ঢাকা শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


মাউশির নির্দেশ উপেক্ষা করে অবস্থান কর্মসূচিতে অনড় শিক্ষকরা


১৯ জুলাই ২০২৩ ১৯:১০

ছবি সংগৃহীত

মাধ্যমিক উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে শিক্ষকদের স্কুলে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দিলেও সরকারিকরণের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে সরকারিকরণের এক দফা দাবিতে এ কর্মসূচি চলছে।

বুধবার (১৯ জুলাই) দুপুর দেখা গেছে, শিক্ষকরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে সরকারিকরণের দাবি জানাচ্ছেন।

শিক্ষকরা বলছেন, তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে সরকারিকরণের দাবি নিয়ে রাজপথে অবস্থান করছেন। কোনও নোটিশে ফিরে যাবেন না। সরকারিকরণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তারা রাজপথেই থাকবেন। এদিকে, দাবি নিয়ে কথা বলতে শিগগিরই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

এ বিষয়ে বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে দু’একদিনের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। যদিও আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের এক দফা ঘোষণা আশা করছি।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারিকরণের ঘোষণা দিলে আমরা রাজপথ ছেড়ে দেব। আর দাবি আদায়ে যে কয়দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থেকেছে, সে কয়দিনের ছুটি গ্রীষ্মকালীন ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করবো।

গত ১১ জুলাই থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন বিটিএ নেতারা। গত ১৬ জুলাই থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানোর কর্মসূচি পালন করছেন তারা। অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা কয়েক হাজার শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কের দুই পাশে তারা অবস্থান নিয়েছেন। ফলে প্রেস ক্লাবের সামনে পল্টন থেকে কদম ফোয়ারাগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা শিক্ষকদের সড়কের একটি লেন ছেড়ে দিতে বলছেন। বিটিএ নেতারাও সাধারণ শিক্ষকদের সড়কের একটি লেন ছেড়ে দিয়ে অবস্থান নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। সোমবার অবস্থানরত শিক্ষকরা সড়কের দুই লেনে অবস্থান করায় তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছিল পুলিশ।

এ ঘটনার পর শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিক্ষকদের দাবি-দাওয়াগুলো নিয়ে তারা যেন শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

অবস্থানরত শিক্ষকরা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। একই কারিকুলামে একই সিলেবাসে পাঠদান করিয়েও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রধানদের থেকে এক ধাপ নিচে বেতন দেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়।

তাছাড়া বিগত কয়েক বছর যাবত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেওয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি।