ইসলামপুরবাসীর স্বপ্নের ২ সেতু উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জামালপুরের ইসলামপুরে ২০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর নির্মিত ২ সেতু উদ্বোধন করবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী আগামী ১১ অক্টোবর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রায় আড়াইশ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৩টি প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন উপযোগী প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা দিনরাত কাজ করছেন।
সূত্র জানায়, ইসলামপুরের পাইলিং ঘাটে ১‘শ ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুর শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশারফ (বীরোত্তম) ও প্রায় ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ডেফলা ঘাট সেতুর নামকরণ করা হয়েছে ল্যাপ্টেন্যান্ট শহীদ শেখ জামাল সেতুর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শেখ হাসিনা হেল্থ টেকনোলজি ইনস্টিটিউটও উদ্বোধনের আলোচনায় রয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের উপর ২ সেতু নির্মাণের ফলে ইসলামপুরের গোয়ালেরচর, গাইবান্ধা, চরপুটিমারী, চরগোয়ালিনী ইউনিয়ন ও মেলান্দহের শ্যামপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের মানুষের জীবন যাত্রার মান বদলে গেছে। স্বাধীনতার পর থেকে ওই অঞ্চলের ৩ লক্ষাধিক মানুষ ব্রহ্মপুত্র নদের উপর সেতু নির্মাণের স্বপ্ন দেখছিলো। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এরই মধ্যে পাইলিং ঘাট ও ডেফলা ঘাটে সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। সেতু দু’টির কারণে মেলান্দহ-ইসলামপুর-শেরপুর জেলা সদর-শ্রীবর্দী-বকশীগঞ্জ উপজেলার মধ্যে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। এতে চরাঞ্চলের ৫ ইউনিয়নের মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হয়ে গ্রামগুলো শহরতলীতে পরিণত হয়েছে।
যমুনা-ব্রহ্মপুত্র নদনদী এ জনপদের বুক চিড়ে প্রবাহিত হওয়ায় দেশের অবহেলিত উপজেলার মধ্যে এটি ছিল অন্যতম। ২০০০ সাল পর্যন্ত এখানে উন্নয়নের কোন ছোঁয়াও লাগেনি। ২০০১ সালে সুলতান মাহমুদ বাবু বিচ্ছিন্ন ইসলামপুরের সেতুবন্ধন সৃষ্টির ঘোষণায় এমপি নির্বাচিত হন। তিনি ব্রহ্মপুত্র নদের পুর্বাঞ্চলের ৫ ইউনিয়নে রাস্তাঘাট ও শতাধিক ব্রিজ-কালর্ভাট নির্মাণ করে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপন করেন। এরপর এলাকাবাসীর মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর সেতু নির্মাণের দাবি জোড়ালো হয়ে উঠে।
২০০৮ সালে নির্বাচনের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সে ব্রহ্মপুত্র নদের উপর দু’টি সেতু নির্মাণের আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে স্থানীয় এমপি ফরিদুল হক খান দুলালের প্রচেষ্টায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ পাইলিং ঘাট ও ডেফলা ঘাটে দু’টি সেতু এবং প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাকা রাস্তা নির্মাণ সম্পন্ন করেছে। ইতোমধ্যে সেতু দু’টি উপর দিয়ে ট্রাক-বাসসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল শুরু করায় চরবাসী এর সুফল পাচ্ছে। এতে তাদের জীবনমানের পরির্বতন হয়ে গ্রামগুলো শহরে রূপান্তর হয়েছে। গোয়ালেরচর ইউনিয়নের সভুকুড়া গ্রামের মুক্তার আলী বলেন, পুবের চর এহন আর চর নাই। চর এহন টাউন অয়ছে।
এলজিইডি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু সালেহ মুহাম্মদ ইউসুফ শাহী জানান, সেতু দু’টি নির্মাণ হওয়ায় ইসলামপুর-শেরপুর জেলা সদর-শ্রীবর্দী-বকশীগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলার মধ্যে সড়ক নেটওর্য়াক স্থাপিত হয়েছে।
গাইবান্ধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাকছুদুর রহমান আনছারী বলেন, চরাঞ্চল এখন আর চর নেই। পূর্বাঞ্চল এখন সমৃদ্ধ কৃষিনগরে পরিণত হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহম্মদ আমিনুল হক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১১ অক্টোবর সেতু দু’টি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার কথা রয়েছে।