ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ৩০শে অক্টোবর ২০২৫, ১৫ই কার্তিক ১৪৩২


হীরালাল সেন: মানিকগঞ্জ থেকে যেভাবে হলেন উপমহাদেশের প্রথম সিনেমা নির্মাতা


২৯ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:৪৪

সংগৃহীত

১৮৮৭ সাল। টাইমস অব ইন্ডিয়ায় একটি খবর প্রকাশিত হয়। বোর্ন অ্যান্ড শেফার্ড কোম্পানির উদ্যোগে 'রামপাট থেকে হুগলিতে সূর্যাস্ত' নামক একটি ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে স্বর্ণপদক জেতেন ২১ বছর বয়সী এক যুবক— নাম তার হীরালাল সেন।

 

মানিকগঞ্জে জন্ম নেয়া এই যুবক ছিলেন অখ্যাত আলোকচিত্রশিল্পী। তার ক্যারিজম্যাটিক ফটোগ্রাফি তাক লাগিয়ে দেয় প্রতিযোগিতার বিদেশি বিচারকদের। তাদের মনে সন্দেহ দানা বাঁধে। পরে জাস্টিস ম্যাকলেনের উপস্থিতিতে হীরালালকে প্রমাণ করতে হয়– ছবিগুলো তার তোলা। ম্যাকলেন এতোই মুগ্ধ হন যে, হীরাকে আরও একটি স্বর্ণ দ্বারা মুড়িয়ে দেন। এই প্রতিযোগিতায় পরপর সাতবার ছবি তুলে স্বর্ণপদক জেতার রেকর্ড গড়েন হীরালাল।

 

উপমহাদেশের রাজনীতি থেকে খেলার ময়দান, সব ক্ষেত্রেই ছিল বাঙালিদের অনন্য পদচারণা। শিল্প-সাহিত্য বিশেষত চলচ্চিত্রও তার ব্যতিক্রম নয়। এই ভূখণ্ডে সিনেমার শুরুটা হয়েছিল একজন বাঙালি যুবকের হাত ধরে। আপনি এতক্ষণে বুঝে গেছেন, কী তার নাম। হুম, হীরালাল সেন।

 

১৮৮৯ সালে থমাস আলভা এডিসন চলমান ছবি দেখার প্রথম দিককার যন্ত্র কিনেটোস্কোপ আবিষ্কার করেন। ধীরেধীরে চলচ্চিত্র প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ে দেশ থেকে দেশে। ধারাবাহিকভাবে আসে বায়োস্কোপ, সিনেমাটোস্কোপ যন্ত্র। চলমান ছবির চাঞ্চল্যকর বিষয়টি আলোড়ন তোলে হীরালালের মনে। জীবনের গন্তব্য ঘুরে যায় ফটোগ্রাফি থেকে বায়োস্কোপের দিকে। মায়ের থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে এক মার্কিন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পুরোনো প্রোজেক্টর কেনেন। হীরালালা ছবি দেখাতেন মাঠে-ময়দানে তাঁবু খাটিয়ে, ছবি দেখাতেন থিয়েটার হলের ভেতরে। ১৮৯৮ সালে গড়ে তোলেন ‘রয়্যাল বায়োস্কোপ কোম্পানি’। উপমহাদেশে প্রথম সিনেমা বানিয়েছেন কে, এ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে কিন্তু হীরালাল সেন যে এই অঞ্চলের প্রথম চলচ্চিত্র প্রদর্শক– এ বিষয়ে কারও কোনো সন্দেহ নেই।