ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


মেঘনায় দুই লঞ্চের ষংঘর্ষ, তলা ফেটে ডুবে গেল একটি লঞ্চ


২৬ মে ২০১৯ ০৬:২৭

বরিশালের হিজলার মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ এমভি যুবরাজ-৭ ও বালুবাহী বাল্কহেড এমভি সিয়ামের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে বাল্কহেডটি ডুবে গেছে ও লঞ্চটির তলায় ফাটল দেখা দিয়েছে।

এ সময় লঞ্চটির তলা ফেটে পানি ঢুকতে শুরু করলে মাস্টার লঞ্চটি চরে উঠিয়ে দেয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায় চার শতাধিক যাত্রী।

লঞ্চের স্টাফ ও যাত্রীরা বলেন, এমভি যুবরাজ-৭ পটুয়াখালী থেকে ৩শ যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে শুক্রবার (২৪ মে) বিকেলে রওয়ানা দেয়। মাঝপথে বরিশালের হিজলা সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এসে ঝড়ের কবলে পড়ে। এসময় অন্য একটি লঞ্চের সঙ্গে এমভি যুবরাজ-৭ নামের লঞ্চটিকেও নদী তীরে বেঁধে রাখা হয়। পরে ঝড় থামলেও ভাটার কারণে লঞ্চটি চরে আটকে যায়। শনিবার সকালে লঞ্চটি অন্য লঞ্চের সহায়তায় চর থেকে নামিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে যাত্রা করানো হয়। কিছুদূর এগিয়ে হিজলার মিয়ারচর সংলগ্ন মৌলভীরহাট এলাকায় পৌঁছালে এমভি সিয়াম নামে বালুবাহী একটি বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় লঞ্চটির।

হিজলা ফাঁড়ির ওসি বেল্লাল হোসেন বলেন, পটুয়াখালী থেকে ঢাকাগামী এমভি যুবরাজ-৭ শুক্রবার রাতে মেঘনা নদীর বামনীর চর এলাকায় ঝড়ের কবলে পড়ে চরে আটকে যায়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে অপর একটি লঞ্চ এমভি প্রিন্স অব আওলাদ-৪ চর থেকে টেনে নামায় যুবরাজ লঞ্চটিকে।

শনিবার সকাল ৭টার দিকে যুবরাজ মেঘনা নদীর মিয়ার চর চ্যানেলে প্রবেশ করছিলো। ঠিক সেই মুহূর্তে এমভি সিয়াম নামের একটি ক্লিংকারবাহী বাল্কহেড চ্যানেলের মুখে এসে পড়লে সংঘর্ষ হয়। তখন বাল্কহেডটি ডুবে যায় এবং যুবরাজ-৭ এর সামনের দিক থেকে তলা ফেটে যায়।

ওসি আরও বলেন, তলা ফেটে লঞ্চটির ভেতরে পানি ঢুকতে শুরু করে। এ সময় লঞ্চে থাকা চার শতাধিক যাত্রীর মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে চালক লঞ্চটিকে পাশের চরে উঠিয়ে দিলে যাত্রীরা বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।

ওসি আরও বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছে যাত্রীদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসি। পরে এমভি প্রিন্স অব আওলাদ-৪ লঞ্চে যাত্রীদের গন্তব্যের উদ্দেশ্যে তুলে দেয়া হয়। তবে যে বাল্কহেডটি ডুবে গেছে তার কোনো লোকজন পাওয়া যায়নি। অবশ্য বাল্কহেডটিতে ছয়জন শ্রমিক ছিলো বলে শুনেছি। তারা সবাই তীরে উঠতে পেরেছে কিনা সে বিষয়টি আমরা এখনো নিশ্চিত নই।

বরিশালের বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার জানান, শুক্রবার রাত ১২টার দিকে ঝড়ের সময় যুবরাজ-৭ লঞ্চটি পটুয়াখালী থেকে ঢাকা যাবার পথে চরে আটকে যায়। শনিবার সকাল ১০টার দিকে একই কোম্পানির এমভি প্রিন্স অব আওলাদ আটকে যাওয়া লঞ্চটিকে টেনে নামায়।

এরপর লঞ্চটি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বিপরীত দিক থেকে আস ক্লিংকার বোঝাই একটি বাল্কহেডের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে এমভি যুবরাজের তলায় ফাটল ধরে। এ সময় লঞ্চটিকে দ্রুত চালিয়ে ওই চরে উঠিয়ে দেওয়া হয়। লঞ্চে থাকা প্রায় তিনশ যাত্রীকে এমভি প্রিন্স অব আওলাদ-৪ লঞ্চে করে ঢাকায় পাঠানো হয়।

ডুবে যাওয়া বাল্কহেডের আটজন সদস্য সাঁতরে তীরে উঠেছেন। কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।

নতুনসময়/আইকে