জ্বীনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণা" করে কোটিপতি নিরব

ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডে জ্বীনের বাদশা পরিচয়ে কোটিপতি বনে গেছেন ফজলে করিমের ছেলে নিরব। জ্বীন প্রতারণা ব্যবসার টাকায় করেছেন আলিশান বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এলাকায় ২০ হাজার, ৩০ হাজার এবং ৫০ হাজার টাকা করে দৈনিক কিস্তিতে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম চলমান রেখেছে জ্বীনের বাদশা নিরব। স্থানীয় ইব্রাহিমসহ আরো অনেকে জানান, গত ৫ বছর আগে চট্টগ্রামে রিক্সা চালক হিসেবে কাজ করতেন নিরব।
অভাবের সংসার ছিল তার। এলাকায় এসে জ্বীন প্রতারক চক্রের সাথে যোগাযোগ করে শুরুকরেন জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতারণার ব্যবসা। নিরবসহ জ্বীনের বাদশা সেজে প্রতারক চক্রটি প্রথমে কালি সাধন বাবা, জ্বীন সাধন বাবা, জ্বীন হুজুর বাবা, কুফরি বাবা, সাধু বাবার আশ্রম, পীর হুজুর বাবা, হুজুর বাবা, রুহানি বাবা, পাক দরবার বাবা নামসহ বিভিন্ন নামে ফেইসবুকসহ বিভিন্ন স্থানে বিজ্ঞাপন দেয় চক্রটি। ওই বিজ্ঞাপনে দেওয়া থাকে প্রতারক চক্রের মোবাইল নাম্বার। ওই বিজ্ঞাপনে স্বামী স্ত্রী মিল, জ্বীন চালানির মাধ্যমে লটারি পাইয়ে দেওয়া, প্রেমিক প্রেমিকার মিল করে দেওয়া, অবাধ্য সন্তানকে বাধ্য করা, পাওনা টাকা পাইয়ে দেওয়া, বিদেশে গ্রিন কার্ড পাইয়ে দেওয়া, প্রবাসী কফিলকে বাধ্য করাসহ গুপ্ত ধন পাইয়ে দেওয়া লেখা থাকে ওই প্রতারণা মুলক বিজ্ঞাপনে। আর বিজ্ঞাপন দেওয়া ইউটিউব ও ফেইসবুক আইডি বুস্ট করেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে। প্রতারক চক্রের বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নাম্বারে বিদেশ প্রবাসীসহ বাংলাদেশের বসবাসরত ব্যক্তিরা মোবাইল করলেই প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়েন।
বিজ্ঞাপনে দেওয়া উল্লেখিত কাজ জ্বীন চালানির মধ্যমে করিয়ে দেওয়ার লোভ দেখিয়ে বিকাশ ও নগদ একাউন্টের মাধ্যমে হাতিয়ে নেয় কোটি-কোটি টাকা। নিঃস্ব হয় মোবাইলের অপর প্রান্তে থাকা অসহায় লোক গুলো। ফলো কোটিপতি বনে গেছেন প্রতারক চক্রটি। কাচিয়া ইউনিয়নে প্রায় ৫ শতাধিক জ্বীনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারক চক্র রয়েছেন। এদের মধ্যে জ্বীন প্রতারক নিরবসহ একাধিক লোকের নামে প্রতারণার মামলা ছিলো। অন্যদিকে জ্বীনের বাদশা পরিচয়ে প্রতারণা করার বিষয়ে মোবাইল ফোনে নিরবের কাছে জানতে চাইলে পরে কথা বলব বলে মোবাইলের লাইনটি কেটে দেন। তবে তার মা বলেন, নিরব আগে জ্বীন প্রতারণার ব্যবসা করেছেন। বর্তমানে ভালো হয়ে গেছেন বলে জানান তিনি। স্থানীয়রা জানান, রাতে সজাগ থেকে মোবাইলে কথা বলেন জ্বীন প্রতারক চক্রটি। আর রাতজাগতে প্রতিরাতে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করেন জ্বীন প্রতারক চক্রটি।
এতে হুমকির মুখে রয়েছে কাচিয়া ইউনিয়নের যুবসমাজ। জ্বীন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে হুমকির মুখে পরবে যুবসমাজসহ স্কুল শিক্ষার্থীরা। এদিকে বোরহানউদ্দিন আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় কাচিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুর রব কাজী এসব জ্বীন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রশাসনের কাছে একাধিক অভিযোগ করেন। তবে জ্বীন প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন প্রশাসন। বোরহানউদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শাহিন ফকির (বিপিএম) জানান, সাংবাদিক ও জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ জ্বীন প্রতারকদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলতে হবে। তাহলেই জ্বীন প্রতারক নির্মূল করা সম্ভব হবে। জ্বীন প্রতারকদের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।