আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সাজা দেয়া হয়েছে বেগম জিয়াকে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সাজা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (৩ মে) দুপুরে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাড. রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গণতন্ত্রের মাকে ( খালেদা জিয়া) অন্যায়ভাবে সাজানো মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করে তাকে জেলে আটকে রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল নিজে তা স্বীকার করেছেন। তিনি তার দলীয় নেতাকর্মীদের বলেছেন বিএনপির লোকদের বলে দাও তারেখ রহমান বাড়াবাড়ি করলে তার মা জেল থেকে বের হবে না। এতেই প্রমাণ হয় আমরা কি মিথ্যা বলেছিলাম যে, তিনি মিথ্যা, মনগড়া সাজানো মামলায় শুধুমাত্র প্রতিহিংসার কারণে আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে সাজা দেয়া হয়েছে বেগম জিয়াকে।
তিনি আরো বলেন, তিনি যে জনগণের প্রধানমন্ত্রী নন, সুষ্ঠ ভোটের প্রধানমন্ত্রী নন, ডাকাতি করে ক্ষমতায় আছেন তা তিনি প্রমাণ করেছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বীকে বন্দী করে। তিনি বেগম জিয়াকে বন্দী করেছেন কারণ, বেগম জিয়া বাইরে থাকলে তার সাধের মিডনাইট, একতরফা দূষিত নির্বাচন তিনি করতে পারতেন না। অবৈধ সরকার দীর্ঘায়িত করতে পারতেন না। তিনি যেভাবে মনোনীতভাবে প্রশাসন দিয়ে নির্বাচন সাজিয়েছিলেন তা করতে পারতেন না। তাই নির্বাচনের আট মাস আগেই তাকে মিথ্যা মামলায় বন্দী করে রাখা হয়।
এছাড়াও তিনি বলেন, এদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতীক বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক চারবারের প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারারুদ্ধ করার মাধ্যমে সারাদেশের মানুষকেই জিম্মি করে ফেলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী রেখে তাঁকে সুচিকিৎসা না দিয়েও শেখ হাসিনার প্রতিহিংসার আগুন নিভছে না। ম্যান্ডেটবিহীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে চোখের চিকিৎসা করতে গেছেন, তিনি যেতেই পারেন অথচ যে দেশনেত্রীর দুটো চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে তাঁকে রাখা হয়েছে কারাগারের এমন একটি কক্ষে যেখানে বালু ও সুরকী সারাক্ষণ তাঁর চোখে পড়ে।
প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কার মধ্যে দেশবাসীকে ফেলে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিদেশে চোখের চিকিৎসা করাতে গেছেন, এতে সুষ্পষ্টভাবে প্রমানিত হয় প্রধানমন্ত্রী জনগণের ভালমন্দকে তোয়াক্কা করেন না, কারণ তিনি এবং তাঁর সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নন। জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই বর্তমান শাসকগোষ্ঠী জনকল্যাণকে ভ্রুক্ষেপ করে না, আর এ কারণেই প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র ছোবল থেকে মানুষকে নিরাপত্তা না দিয়ে, কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করেই প্রধানমন্ত্রী বিদেশ সফরে চলে গেলেন। জনকল্যান নয় বরং দেশে কিংবা বিদেশে যেকোন অনুষ্ঠানেই বেগম জিয়া এবং তারেক রহমানকে নিয়ে কুৎসা রটনাই এখন প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যকর্মে পরিণত হয়েছে। তাঁর মন্ত্রী-নেতারা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে নিয়ে কটুবাক্য প্রয়োগে ক্লান্তিবোধ করেন না। দেশে নারী-শিশু নির্যাতন এখন ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। প্রতিদিন প্রতিনিয়ত বিভিন্ন দূর্ঘটনায় মানুষের মৃত্যু হচ্ছে, রক্ত ঝরছে কিন্তু তাতে বর্তমান অবৈধ সরকারের কোন মাথাব্যাথা নেই। শুধু একটাই মাথাব্যাথা, তা হলো-কিভাবে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর অস্তিত্ব ধ্বংস করে দেশে বাকশালী রাজত্ব বলবৎ করা যায়। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ যখন গর্জে উঠবে তখন এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার পালাবার রাস্তা খুঁজে পাবে না, আর সেই ক্ষণ আসতে আর বেশী দেরী নেই। তিনি বন্দী থাকলে আপনাদের অবৈধ ক্ষমতা থাকবে, আপনার লোকদের লুটপাট হবে কোন প্রতিবাদ হবে না তাই তাকে বন্দী করে রেখেছেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রেখে তাকে তিলে তিলে হত্যার চেষ্টা করছে।
আমি আবারও অবিলম্বে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তাঁর পছন্দের হাসপাতালে সুচিকিৎসার সুযোগসহ নি:শর্ত মুক্তির জোর দাবি জানাচ্ছি।
মিছিলে স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভুইয়া জুয়েল, সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইয়াসিন আলী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদরেজ জামান, দক্ষিণের সভাপতি এস এম জিলানী, উত্তরের সভাপতি ফখরল ইসলাম রবিন, সাধারণ সম্পাদক গাজী রেজওয়ান হোসেন রিয়াজ, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি রফিক হাওলাদার, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল প্রমুখ।