ঢাকা শনিবার, ১০ই মে ২০২৫, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩২


কুড়িগ্রামে ভিজিডি কার্ডধারীদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ


৬ মে ২০১৯ ০৩:৪৯

নতুন সময়

কুড়িগ্রামের রৌমারীতে ভিজিডি কার্ডধারী দুস্থ মহিলাদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে সঞ্চয় উত্তোলনকারী সংশ্লিষ্ঠ এনজিও’র বিরুদ্ধে। ‘সেন্টার ফর সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট কুড়িগ্রাম’ (সিএসডিকে) নামের এনজিওর মাঠ কর্মীরা সঞ্চয়ের টাকা জমা খাতায় না তুলে আত্মসাৎ করেছেন এমন অভিযোগ শৌলমারী ইউনিয়নের সুবিধাভোগী দুস্থ মহিলাদের। জমার আসল টাকা না পেয়ে বিক্ষোভ করেন দুস্থ মহিলারা।

রোববার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে টাকা বিতরণে এ অনিয়মের ঘটনা ঘটে। জানা যায়, ২০১৭-১৮ সালে উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নে দুস্থ মহিলা ভিজিডি কার্ডধারী ৪৪৮ জন। দুই বছরের জন্য ইউনিয়ন পরিষদ তাদের সুবিধাভোগী নির্বাচিত করেন। তাদের সঞ্চয়ের টাকা উত্তোলনের জন্য 'সেন্টার ফর সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট কুড়িগ্রাম' এনজিওকে নিযুক্ত করেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর।

প্রতি মাসে ভিজিডির চাল উত্তোলনের সময় তারা ২০০ টাকা করে এনজিও মাঠ কর্মীদের মাধ্যমে সঞ্চয় জমা করেন। গত ডিসেম্বর মাসে তাদের ভিজিডি কার্ডের মেয়াদ দুই বছর পূর্ণ হয়। জানুয়ারি মাসে সুবিধাভোগীদের সঞ্চয়ের টাকা সুদাসহ আসল ফেরত দেয়ার নিয়ম। কিন্তু এখন সুদ ছাড়া আসল টাকাই কম পাওয়ার অভিযোগ করেন সুবিধাভোগী দুস্থ মহিলারা।

রোববার শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের অফিস কক্ষে সংশ্লিষ্ট এনজিও পরিচালক আবু হানিফ, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পবন কুমার সরকার, সঞ্চয় গ্রহীতা মাঠকর্মী, ইউপি সদস্যদেরকে ঘিরে রেখে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন সুবিধাভোগীরা। জমা বইয়ে দেখা যায়, সব বইয়ে জমা টাকার হিসাবে গড়মিল। লেখার কোথাও কাঁটাছেড়া, কোথাও আবার ঘঁষা মাঝা করা হয়েছে। যা একটার সাথে অন্যটার কোনো মিলনেই।



চরের গ্রামের বাসিন্দা চান মিয়ার স্ত্রী সোনাভান জানান, ২৪ মাসে ৪ হাজার ৮শত টাকা জমা নিলেও এখন তারা আমাকে ৭৮০টাকা কম দিচ্ছে। টাকা কম দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা আমার সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। একই অবস্থা চরের গ্রামের জুখেলা বেগমের।

সুবিধাভোগিরা জানান, গত দুই বছরে কার্ডের চাল নেওয়ার সময় প্রতি মাসে ২০০ টাকা করে সঞ্চয়ের জন্য জমা দিয়েছি। এক টাকা কম হলে তারা চাল আটকে দিতো। মেয়াদ শেষে লাভসহ ৯হাজার টাকা দেওয়ার কথা থাকলেও লাভ তো দূরের কথা আসল টাকা থেকেই কম দেওয়ায় আমরা টাকা নিচ্ছি না।

টাকা কম বা গড় মিলের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করেন ওই ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা এনজিও সেন্টার ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট কুড়িগ্রাম (সিএসডিকে)এর পরিচালক আবু হানিফ। তিনি বলেন, কর্মীরা ভুল করেছেন। সংশোধন করে টাকা বিতরণ করা হচ্ছে।

উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পবন কুমার সরকার জানান, শৌলমারী ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডের জমা টাকা বিতরণে অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পাস বই হিসাব করে টাকা বিতরণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

নতুনসময়/এমআই/এসআই