ঢাকা শনিবার, ৩রা মে ২০২৫, ২১শে বৈশাখ ১৪৩২


আমাদের মজার স্কুল


৮ অক্টোবর ২০১৮ ২২:৩৬

আমাদের মজার স্কুল একটি স্বেচ্ছাসেবী স্কুল। সিংড়া উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে পৌর এলাকার স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে খোলা আকাশের নিচে চলে আমাদের মজার স্কুল এর পাঠদান।

২০১৭ এর ৬ জানুয়ারি মাত্র ৩০ জন শিশু নিয়ে যাত্রা শুরু করে এ স্কুলটি। শিশুদের নীতি নৈতিকতা, আচার আচারণ, মুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেম সম্পর্কে শিক্ষা দেয়ার জন্য তরুণদের স্বেচ্ছাশ্রমের প্রতিষ্ঠিত হয় মজার স্কুল।

বাংলাদেশের প্রত্যকটি উপজেলায় তরুণরা একটি করে মজার স্কুল গড়ে তুলুক, যাতে করে শিশুদের প্রতিভার বিকাশে সহায়ক হয়।

বর্তমানে শিশুর সংখ্যা প্রায় ৩০০। ধনী গরিব সকল শিশু এক সারিতে বসে এখানে সব কিছু শেখে আর মজা করে। এ স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সিংড়ার সাংস্কৃতিক অঙ্গনের আলোকিত মুখ চঞ্চল মাহমুদ সংগ্রাম।

তিনি বলেন, “শিশুদের বাধাধরা সিলেবাসে বা চাপ দিয়ে নয়, শিশুদের শেখাতে হবে মজা করে আনন্দ বিনোদনের মধ্য দিয়ে। এখানে বর্ণমালা, অভিনয়ের মাধ্যমে ছড়া বলা, নৈতিক গল্পের মাধ্যমে নৈতিকতা, বাবা, মা গুরুজনের প্রতি শ্রদ্ধা, দেশপ্রেমসহ ভালো অভ্যাস গড়ে তোলা। ক্লাস চলে সপ্তাহে দুদিন, মঙ্গলবার ও শুক্রবার। ক্লাসের শেষে শিশুদের জন্য রাখা হয় নাস্তার ব্যবস্থা।

প্রতিষ্ঠাতা চঞ্চল মাহমুদ সংগ্রাম আরো বলেন, নিজের উপার্জিত অর্থের দিয়ে চলে স্কুলের খরচ। এজন্য অনেক গুলো টিউশনি করাতে হয়।দিনদিন স্কুলের খরচ বেড়েই চলেছে। তবে অনেকেই বাচ্চাদের জন্য খারার নিয়ে স্কুল দেখতে আসে।

পাঠদান শেষে শিশুদের নাস্তা বা উপহার না দিলে আনন্দে ভাটা পড়ে। এজন্য পাঠদান শেষে তাদের আনন্দের অংশীদার হতে পারে যে কোন অভিভাবক।কেউ অর্থনৈতিক সহযোগীতা করলে আমাদের সুবিধা হবে।

শিশুদের মাল্টিমিডিয়া ক্লাসে বিভিন্ন শিক্ষামূলক কনটেন্ট দেখানো হয়। তাদের জন্য রয়েছে বেশ কিছু খেলনা, যা নিয়ে শিশুরা আনন্দে মেতে থাকে। যার সবটুকু অবদান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপির।

সম্প্রতী, মজার স্কুলে প্রতিমন্ত্রী পলকের সহধর্মিণী আরিফা জেসমিন কনিকা, সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো: জান্নাতুল ফেরদৌস পরিদর্শণ ও সহযোগিতা করেছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সিংড়া পৌরসভার স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে ক্লাস চলছে মজার স্কুলের শিশুদের। সবার মাঝে আনন্দ, একসাথে এতগুলো সাথিকে পেয়ে খুশি তারা।

আকতার বানু নদী, লিরা জামানসহ কয়েকজন অভিভাবক জানালেন, মুলত প্রি প্রাইমারি হিসেবে মজার স্কুল থেকে তাদের শিশুরা মানসিকভাবে তৈরি হচ্ছে। স্বুলে আসার জন্য শিশুদের আগ্রহ রয়েছে, তাদের না আনলে মন খারাপ করে, কান্না করে, এখান থেকে শিখে বাড়িতে গিয়ে তারা চর্চা করে, যেটা অনুপ্রেরণা দেয়। শিশুদের আগ্রহে তাদের মজার স্কুলে নিয়ে আসতে হয়।

১৬ জন স্বেচ্ছাসেবী নিয়ে চলছে “আমাদের মজার স্কুল”।বাংলাদেশে প্রথম ব্যতিক্রমধর্মী একটি স্কুল এটি। এই স্কুলটিকে আরও এগিয়ে নিতে ধনী, সামর্থ্যবানদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন। কারণ “আমাদের মজার স্কুল” স্বপ্ন দেখে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে শিশুদের পৌঁছে দিবে আগামীর পথে।

এসএমএন