খুলনায় যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা

খুলনার আড়ংঘাটা এলাকার যুবলীগ নেতা ও সাবেক ইউপি সদস্য মো. আরিফ হোসেনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা করেছেন তার পরিবার।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) রাতে আরিফ হোসেনের বাবা সিআইডির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আমির হোসেন বাদী হয়ে নগরীর আড়ংঘাটা থানায় মামলাটি করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
তবে বুধবার (২৫ জুন) ভোর পর্যন্ত মামলা ও আটকের বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি পুলিশ।
এর আগে সোমবার (২৪ জুন) রাত ১২টার দিকে কুয়েট পকেটগেট এলাকার নিজ বাড়ির সামনে যুবলীগ নেতা আরিফ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। মঙ্গলবার বিকেলে নিহতের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
আরিফ হোসেন খানজাহান আলী থানার ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের আহ্বায়ক ও দিঘলিয়া উপজেলার যোগীপোল ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য ছিলেন। সবশেষ নির্বাচনে অংশ নিয়ে তিনি হেরে যান। এলাকায় আরিফের বেশ প্রভাব ছিল।
স্থানীয়রা জানান, আরিফের দাদার বাড়ি নড়াইল জেলার কালিয়া উপজেলার পিড়োলী গ্রামে। ২৫-৩০ বছর আগে তার বাবা ফুলবাড়ীগেট খানাবাড়ী এলাকায় জমি কিনে বাড়ি তৈরি করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। আরিফের জন্ম এবং বেড়ে ওঠে এই এলাকাতেই। আরিফের অন্য দুই ভাই আসিফ এবং হাসিব চাকরির সুবাদে একজন চট্টগ্রাম এবং অন্যজন টেকেরহাটে সপরিবারে থাকেন।
আরিফ বাবা-মা, স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে কুয়েট পকেটগেটের খানাবাড়িতে বসবাস করতেন। আরিফের দুই স্ত্রী।
স্থানীয়রা জানান, আরিফ কুয়েটে ঠিকাদারি করতেন। সর্বশেষে জমিজমা কেনাবেচার দালালি করতেন। এসব করে বিপুল অর্থের মালিক হন আরিফ। সম্প্রতি দুই কোটি টাকা মূল্যের একটি জমির কেনাবেচার দালালিকে কেন্দ্র করে তার সঙ্গে একটি পক্ষের বিরোধের সৃষ্টি হয়।
নিহত আরিফের মা বিলাপ জানান, জমিজমা ক্রয় বিক্রয়ের বিরোধের কারণে আমার ছেলে খুন হয়েছে।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আরিফ এলাকায় জমি ব্যবসার দালাল হিসেবে কাজ করতেন। এছাড়া একপক্ষের হয়ে অন্য পক্ষ থেকে জমির দলিল বুঝিয়ে দিতে পেশিশক্তি নিয়োগ করতেন। এসব নিয়ে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পেছনে এই দুটি কারণ কাজ করতে পারে। এছাড়া স্থানীয় রাজনৈতিক বিরোধের বিষয়টি নিয়েও তদন্ত চলছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরিফের এক স্বজন বলেন, এখানে এলাকার স্থানীয় রাজনীতির গ্রুপিংয়ের কোনো বিষয় নয়। এলাকার লোকজন তাকে খুব ভালোবাসতো। এখানে দুই কোটি টাকা মুখ্য বিষয়। হত্যার পেছনে দুই কোটি টাকার একটি ব্যাপার থাকতে পারে। এখানে টাকা-পয়সার একটা স্বার্থ আছে।
নগরীর আড়ংঘাটা থানার ওসি কাজী কামাল হোসেন বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। খুব শিগগিরই ভালো কিছু জানাতে পারব। তদন্তের জন্য আর কোনো তথ্য দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।