ইউএনও আয়শা সিদ্দিকার বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্ত শুরু
-2024-09-25-20-52-05.png)
রাজশাহী জেলার মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আয়শা সিদ্দিকার বিরুদ্ধে বিভাগীয় কমিশনার রাজশাহী করা অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্ত আয়শা সিদ্দিকা মোহনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত আছেন।
অভিযোগ তদন্ত করতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার। ২৫ সেপ্টেম্বর২০২৪ বুধবার বেলা ৩ টায় উপজেলা নির্বাহী অফিসারে কার্যালয়ে প্রথম দফায় অভিযোগের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযোগে সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল ওহাবসহ ৪ জন স্বাক্ষরিত রাজশাহী মোহনপুর উপজেলা ২০২৩-২০২৪ ইং অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে উপজেলা উন্নয়ন সহায়তা থোক বরাদ্দের আওতায় ৩৫ লক্ষ টাকা সামান্য কাজ করে সমুদয় অর্থ আতœসাত করেছেন। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা-২ শাখার স্বারক নম্বর-৪৬.০০.০০০০.০৪৫.২০.০০২.২৩-৬৪ তারিখ-২৩ জানুয়ারী ২০২৪ খ্রিঃ প্রাপ্ত পত্র মোতাবেক উপজেলা পরিষদ চত্তরে গেজেটেড বনানী কোয়ার্টার ভবন ,উপজেলা পরিষদ চত্তরে নন গেজেটেড কোয়ার্টার মিতালী, ডরমিটরি ভবন মেরামত ও রক্ষাবেক্ষণ কাজ না করে বিল উত্তোলন করেছেন । মের্সাস সামির উদ্দিনর জাহিন প্রোঃ মোঃ উজ্জ্বল হোসেন,সোনালী ভবন, মেসার্স রাসেল এন্টারপ্রাইজ আইডি নং-০৩/২০১৭-১৮ মিতালী ভবন নামে ঠিকাদার লাইন্সেস ব্যবহার করে কাজ না করেই ভবন নামে উপজেলা প্রকৌশলী সাদরুল ইসলাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকা, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ও উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আজিজুর রহমানের যোগসাজসে স্বাক্ষরিত বিল প্রস্তুত করে মোহনপুর যার এনআইডি নং-৫৭৪৮৮৯৮৮৭২২৫ পিন নম্বর-৪১৯৭৯৩৬০৪২, অর্থনেতিক কোড-৪১১১৩১৭, বিল নং-৩৩/২৩-২৪ ০৮/০৪/২৪ তারিখ ১০ লক্ষ টাকা মিতালী ভবন বিল নং৩২/২৩-২৪ ইং ০২/০৪/২৪ ইং ১০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করেছেন সোনালী ব্যাংক মোহনপুর শাখা হতে অফিস সহায়ক শরিফুল ইসলামের মাধ্যমে উত্তোলন করে কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেয়। মের্সাস সামির উদ্দিনর জাহিন প্রোঃ মোঃ উজ্জ্বল হোসেন নামে গেজেটেড কোয়াটার বনানী ভবন বিল নং-৪৭/২৩-২৪ তারিখ ১৫/০৫/২০২৪ ১০ লক্ষ টাকা একইভাবে উত্তোলন করেছেন। এদিকে নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকা, উপজেলা পরিষদ মেয়াদ উর্ত্তীন সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম ক্রয়, সরবরাহ ও সেবা বাবদ ব্যায়ের বিলে ১৫/০৫/২৪ তারিখে স্বাক্ষর করলেও বদলীকৃত উপজেলা প্রকৌশলী সাদরুল ইসলাম স্বাক্ষর ২০/০৩/২৪ খ্রিঃ রয়েছে। এদিকে ঠিকাদার জানান তারা এ কাজ সম্পর্কে জানেন না এবং বিল উত্তোলন বিষয়ে কিছুই জানেন না। উপ-সহকারী প্রকৌশলী রিপন আলী সরকার ও উপ- সহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম কাজ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে চুড়ান্ত বিল উত্তোলনের ছাড়পত্র দিয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপ-প্রশাসনিক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান নগদ অর্থ হাতে রেখে নিজেই ঠিকাদার দায়িত্ব নিয়ে নেপথ্যে ব্যবসায়ী মোরশেদ আলী ও উপজেলা পরিষদ এর অফিস সহায়ক বর্তমানে নির্বাহী অফিসারে সহায়ক তোফাজ্জল হোসেন তোফাকে দিয়ে মালামালা ক্রয় করে স্বল্প মূল্যে নি¤œ সামগ্রী দিয়ে দায়সারা নামে মাত্র কাজ করাচ্ছেন। এবং বিলের অর্থ উত্তোলন করে নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকার নির্দেশে উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আজিুজুর রহমান নিজের কাছে রাখছেন । উপজেলা পরিষদ তফশিল ঘোষনা হওয়ার পরও মেয়াদ উর্ত্তীন সাবেক চেয়ারম্যান সাথে নির্বাচন কমিশনের নিদের্শনা উপেক্ষা করে চেয়ারম্যান আব্দুস সালামের স্বাক্ষর নিয়ে থোক বরাদ্দের টাকা আতœসাত করেছেন। এ নিয়ে উপজেলা জানাজানি হলে উক্ত ভবন গুলো খাতের আলী নামের এক রং মিস্ত্রিকে আনুমানিক ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে সামান্য কাজ করার চুক্তি দেন। বিলের সরকারি টাকা নিজের কাছে গচ্ছিত রাখার কোন নিয়ম নেই। এদিকে উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের হিসাব রক্ষক না হয়ে তড়িৎ বিদ্যুৎ পদে কর্মরত শহিদুল ইসলামকে ম্যানেজ করে উপ-সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান যোগসাজসে হিসাব রক্ষকে নামে জায়গায় শহিদুলের স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এছাড়া প্রকৌশলী কার্যালয়ের স্বারক নম্বর-২৮৫ তারিখ ১২ নভেম্বর২০২৩ খ্রিঃ এর এস্টিমেটসহ প্রস্তাব প্রেরণর পর স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়,স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা-১ শাখার স্বারক নং-৪৬.০০.০০০০.০৪৬.১৮.০৯২.২০১২-০৩ তারিখ০১/০১/২০২৪ খ্রিঃ প্রাপ্ত পত্রে মোহনপুর উপজেলা পরিষদ রাজস্ব তহবিল হতে (নয় লক্ষ আটানব্বই হাজার নয়শত টাকা) উপজেলা চত্তরের অভ্যন্তরে মেইন রাস্তা সিসিকরণ অনুমতি পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকা, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম উপজেলা প্রকৌশলী সদরুল ইসলাম যোগসাজসে উক্ত রাস্তা প্রকৌশলী নিজেই ঠিকাদারে দায়িত্ব পালন করে মাত্র ৩ দিনে ৭২ ঘন্টার মধ্যে রাস্তার পরিত্যক্ত মালামালসহ নি¤œমানের সামগ্রী ব্যবহার করে রাস্তা নির্মানে কাজ শেষ করে অর্থ ভাগাভাগি করে নেই। উপজেলা পরিষদের ফেব্রয়ারী/২৪ মাসে (৫৯) সভার কার্যাবলী ৩৮ বিবিধ-৫ রুবাল এমপ্লয়মেন্ট এন্ড রোড মেইনটেনেন্স কর্মসূচীর প্রকল্প-৩ দুঃস্থ নারীদের দিয়ে উপজেলা চত্তরে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও কোন আগাছা পরিস্কার করে নিয়ে কৌশলে (সত্তর হাজার) টাকা উত্তোলন করে আতœসাত করেছেন। এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন তফশিল ঘোষনা হওয়ার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কুট কৌশলে প্রকৌশলী সাদরুল ইসলাম, উপ- সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা আজিজুর রহমান নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকা তড়িঘড়ি করে সরকারী বিল উত্তোলন করে আতœসাত করেছেন। উপজেলা পরিষদের জুন/২৪ মাসে (১ম) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়,স্থানীয় সরকার বিভাগ উপজেলা-২ শাখার স্বারক নং-৪৬.০০.০০০০.০৪৫.২০.০০৪.২৩-৬৩১ তারিখ-১২ জুন ২০২৪ খ্রিঃ প্্রাপ্ত চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাজেটে উপজেলা পরিষদ চত্তরে কৃষি গোড়াউন বাবদ=১০ লক্ষ টাকা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিমিত্ত পণ্য সামগ্রী সংরক্ষন এর জন্য গোডাউন নির্মাণ = ১৫ লক্ষ টাকা শুধু কাগজে কলমে রেট কোর্ট কোটেশন দেখিয়ে নিজের পছন্দের লোকদের কাজে দিয়ে সুবিধা গ্রহন করেন এলাকায় কোন কাজ কোন সাইন বোর্ড দেওয়া হয়না। এছাড়া উপজেলা প্রকৌশলী নুরনাহার যোগসাজসে নির্বাহী অফিসার আয়শা সিদ্দিকা যে কোন কাজ গোপনে নিজেরাই ঠিকাদার সেজে কাজ করেন।
এছাড়া টি আর কাবিখা প্রকল্পে ভূয়া প্রকল্প অনুমোদন নিয়ে নামে মাত্র ইউপি সদস্য প্রকল্প সভাপতি নাম রেখে উক্ত টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম যোগসাজসে নির্বাহী কর্মকর্তা যোগসাজসে বরাদ্দের টাকা আতœসাধ করেছেন। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে উপজেলা পর্যায়ে( টি আর) প্রকল্প নং-১০ উপজেলা পরিষদ নতুন বিল্ডিং এর দুই পাশে^ সিসি রাস্তা নির্মাণ বাস্তবায়নের জন্য ইউপি সদস্য খালেদা বেগমকে সভাপতি করে ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪ শত ৭৫ টাকা উত্তোলন করেন প্রকল্প নং-১৯ মোহনপুর উপজেলা ত্রাণ গুদাম উন্নয়ন নামে মোস্তফা কামালকে সভাপতি করে ২ লক্ষ টাকা। প্রকল্প নং ২৪ স্বারক নং-৫১.০১.৮১০০.০২৫.১৪.০২৩.২৪-২২৫ উপজেলা অফির্সাস ক্লাবের উন্নয়ন ইউপি সদস্য মোস্তফা কামালকে সভাপতি ২লক্ষ ৭০ হাজার টাকা প্রকল্প নং ২৫ উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে সাউন্ড সিস্টেম স্থাপন উন্নয়ন ইউপি সদস্য খালেদা বেগমকে সভাপতি করে ২ লক্ষ ১৩ হাজার ৩ শত ৩৩ টাকা,মোহনপুর শিল্পকলা একাডেমী এর উন্নয়ন সাইফুল ইসলামকে সভাপতি করে ১ লক্ষ । রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক লিমিটেড মোহনপুর শাখা প্রকল্পের সভাপতি / সম্পাদক যৌথ স্বাক্ষর হিসাব নং-৯৫২৬ নম্বরে সব প্রকল্পের টাকা উত্তোলন করেন কৌশলে টাকা হাতিয়ে নেয় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা প্রকৌশলী তারিকুল ইসলাম ও নির্বাহী কর্মকর্তা আয়শা সিদ্দিকা পরিচিতি নম্বর-১৮০৯১। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে (টি আর) মোহনপুর উপজেলা অফিসার ক্লাব এর সংস্কার ৭৫ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। অভিযোগকারী আঃ ওহাব ২০২৩-২০২৪ ইং অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর থোক বরাদ্দের ৩৫ লক্ষ টাকা সামান্য কাজ করে আতœসাত করেছেন। তথ্য অধিকার আইনে উপজেলা হাটবাজার কত টাকা ইজারা হলো চাইলে আবেদনকারীকে ডেকে মামলা-হামলার ভয় দেখাতেন তিনি। এভাবে তিনি অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতা করে সরকারের প্রায় কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন। অভিযোগকারী মোস্তফা কামাল বলেন, ইউএনও আয়শা সিদ্দিকার অনিয়ম, দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে আমরা যৌথভাবে দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়রাম্যানের ও সিনিয়র সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলাম। আজ ২৫ সেপ্টেম্বর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ে সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে শুনানি করা হয়েছে ।
ইউএনও আয়শা সিদ্দিকা বলেন, অভিযোগ তদন্তাধীন বিষয়। এ বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে জিজ্ঞেস করেন।
তদন্ত কর্মকর্তা ও রাজশাহী অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) টুকটুক তালুকদার প্রতিবেদককে বলেন, বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত চলমান আছে।