীব্র আক্রমণ করে বলেন, ‘কংগ্রেসের মতো বিভাজনের রাজনীতি বিজেপি করে না। তা সত্ত্বেও নিজেদের স্বার্থের জন্য মিথ্যে কথা বলছে ওরা। এনআরসি কংগ্রেস আমলে হয়েছিল। কিন্তু, কংগ্রেস তা বাস্তবায়িত করতে পারেনি। আর আমাদের সময়ে সু্প্রিম কোর্টের নির্দেশে শুধুমাত্র অসমে এনআরসি হয়েছে। বাকি জায়গায় না হলেও অযথা তার বিরোধিতা করা হচ্ছে। আর সেই শুনে কিছু লোক কাকের পিছনে দৌড়াচ্ছে। এনআরসি বা নাগরিকত্ব আইনের ফলে এদেশে জন্ম নেওয়া মুসলিম নাগরিকদের কোনও অসুবিধা হবে না। একথা জানা সত্ত্বেও মুসলিমদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠানোর বিষয়ে মিথ্যে প্রচার হচ্ছে।’