ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ১৭ই জুলাই ২০২৫, ২রা শ্রাবণ ১৪৩২


এনবিআরে আন্দোলন: ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে ৯ সদস্যের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি


১৬ জুলাই ২০২৫ ১৪:৫৪

সংগৃহীত

কাস্টমস, ভ্যাট ও কর বিভাগের অব্যাহত কর্মবিরতি ও শাটডাউন কর্মসূচির ফলে অর্থনৈতিক ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে সরকার। 

 

বুধবার (১৬ জুলাই) অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের শুল্ক-২ শাখা থেকে এ-সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।

 

এ কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের যুগ্মসচিব সৈয়দ রবিউল ইসলামকে। আর অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের প্রশাসন-১ শাখার উপসচিবকে কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

 

এছাড়া অর্থ বিভাগ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, শিল্প মন্ত্রণালয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআই’র প্রতিনিধিরা কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন। 

 

কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে- গত ২৮ ও ২৯ জুন চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস বন্ধ থাকায় কতটুকু রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করতে হবে। পাশাপাশি, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট বিভাগ এবং কর বিভাগের দুই মাসব্যাপী কর্মসূচির ফলে সব কমিশনারেট, কাস্টম হাউস, বন্ড কমিশনারেট, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কর অঞ্চলে যে রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে, তার পরিমাণও নির্ধারণ করতে হবে।

 

এছাড়া, চলমান কর্মসূচির প্রভাবে শুল্কায়ন কার্যক্রম, স্থলবন্দর ও নৌবন্দরে আমদানি-রপ্তানিসহ সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা নিরূপণ করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে হবে।

 

 

আরও পড়ুন

যে কারণে বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা

যে কারণে বরখাস্ত হলেন এনবিআরের ১৪ কর্মকর্তা

অফিস আদেশে আরও বলা হয়, জনস্বার্থে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, গত কয়েক মাস ধরে কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এতে রাজস্ব আহরণে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে।

 

এদিকে, বদলি আদেশকে ‘প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক’ দাবি করে তা ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ করার ঘটনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ১৪ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

 

মঙ্গলবার এ বিষয়ে পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

 

বরখাস্তকৃত কর্মকর্তারা হলেন- ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো প্রকল্প ঢাকার উপ-প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত কমিশনার) সিফাত-ই-মরিয়ম, মূল্য সংযোজন কর ঢাকার অতিরিক্ত কমিশনার (নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর) হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার, ঢাকা কর অঞ্চল-৮ এর অতিরিক্ত কর কমিশনার মির্জা আশিক রানা, কর অঞ্চল-২ এর বিভাগীয় প্রতিনিধি (যুগ্ম কর কমিশনার) মাসুমা খাতুন, কর অঞ্চল-১৫ এর যুগ্ম কর কমিশনার মুরাদ আহমেদ, কুষ্টিয়া কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোহাম্মদ মোরশেদ উদ্দিন খান, নোয়াখালী কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, কক্সবাজার কর অঞ্চলের যুগ্ম কর কমিশনার মো. আশরাফুল আলম প্রধান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব মো. শাহাদাত জামিল, খুলনা কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার মোহাম্মদ শিহাবুল ইসলাম, রংপুর কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার মোসা. নুশরাত জাহান শমী, কুমিল্লা কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার ইমাম তৌহিদ হাসান শাকিল, ঢাকা উত্তরের রাজস্ব কর্মকর্তা (কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট) সবুজ মিয়া, খুলনার রাজস্ব কর্মকর্তা (কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট) শফিউল বশর।

 

এনবিআর চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আবদুর রহমান খান সই করা ও জনস্বার্থে জারি করা এসব প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ২২ জুন জারিকৃত বদলির আদেশ অবজ্ঞাপূর্বক প্রকাশ্যে ছিঁড়ে ফেলার মাধ্যমে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায় তাদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক বিভাগীয় কার্যধারা গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। 

 

সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৩৯ (১) ধারা অনুযায়ী তাদেরকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগপূর্বক চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। তারা সাময়িক বরখাস্তকালীন বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন।

 

এর আগে ২৪ জুন আগারগাঁওয়ে এনবিআর ভবনে দুটি বদলি আদেশকে ‘প্রতিহিংসা ও নিপীড়নমূলক’ দাবি করে তা ছিঁড়ে ফেলে প্রতিবাদ জানান সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। 

 

এনবিআরের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র যুগান্তরকে জানায়, ইতোমধ্যে প্রশাসনিক ও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার বাইরে থাকা আন্দোলন সংশ্লিষ্ট অবশিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৈনন্দিন কার্যক্রম ও গতিবিধি তীক্ষ্ণ নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। এখনো কেউ কেউ পরিস্থিতি ঘোলাটে করার গোপন তৎপরতায় লিপ্ত রয়েছে।