ঢাকা বুধবার, ৩০শে এপ্রিল ২০২৫, ১৮ই বৈশাখ ১৪৩২

রেষ্ট হাউস নয় যেন মিনি পতিতালয়, অভিযাত এলাকায় হচ্ছেটা কি


১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১২:৩৮

সংগৃহিত

রাজধানীর অভিযাত এলাকা হিসেবে খ্যাত গুলশান, বনানী, উত্তরায় ক্লাব রেষ্ট হাউসের আড়ালে মদ, জুয়া ও অসামাজিক কার্যকালাপ হচ্ছে। অভিযাত এলাকা হিসেবে বাড়তি সুবিধায় এই এলাকাগুলোতে ক্লাব, রেষ্ট হাউসের আড়ালে মদ জুয়ার রমরমা আসর। রেষ্ট হাউসের আড়ালে গড়ে তোলা হয়েছে মিনি পতিতালয়। এ সব আস্তানায় নিরাপদ ভেবে স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে সব বয়সী মানুষের আনাগোনা। আবার প্রলোভনে ফেলে সাধারন মানুষকে ব্ল্যাক মেইলিংয়ের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে টাকা। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব অপকর্ম চললেও তারাও যেন এক প্রকার নির্বিকার। লোক দেখানো দু’একটি অভিযান চললেও পরে আবারও একই অবস্থা।

সম্প্রতি অনুমোদনের বাইরে ডিজে পার্টি চালানোর অভিযোগে গুলশানের কিংফিসার বারে অভিযানও চালায় পুলিশ। ওই সময় ডিজে পার্টি না চালানোর মুচলেকা দিলেও বর্তমানে আবারো তা শুরু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, দিনের বেলায় যেমন তেমন রাত নামলেই অভিযাত এলাকার পরিবেশ হয়ে যায় অন্যরকম। সব রোডের দ্রুত বেগের গাড়ির ছুটে চলা। দেখে যে কারই মনে হতে পারে দ্রুত কোন গুুরত্বপূর্ণ কাজের জন্য ছুটে চলা। কিন্তু আদৌ তা নয়। সব গাড়ি মিশছে কোন কোন ক্লাব বা রেষ্ট হাউসে। আর সেখানেই চলছে যত অপকর্ম।

আলোচিত ৭ ক্লাব : গুলশান -২ এর ক্যাপিটাল ক্লাব। অনুমোদনহীন ভাবে মদ বিক্রির অভিযোগ অনেক পূরনো। র‌্যাব-১ এর একটি দল অভিযান চালায় সেখানে। উদ্ধার হয় কোটি কোটি টাকার মদ বিয়ার। এরপর কিছুদিন থামে । কিন্তু আবারো সেই আগের অবস্থা। প্রকাশ্যই মদ বিক্রি চলছে এখানে। অল কমিউিনিটি ক্লাব (এসিসিএল)। এখানেও একই অবস্থা। সব-পেশার মানুষের রিক্রিয়েশনের জন্য এটি তৈরী হলেও কি রিক্রিয়েশন হচ্ছে এখানে। সন্ধ্যার পরেই জমজমাট মদের আসর। সেই সঙ্গে প্রকাশ্যই বাইরেও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও কোর্নিয়া ক্লাব, লেক ভিউ, লেক ডিপ্লোমা, ফু-ওয়াং, কোরিয়ান ক্লাব এবং কেএনবি। কি হয়না এই এখানে। ক্লাবের আড়ালে সবকিছুই মেলে এখানে। ক্লাবের সদস্য ছাড়াও স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছাত্রদের থেকে শুরু করে সববয়সী মানুষের আনাগোনা দেখা গেছে। মদ বিক্রির অনুমোদন না থাকলেও প্রকাশ্যই মদ বিক্রি হচ্চে।

অনুমোদন ছাড়াই প্রকাশ্যই বারগুলোর মদ বিক্রি : মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকায় আরও যেসব হোটেল-রেস্তোরাঁর বিরুদ্ধে অবৈধ বিদেশী মদ-বিয়ার বিক্রির অভিযোগ করা হয়েছে সেগুলো হল- গুলশান ২ নম্বর সার্কেলের তিন নম্বর প্লটের স্প্যাঘেটি জাজ, ৫৩ নম্বর রোডের ৮ নম্বর বাড়ির স্টিক হাউস, ৫৫ নম্বর রোডের ৯ নম্বর বাড়ির খাজানা, ৩৭ নম্বর রোডের অলিভ গার্ডেন, ১০৯ নম্বর রোডের ১০ নম্বর বাড়ির হেরিটেজ রেস্টুরেন্ট, ১১৮ নম্বর রোডের ১৫/বি নম্বর বাড়ির সাকুরা গোল্ডেন রাইস রেস্টুরেন্ট, ৭১ নম্বর রোডের কফি ম্যাঙ্গো, এক্সিট লাউঞ্জ, ৩৫ নম্বর রোডের ২৭ নম্বর বাড়ির সামদাদ লি., ৭১ নম্বর রোডের ক্যাফে অ্যারাবিয়ান, ৫০ নম্বর রোডের ৬ নম্বর বাড়ির ফ্লেমবি, ৫০ নম্বর রোডের ডি জ্যাং জিম রেস্টুরেন্ট, দি ক্যাসেল রেস্টুরেন্ট, অফ ট্র্যাক, গুলশান নর্থ এভিনিউর ৮ নম্বর বাড়ির স্প্রিট ফায়ার, ৭১ নম্বর রোডের থাই রেস্তোরাঁ সই-৭১, ৬৮ নম্বর রোডের কফি ওয়েগা, ৭১ নম্বর রোডের ১২ নম্বর বাড়ির ক্যাপিটাল ক্লাব, ৮৩ নম্বর রোডের ইন্টারন্যাশনাল ক্লাব, গুলশানের হোটেল ওয়াশিংটন, হোটেল রোজহুড, জায়ীকা রেস্টুরেন্ট, ১৩ গুলশান এভিনিউর ইফিজ, ৩৩ গুলশান এভিনিউর ফুড ভিলেজ, গুলশান ১৩৪-এর তোপ কাফি, গুলশান-১ এর ৬০/বি নম্বরের খুশবু রেস্টুরেন্ট, গুলশান-১ এর ৪৩ নম্বর বাড়ির এক্স লাউঞ্জ, বনানী ২৩ নম্বর রোডের মি লাউঞ্জ, বনানীর ফ্লোর সিক্স, সাংহাই, আলগিরা, হুক্কা লাউঞ্জ, বনানী ১১ নম্বর রোডের মিন্ট রেস্টুরেন্ট, রক রেস্টুরেন্ট, ডু মি ওকে রেস্টুরেন্ট, পেং ইয়াং রেস্টুরেন্ট, গুলশান-২ এর ৪৩ নম্বর রোডের সুরা রেস্টুরেন্ট, ৭১ নম্বর রোডের সুরা অন, নিউ কিংস কিচেন, জাকারিয়া, ডিম্পল, পিম্পল, ও কোরিয়ানা রেস্টুরেন্ট।

মদ বিয়ার বিক্রি বন্ধের নির্দেশনা : রাজধানীর গুলশান-বনানীতে লাইসেন্স বিহীন মদ, বিয়ার ও অ্যালকোহল ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। সম্প্রতি জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।