ঢাকা সোমবার, ৩০শে জুন ২০২৫, ১৭ই আষাঢ় ১৪৩২


অনুমতি ছাড়াই অর্ধলাখ মানুষ জমায়েত করে করোনা মুক্তিতে দোয়া


১৯ মার্চ ২০২০ ০০:৫০

করোনা প্রতিরোধে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতিতে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে। চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহ জামে মসজিদের খতিব মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবিরী আল মাদানি মোনাজাত পরিচালনা করেন।

বুধবার (১৮ মার্চ) ফজরের নামাজের পর থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত উপজেলার হায়দরগঞ্জ তাহেরীয়া আরএম কামিল মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে এই মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। সে সময় মাদ্রাসা, ঈদগাহ প্রাঙ্গণ ও হায়দরগঞ্জ বাজার এলাকায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের ভিড় দেখা যায়।

করোনা ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় সরকার সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠার বন্ধ ঘোষণা করেছে। হাজার হাজার লোকের সমাগমে দোয়া অনুষ্ঠান কতটুকু নিরাপদ সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আয়োজক কমিটির সদস্য সাইয়্যেদ মোহাম্মদ তাহের বলেন, প্রায় ৫০ হাজার লোক সমাগম হয়েছে। সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন আমরা সেটা করেছি। কিন্তু, গণজামায়েত নিষিদ্ধ করে কোনো প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় আমরা এটা করেছি। আমরা চেয়েছিলাম ‘সাইয়্যেদ মঞ্জিল’ দরবার শরীফে সংক্ষিপ্ত আকারে খতমে সেফা করার জন্য। কিন্তু, খবর পেয়ে হাজার হাজার ভক্ত জমায়েত হয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডা. আবদুল গাফফার বলেন, এ গণ জামায়েত ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে ১০ জনের বেশি লোকের সমাগম নিষিদ্ধ করেছে সেখানে হাজার হাজার লোকের সমাগম করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কাজটি করা ঠিক হয়নি। দোয়া ব্যক্তিগতভাবেও করা যায়।

গণজমায়েতের বিষয়টি নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর পুলিশ সুপার এএইচএম কামরুজ্জামান গণমাধ্যমকে জানান, আয়োজকরা পুলিশের কোনো অনুমতি না নিয়ে এটা করেছে। ‘এমন গণ জমায়েত ঠিক হয়নি’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল বলেন, উপজেলা কিংবা জেলা প্রশাসন কারো থেকেই কোনো অনুমতি না নিয়ে গণজমায়েত হয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি।

 

এ ব্যাপারে রায়পুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সাবরিন চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি। মুঠোফোনে ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

করোনা প্রতিরোধে সারাবিশ্বে, বিশেষ করে মুসলিম দেশগুলোতে মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে বা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। সৌদি আরবে কাবা ও মসজিদে নববী ছাড়া অন্য মসজিদে নামাজ পড়ায় নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে, যারা বিদেশ থেকে এসেছেন এবং জ্বর, হাঁচি-কাশির মতো করোনাভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে তাদের মসজিদে না যাওয়া ও জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

নতুনসময়/আইকে