ঢাকা বুধবার, ১৪ই মে ২০২৫, ৩১শে বৈশাখ ১৪৩২


গুড়া দুধে ৫০ শতাংশ শুল্ক বাড়ানোর দাবি, রাস্তায় দুধ ঢেলে প্রতিবাদ


২৩ জুন ২০১৯ ০৩:৫৫

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি করা গুড়া দুধের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশন।

শনিবার (২২ জুন) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনের পর দুপুর সাড়ে ১২টার প্রেস ক্লাবের সামনের রাস্তায় দুধ ঢেলে প্রতিবাদ জানায় তারা।

সংগঠনটির সভাপতি ইমরান হোসেন বলেন, দুধের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে দেশের দুগ্ধ খামারীরা রাগে-ক্ষোভে রাস্তায় দুধ ফেলে দিয়েছিল। তাদের সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমরা প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে রাস্তায় দুধ ঢাললাম।

২০১৯-২০ প্রস্তাবিত বাজেটে কনসেশনারি কাস্টমস ডিউটি ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এটা দুগ্ধ খামারিদের তেমন কাজে আসবে না বলে দাবি করেন তারা।

ইমরান বলেন, পর্যায়ক্রমে গুড়া দুধের আমদানী শুল্ক বাড়ানো হোক। কারণ মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ দুধ এখন আমরা দেশেই উৎপাদন করি। গত ৭ বছরে দুধের উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণ। এ অবস্থায় আমদানী শুল্ক পর্যায়ক্রমে কিছুটা বাড়িয়ে দেশীয় দুগ্ধ শিল্পকে প্রণোদনা ও সরকারি সহযোগিতা বাড়ানো হোক। তাহলে দেশের দুগ্ধ শিল্প বেঁচে যাবে এবং বিকাশ লাভ করবে।

দেশের উদীয়মান এ দুগ্ধ শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য একটি মহল গুড়া দুধ আমদানির পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে বলেও করেন ইমরান।

তিনি বলেন, ইউরোপিয় ইউনিয়নভুক্ত দেশ ডেনমার্ক তাদের দেশের দুগ্ধ খামারিদের হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে থাকে। বাংলাদেশের দুগ্ধ চাষীরা ভর্তুকি পায় না। এসব দেশ থেকে গুড়া দুধ আমদানির মাধ্যমে দেশের দুগ্ধচাষীদের অসম প্রতিযোগিতায় ফেলে ক্ষতির মুখে ফেলে দেয়া হচ্ছে।

এ ছাড়াও নতুন বড় বিনিয়োগে বাধার ফলে দেশীয় বাজার ধ্বংস হয়ে গেলে উচ্চমূল্যে দুধ কিনতে হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করে সংগঠনটি।

এ সময় তারা আরও বেশকিছু দাবি জানায়। সেগুলো হলো নিম্নমানের ভর্তুকীপ্রাপ্ত গুড়া দুধের ওপর এন্টি ডাম্পিং ট্যাক্স আরোপ ও আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে ৫০ শতাংশে উন্নিত করতে হবে। বিগত ১৫ বছরে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে খামারিদের তরল দুধের ন্যায্য দাম সরকার থেকে নিশ্চিত করতে হবে। তরল দুধের সঠিক বাজারজাতকরণ ব্যবস্থপনা নিশ্চিত করা হোক। দুদ্ধ প্রসেসিং কোম্পানিদের সঙ্গে সরকার নির্ধারিত দামে তরল দুধের দাম সমন্বয় সাধন করা হোক। এলাকাভিত্তিক খামারিদের দুধ সংরক্ষণ ব্যবস্থাপনা তৈরি করে দেয়া হোক। ভোক্তাদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সরকার থেকে দায়িত্ব নিয়ে সচেতনতামূলক টিভিসি প্রোগ্রাম করা হোক। গো-খাদ্য আমদানিতে সব শুল্ক প্রত্যাহার করা হোক। আধুনিক খামার ভিত্তিক সব বৈদেশিক যন্ত্রপাতি আমদানিতে সব শুল্ক প্রত্যাহার করা হোক। বাণিজ্যিক নয়, বরং কৃষির আওতায় দুগ্ধ খামারের বিদ্যুৎ ও পানির বিল আনা হোক। পোলট্রি ও মৎস শিল্পের মত দুগ্ধ খামারিদের আগামী ২০ বছরের জন্য আয়কর মুক্ত বা ট্যাক্স তলিডে দেয়া হোক।

দুগ্ধ শিল্পের ক্ষেত্রে সরকারি এন্টি ডাম্পিং ট্যাক্স নীতিমালা মেনে চলা হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করে সংগঠনটি।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ গুদ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়নের (মিল্ক ভিটা) চেয়ারম্যান শেখ নাদির হোসেন লিপু, বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক শাহ এমরান, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি রাকিবুল রহমান টুটুলসহ অন্য নেতাকর্মী এবং প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন অধিদফতরের কর্মকর্তারা।