কাদের সিদ্দিকীর ‘কাণ্ডে’ ক্ষুব্ধ মহিলা পরিষদ

বীর মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যুতে নারী ইউএনওর মাধ্যমে গার্ড অব অনার দেওয়া নিয়ে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর আচরণে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।
রোববার (৩০ এপ্রিল) বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানুর সই এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সখিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খানের মৃত্যুতে নারী ইউএনওর মাধ্যমে গার্ড অব অনার দিতে গেলে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী এতে বাধা দেন। কাদের সিদ্দিকী একজন পুরুষ কর্মকর্তাকে দিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়ার জন্য প্রস্তাব দেন।
একজন প্রবীণ রাজনীতিকের এমন অগ্রহণযোগ্য, সংবিধান পরিপন্থী, নারীর মানবাধিকার পরিপন্থী এমন প্রস্তাব দেওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ জানাচ্ছে। একজন রাজনীতিকের এ ধরনের আচরণ নারীর জন্য যেমন অবমাননাকর ঠিক একইভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ও জাতির জন্যও অপমানজনক। কেননা একটি স্বাধীন সার্বভৌম নারী-পুরুষের সমতাপূর্ণ প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনের জন্যই মুক্তিযোদ্ধারা তাদের জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
তারা আরও বলেন, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কৃতকার্য হওয়ার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হয়। সেখানে নারী-পুরুষ বিভাজন সংবিধান বিরোধী। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে পদাধিকার বলে যাদের ওপর বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ার মহান দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তারা সেই রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালন করবেন এটাই প্রত্যাশিত। বাংলাদেশে নারী ইউএনও বলে কোনো পদ নেই।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারীর ক্ষমতায়নকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে এই ধরনের যেকোনো কূটকৌশল ও বিভিন্ন অজুহাতকে প্রতিহত করতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে তারা বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে এই বক্তব্য প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান।
গতকাল শনিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের সখিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হামিদ খানের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দিতে আসেন স্থানীয় নারী ইউএনও। এতে বাধা দেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। সখিপুর পিএম পাইলট মডেল গভ. স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
এতে ইউএনও চলে যান। পরে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। কাদের সিদ্দিকী চলে যাওয়ার পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ফের ইউএনও ঘটনাস্থলে আসেন। এবং তার নেতৃত্বেই রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদর্শনের পর দাফন অনুষ্ঠিত হয়।