ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১লা মে ২০২৫, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩২

জঙ্গিবাদ; কতটা শঙ্কামুক্ত বাংলাদেশ ?


৩ মে ২০১৯ ০১:০৬

শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ জঙ্গি হামলার পর এবার বাংলাদেশে জঙ্গিদের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বাংলাদেশে নতুন করে জঙ্গিদের সংগঠিত হওয়ার বিষয়ও রয়েছে আলোচনার তুঙ্গে। জঙ্গিদের একাধিক হুমকির পর এখন বাংলাদেশ কতটা ঝুঁকিতে কিংবা  বাংলাদেশ কতটা শঙ্কামুক্ত এ প্রশ্ন এখন জনমনে।

যদিও আইনশৃঙ্খলাবহীনির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, জঙ্গিবাদ নিয়ে বাংলাদেশে তেমন কোনো হুমকি নেই। তবে রাজধানীর মোহাম্মাদপুরে র‌্যাবের অভিযানে দুই জঙ্গি নিহত ও একই দিনে রাজধানীর গুলিস্তানে পুলিশকে লক্ষ করে বোমা হামলার ঘটনা সাধারণ মানুষের মনে আতংকের জন্ম দিয়েছে।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া আহত পুলিশ সদস্যদের দেখতে গিয়ে বলেছেন, ‘বৈশ্বিক যে উগ্রবাদের প্রভাব আছে সারাবিশ্বে, বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। দেশের মানুষকে রক্ষার জন্য, যে কোন নৈরাজ্য উগ্রবাদ দমানোর জন্য আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘এই মুহূর্তে জঙ্গিদের সংঘবদ্ধ বা বড় ধরনের নাশকতা করার ক্ষমতা নেই। ২০১৬ সালে হলি আর্টিজান হামলার পর তাদের বিধ্বস্ত করা হয়েছে। কখনও কখনও তারা বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটনা ঘটনোর অপচেষ্টা করছে, সেগুলো আমরা নজরদারিতে রাখছি।’

ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের কর্মকর্তারা বলছেন, মার্চে নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদের হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য জঙ্গিদের মধ্যে কিছুটা তৎপরতা দেখা গেছে। গত মাসে শ্রীলঙ্কার জঙ্গি হামলার পর বাংলাদেশের জঙ্গিদের মধ্যে অনেক বেশি তৎপরতা দেখা গেছে। তারা নতুন করে কিছু হুমকি সংবলিত বিভিন্নরকমের বার্তা পোস্ট করে জনমনে ভীতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে।

সম্প্রতি জঙ্গিদের প্রোপাগান্ডা চ্যানেল আল মুরসালাত মিডিয়া থেকে ‘শিগগিরই আসছে, ইনশাল্লাহ’ লেখা একটি পোস্টার নিয়ে হইচই শুরু হয়। তবে এটি জঙ্গিদের একটি ভিডিও ‘নাশীদ’ প্রকাশের পোস্টার ছিল বলে জানিয়েছেন নিয়মিত জঙ্গিবাদ পর্যবেক্ষণ করেন এমন ব্যক্তিরা। কিন্তু এই ঘটনার তিন দিনের মাথায়, ঢাকার গুলিস্তানে তিন পুলিশ সদস্যকে লক্ষ্য করে বোমা ছুড়ে পালিয়ে যায় মটরবাইকে থাকা অজ্ঞাত ব্যক্তিরা। পুলিশের বিশেষজ্ঞরা বোমাটিকে ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস বা আইইডি বলে মনে করছেন। সেদিন সকালেই ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় একটি ‘জঙ্গি আস্তানা’য় র‌্যাবের অভিযানের সময় দুই ‘জঙ্গি’ আত্মঘাতী হয় বলেও দাবি করা হয়েছে র‌্যাবের পক্ষ থেকে। পরবর্তী সময়ে সেখান থেকে চারটি আইইডি নিষ্ক্রিয় করা হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই ধারণা করা হচ্ছে, জঙ্গিরা নতুন করে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে, ছক কষছে হামলার।

বাংলাদেশ ছোট রাষ্ট্র হওয়ায় আইনশৃঙ্খলাবহীনির ও সাধারণ মানুষ একটু সতর্ক অবস্থানে থাকলে জঙ্গিদের দ্রুত খুঁজে বের করা সম্ভব। বাংলাদেশ ছোট রাষ্ট্র হলেও এর জনসংখ্যা তুলণামূলকভাবে অনেক বেশী। তাই আমরা বলতেই পারি যে, যদি বাংলাদেশের রাজধানীতে শ্রীলঙ্কার মতো কোনো ঘটনা ঘটে তাহলে ক্ষতির পরিমাণ হবে অনেক বেশী।

রাজধানীর ঢাকার পল্লবী,মিরপুর,মেহাম্মাদপুরসহ বেশ কিছু এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে জঙ্গীবিরোধী সভা শুরু করেছেন। সতর্ক করছেন তরুণদের। সচেতন থাকতে বলছেন সাধারণ মানুষদের।

নতুনসময়/আইকে