শুদ্ধ উচ্চারণে বিপিও’তে কাজ: মোস্তাফা জব্বার

শুদ্ধভাবে বাংলা বা ইংরেজি উচ্চারণ করতে পারলেই বিজনেস প্রসেস আউটসোর্স বা বিপিও খাতে কাজ করা যায় বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। একইসঙ্গে মন্ত্রী জানিয়েছেন, বিপিও খাতে মিলিয়ন সংখ্যক তরুণের কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে।
সোমবার (২২ এপ্রিল) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে চলমান দুই দিনব্যাপী বিপিও সামিট-২০১৯ এর শেষদিনের সেমিনারে এ কথা জানান মোস্তাফা জব্বার।
‘আউটসোর্সিং টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিসেস’ শীর্ষক ওই সেমিনারে মন্ত্রী বলেন, বিপিও খাতে কাজ করতে হলে পিএইচডি বা মাস্টার্স ডিগ্রিধারী হওয়া লাগে না। শুদ্ধভাবে বাংলা বা ইংরেজি বলতে পারলেই বিপিওতে কাজ করা যায়। আঞ্চলিক ভাষা ছাড়া শুদ্ধভাবে কথা বলতে পারে এমন লোকদের এই খাতে অনেক চাহিদা রয়েছে। অন্তত এক থেকে দুই মিলিয়ন তরুণের কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব এই খাতে।
দেশের সব প্রান্তে রাজধানীর মতো দামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে দেওয়া হবে দাবি করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, দেশের সব প্রান্তে একই রেটে ইন্টারনেটসেবা পৌঁছে দিতে চাই আমরা। আমি তেতুলিয়াতে জন্মগ্রহণ করেছি, এটা আমার অপরাধ না। আমি বাংলাদেশের নাগরিক। তাই ঢাকায় একজন যে দামে ইন্টারনেট পায়, সেই দামে সেখানেও ইন্টারনেট দিতে চাই আমরা। তবে এটা সত্য যে, ফাইবার অপটিক দূরবর্তী এলাকায় নিয়ে যেতে ব্যয় বাড়ে। তবে দ্রুত আমরা সেগুলো সমন্বয় করছি। সামনে এমন দিন আসছে, যখন দুর্গম এলাকায় কেউ ঘরে বসেই বিপিও’র কাজ করতে পারবে। এর জন্য আমরা দেশব্যাপী ফাইবার অপটিক্স নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের পাশাপাশি ফাইভ-জি নিয়ে কাজ করছি।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান জহুরুল হক বলেন, সরকার যেসব খাত থেকে রাজস্ব পায়, তার মধ্যে একটি বড় খাত হচ্ছে টেলিকম। এই খাত প্রতিবছর প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দেয় আমাদের, যা জিডিপির প্রায় ১.১ শতাংশ। এই খাতসহ বিপিও খাতের আরও উন্নতি করতে হলে তরুণদের কাজে লাগাতে হবে; তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বিটিআরসির এসওএফ তহবিলে প্রায় এক হাজার ২০০ কোটি টাকা আছে। এই তহবিল থেকে দুর্গম এলাকার তরুণদের প্রশিক্ষণের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা যেতে পারে।
এসময় দর্শকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, সফটওয়্যারের পাশাপাশি দেশ হার্ডওয়্যার খাতেও এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ এখন শুধু কম্পিউটার বানায় না বরং কম্পিউটারের মাদারবোর্ডও প্রস্তুত করে। আমাদের তৈরি প্রায় ১৫ হাজার ল্যাপটপ আমরা তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগকে দিয়েছি, যার একটিও ফেরত আসেনি। আমরা পৃথিবীর মাত্র ছয়টি দেশের একটি, যাদের সঙ্গে আমরাও ফ্রিজের কমপ্রেসার তৈরি করি। আমাদের বাসা-বাড়িতে যেসব ডিজিটাল মিটার, সেগুলোও আমাদের শিল্প করপোরেশন তৈরি করেছে।
টেলিকম এবং আইটি বিশেষজ্ঞ টিআইএম নুরুল কবীরের মডারেশনে সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন গ্রামীণফোনের প্রধান মানবসম্পদ কর্মকর্তা সৈয়দ তানভির হুসাইন, আমরা নেটওয়ার্কসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ ফরহাদ আহমেদ, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের যুগ্ম সচিব খাইরুল আমিন, অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এসএম ফরহাদ এবং রবি আজিয়াটা লিমিটেডের ব্যবস্থা পরিচালক মাহতাব উদ্দীন আহমেদ।
এসময় প্যানেলিস্টদের মধ্য থেকে এনটিটিএন অপারেটর ফাইবার এট হোমের চেয়ারম্যান ময়নুল হক সিদ্দিক বলেন, বাংলাদেশ আইটি খাতে ভালো করছে, তবে আরও ভাল করার জায়গা রয়েছে। এর জন্য সারাদেশে কানেকটিভিটি বাড়াতে হবে, যা এনটিটিএন অপারেটর হিসেবে আমরা করছি। সারাদেশে ফাইবার নেটওয়ার্ক অবকাঠামো তৈরির কাজ আমরা প্রায় শেষ করে ফেলেছি। ২০২০ সাল নাগাদ বাকি কাজগুলোও শেষ হয়ে যাবে।
নতুনসময়/এসআই