‘তোর বোনকে জবাই করেছি, বাড়িতে গিয়ে দ্যাখ’

‘তোর বোনকে জবাই করেছি, বাড়িতে গিয়ে দ্যাখ।’ নিজ স্ত্রীকে খুনের পর এভাবেই শ্যালককে ফোন দিয়ে কথা বলেন, ঘাতক স্বামী নুরুল আমিন। বাগেরহাটের শরণখোলায় স্ত্রী লাকি বেগম হত্যার ২১ ঘণ্টার মাথায় প্রধান আসামি ও ঘাতক স্বামী নূরুল আমিন হাওলাদারকে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
শুক্রবার (১০ মে) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে বাগেরহাট আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন ভোর ৪টার দিকে উপজেলার আমড়াগাছিয়া সাতঘর এলাকার নিজ বাড়িতে নূরুল আমিন তার স্ত্রী লাকি বেগমকে (২৮) সিলিং ফ্যানের বাট দিয়ে পিটিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে। পরে ঘাতক তার আট বছরের ছেলে জিহাদ ও দুই বছরের মেয়ে জেরিনকে নিয়ে সেখানে থেকে চলে যান। ওই রাতে দুই সন্তানকে তার এক বোনের বাসায় রেখে পালিয়ে যান নূরুল।
এ ঘটনার সত্যতা জানিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শরণখোলা থানার এসআই সুদেব পাল বলেন, মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে নূরুল আমিনের অবস্থান শনাক্ত করা হয়। পরবর্তিতে এসআই আমির হোসেনসহ পুলিশের একটি দল নিয়ে সোনাডাঙ্গা থানার পুলিশের সহায়তায় রাত ১২টার দিকে সোনাডাঙ্গা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে শরণখোলায় নিয়ে আসা হয়। হত্যার ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এই মামলায় অজ্ঞাত আরও কয়েকজন আসামি আছেন। তবে, তদন্তের স্বার্থে বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না বলে জানান ওই কর্মকর্তা।
নিহত লাকির ভাই এ ঘটনায় বাদি হয়ে তার ভগ্নিপতিসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের নামে শরণখোলা থানা একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলার সূত্র ধরে মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
উল্লেখ্য, আট বছর আগে রায়েন্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের আবদুল হক হাওলাদারের ছেলে নূরুল আমিনের সাথে উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের আমড়াগাছিয়া কালিবাড়ি গ্রামের খলিল হাওলাদারের মেয়ে লাকির বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই বিভিন্ন কারণে তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ শুরু হয়। এই কলহের জের ধরেই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। নূরুল আমিন ভারতের কেরালায় তার শ্বশুরের ভাঙ্গারির ব্যবসা দেখাশুনা করতেন। ঘটনার আগের দিন বুধবার তিনি ভারত থেকে দেশে আসেন।
নতুনসময়/এনএইচ