দুর্নীতির অভিযোগে উপ-পরিচালকের বদলি চান বগুড়ার পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তা কর্মচারীরা
-2023-01-11-21-46-19.jpeg)
বদলি হয়ে যোগদানের পর অধিনস্ত কর্মকর্তাদের তোপের মুখে পড়েছেন বগুড়ার পরিবার পরিকল্পনার উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম। তাকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে দিয়ে বগুড়া থেকে অন্যত্র বদলি ও বিভাগীয় ব্যবস্থার নেয়ার আবেদন করেছেন বিভাগের কর্মকর্তা - কর্মচারীরা। গত ৫ জানুয়ারি স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিবের নিকট এ বিষয়ে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
তবে এ দাবি বাস্তবসম্মত নয় বলে দাবি করেছেন উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম।
এ ব্যাপারে মহাপরিচালক শাহান আরা বানু বলেন, বিষয়টি তারা তদন্ত করবেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ নওগাঁ থেকে গত ২৯ ডিসেম্বর তাকে বগুড়ায় বদলি করা হয়। গত ১ জানুয়ারি তিনি বগুড়ায় ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কর্মরত প্রসনজিৎ কুমারের নিকট থেকে দ্বায়িত্বভার গ্রহন করেন। এরপর তিনি গত এক সপ্তাহ আর অফিসে আসেননি। গত ৮ জানুয়ারি অফিস শুরু করেন।
কর্মচারীরা অভিযোগ করেন, তিনি অত্যন্ত দুর্নীতি পরায়ন। তিনি আগেও বগুড়ার গাবতলী উপজেলায় টি এফ পি ও পদে ছিলেন । সেসময় মাঠকর্মীদের নিকট হতে নানা আর্থিক দুর্নীতি করেছেন । শেষ বেলায় ট্রাংক, এপ্রন, ব্যাগ - টি এ বিল এর সব টাকা তুলে নিয়ে যান। তার অধীনে থাকা সহকারী অত্যন্ত বিপদ আর আর্থিক ক্ষতিতে পড়ে। আবারও তিনি এখানে বদলি হয়ে এসেছেন।
তিনি যোগদানের পর যে কয়েকদিন অফিসে আসেন সেই কয়েকদিন গোপনে সব ফাইল বন্ধ রেখে আগে টাকা নির্ধারিত করে দিয়েছেন। এম এল এস এস,আয়া,এফ ডব্লিউ এ,এফ পি আই, ভিজিটর , ফার্মাসিস্ট,সাকমো, ডাক্তার ,অফিসার সবার আলাদা আলাদা হিসাব। প্রত্যেক ফাইলে নিয়মিত এইসব তার কাছে জমা দিতে হবে, তারপর কাজ হবে। সকল ফরওয়ার্ডিং, লোন, পেনশন ,বদলী ফাইলে অনেক পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েছেন।
কর্মচারীদের অভিযোগ, এর আগে নওগাঁতেও এভাবেই কাজ করেছেন । সব গ্রুপের নিকট হতে যেমন ফার্মাসিস্ট, স্যাকমো, এফপি আই ,ভিজিটর সব গ্রুপ মোটা খাম দেখা করিয়েছেন। না দেখা করলে অনেক বিপদ হইবে / বদলী হইবে- সেটা জানিয়ে দিয়েছেন। সব রকম ফাইল এ পদ হিসেবে আলাদা দরদাম ঠিক করে দিয়েছেন । উদাহরণ হিসাবে ফরওয়ার্ডিং এই ২০ হাজার টাকা লাগে বলে ঠিক করে দিয়েছেন। বদলী, লোন পাশ, পুলিশ ভেরিফিকেশন, এন ও সি, স্থায়ীকরন, পেনশন,ডাইরেক্টর বরাবর ফরওয়ার্ডিং সব কাজে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়েছেন। প্রত্যেক ডিডি ও এর নিকট হইতে ১০ হাজার করিয়া টাকা নেন । আর নিয়োগে কয়েক কোটি টাকা আদায় করেছেন । রেজাল্ট শিটের ছবি মোবাইলে তুলে যাদের রেজাল্ট ভালো, তাদের কাছে এফ পি আই পাঠিয়ে ২ জন স্টাফকে দিয়া ফোন করাইয়া প্রতি ক্যান্ডিডেট ১০/১২ লক্ষ করিয়া টাকা আদায় করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়, বগুড়ায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি নওগাঁ পোস্টিং এর এক বছরে গুরুদাসপুরে নিজের বিশাল বাড়ি বানিয়েছেন। তার এক ছোট ভাই প্রশাসন ক্যাডারে আছে - এই হুমকি দিয়া সব কাজ আদায় করেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এমনবস্থায় দুর্নীতিবাজ এ কর্মকর্তাকে বগুড়া থেকে বদলিসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ভ্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়।
এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলাম বলেন, তাদের এ দাবি বাস্তবসম্মত নয়। তারা মনগড়া অভিযোগ করেছে।
বিগত সময়ে দ্বায়িত্বপালন করা উপ-পরিচালক শাহনাজ বেগম বলেন, বিগত সময়ে অফিসে কেউ কোন অভিযোগ দায়ের করতে পারেনি। আমি সুশৃঙ্খলভাবে সবকিছ নিয়ন্ত্রন করেছি। বর্তমান উপ-পরিচালক আসার কর্মচারীরা যে অভিযোগ করেছে সেই বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
সার্বিক বিষয়ে মহাপরিচালক শাহান আরা বানু বলেন, অভিযোগের ব্যাপারে আমরা তদন্ত করবো। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।