মাগুরা নদী পুনঃখননে মনিটরিং কমিটির অসন্তোষ প্রকাশ
 
                                প্রায় সাড়ে ৪৩ কোটি টাকা ব্যায়ে মাগুরা শহর সংলগ্ন নবগঙ্গা নদী পুনঃ খনন প্রকল্পের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে জেলা প্রশাসনের মনিটরিং কমিটি। প্রকল্পের নির্ধারিত সময়ের ১০ দিন বাকি। অথচ কাজের অগ্রগতি মাত্র ৫০ ভাগ বলে জানিয়েছেন তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে মাগুরা শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত নবগঙ্গা নদীর ১১ কিলোমিটার এলাকায় চলছে খনন কাজ। চারটি প্যাকেজে ৪৩ কোটি ৩৯ লক্ষ ৮২ হাজার টাকা ব্যায়ে খনন কাজ চালানো হচ্ছে তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। যাদের পক্ষে স্থানীয় দুই ঠিকাদার এহিজার রহমান লেনিন এবং সাখাওয়াত হোসেন কাজ করছেন।
মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ২ জুলাই থেকে নবগঙ্গা নদীর খনন কাজ শুরু হয়েছে যা চলতি বছরের ২০ জুনের মধ্যে সম্পন্ন হওয়ার কথা। ইতোমধ্যে খনন কাজ শেষের পথে বলে তারা দাবি করলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন।
মাগুরা জেলা প্রশাসনের মনিটরিং কমিটির প্রধান স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক (ডিডিএলজি) মাহবুবুর রহমান জানান, নবগঙ্গা নদীর ১১ কিলোমিটার এলাকায় পুন খনন কাজে ধীরগতির অভিযোগ আগে থেকেই ছিল। আগামী ২০ জুনের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে। বিভিন্ন সময় আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজটি দ্রæত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে আসছিলাম। কিন্তু ঠিকাদারের কাজের অগ্রগতি ভাল না। ইতিমধ্যে মাত্র ৫০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আর মাত্র ১০দিনের মধ্যে বাকি ৫০ ভাগ কাজ শেষ কিভাবে করবে সেটিই দেখার বিষয়। ইতিমধ্যে নদীতে পানি বেড়ে যাচ্ছে। দ্রæত কাজ শেষ করা না গেলে প্রকল্পের সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে না। দেশীয় ড্রেজার দিয়ে নদী খননের কাজ চলছে। ভাল মানের ড্রেজার ব্যবহার করা না গেলে কাংখিত মানের ফলাফল পাওয়া যাবে না।
গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের মনিটরিং দল শহর সংলগ্ন পারনান্দুয়ালী এলাকায় নদী খনন কাজ দেখেন। এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু সুফিয়ান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খান মোজাহেদি, সাব ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার শফিউল ইসলাম, উপ-সহকারি প্রকৌশলী মোঃ শাহ আলম, ঠিকাদারের প্রতিনিধি ও স্থানীয় সাংবাদিকবৃন্দ।
নদী পাড়ের বাসিন্দা আবু জাফর, মমিন শেখ, সেলিনা বেগম, মইনুল ইসলামসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, নবগঙ্গা নদী খননে ঠিকাদারের গাফিলতিতে দীর্ঘ সময় লেগে গেছে। নদীর ভেতরের অংশে স্কেবেটর দিয়ে মাটি কাটার কথা থাকলেও তারা অধিকাংশ সময়ই মাটি না কেটে সময় ক্ষেপন করা হয়েছে। এদিকে বৃষ্টির কারণে নদীতে পানি এসে যাওয়া ও ¯øুইস গেট বন্ধ করে দেয়ায় নদীর এ অংশে পানি বেড়ে গেছে। আর এই ওজুহাতে প্রকল্পের শেষ দিকে এসে তাড়াহুড়া করে ঠিকাদার দেশীয় অবৈধ ড্রেজার লাগিয়ে নাম কা ওয়াস্তে মাটি কাটছেন। যার ফলে নদীর কোথাও সঠিক মাপে মাটি কাটা হচ্ছে না। দেশীয় এই ড্রেজারে নদীর তলদেশে সমান মাপে মাটি কাটা সম্ভব না বলে অভিযোগ করেন তারা। তাদের মতে এর ফলে সরকারের বিপুল টাকা অপচয় হচ্ছে।
অন্যদিকে নবগঙ্গা নদীর উপরে শেখ কামাল সেতুর তলদেশ থেকে মাটি কাটার ফলে সেতুটি ঝুকিতে পড়ছে বলেও অভিযোগ করেন তারা। 
মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এবিএম খান মোজাহেদি জানান, নবগঙ্গা নদী পুনঃখনন প্রকল্পটি অনুমোদিত ডিপিপি অনুযায়ী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। সে অনুযায়ী নদীর চওড়ায় ৮০ মিটার ও গভীরতায় ৪ মিটার পর্যন্ত খনন করা হচ্ছে। নদী খননের ফলে শেখ কামাল ব্রীজ যেন কোন প্রকার ক্ষতিগ্রস্থ না হয় সেজন্য ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
তবে নদী খনন কাজের ঠিকাদার মীর সুমন কাজের ধীরগতির কথা অস্বীকার করে জানান, প্রকল্পের যে প্রাক্কলন আছে সে অনুযায়ীই কাজ চলছে। সঠিক সময়ে আমরা কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।’
নতুনসময়/আল-এম

 
                 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                         
                                                         
                                                         
                                                         
                                                         
                                                         
                                                        -2024-09-02-09-55-40.jpg) 
                                                         
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                             
                                                            