ঢাকা মঙ্গলবার, ৬ই মে ২০২৫, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩২


বঙ্গবন্ধুকে এখনও আমরা জেনে শেষ করতে পারিনি :খালিদ মাহমুদ


১৭ মার্চ ২০১৯ ০৪:৩১

আলোচনা সভায় খালিদ মাহমুদ চৌধুরী

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন বঙ্গবন্ধুকে এখনও আমরা জেনে শেষ করতে পারিনি, এখনো অনেক কিছু জানার আছে। যদি সঠিকভাবে চেতনায় বঙ্গবন্ধু, বিশ্বাসে বঙ্গবন্ধু থাকতো তাহলে এটা হতো না।

শনিবার রাজধানীর বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট আয়োজিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীর আলোচনা সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক বিপ্লব করতে চেয়েছিলেন। আমরা সেই সাংস্কৃতিক বিপ্লব সেই জায়গায় নিয়ে যেতে পারি নাই। সেই বিপ্লব করতে হলে আরও বেশি বঙ্গবন্ধুকে চর্চা করতে হবে, মুক্তিযুদ্ধকে চর্চা করতে হবে। আমাদের শেকড়ের কাছে যেতে হবে।

নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, মুজিবীয় চেতনা-এখনো শক্তিশালী হয় নাই। এজন্য প্রতিক্রিয়াশীলরা আমাদের ওপর আক্রমণ করে। অর্থনীতি খামচে ধরার চেষ্টা করে। সংস্কৃতিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। ইতিহাস বিকৃত করে। সমাজ ব্যবস্থাকে কলুষিত করে। রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে দুর্বৃত্তায়নের হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

আওয়ামী লীগের এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদের যা দিয়ে গেছেন, সে ঋণ শোধ করতে পারবো না। বঙ্গবন্ধু দু’টি দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়েছেন। একটিতে নেতৃত্ব দিয়ে জাতির পিতা হয়েছেন। যা পৃথিবীতে অদ্বিতীয়। বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছেন, স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন করেছেন। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করা পর্যন্ত প্রতিটি আন্দোলনে তার অবদান অবিস্মরণীয়। ’৭০-এর নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু একক নেতায় পরিণত হয়েছেন।

খালিদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে যত লেখা ও আলোচনা হয়েছে, পৃথিবীর আর কোন নেতাকে নিয়ে এত আলোচনা হয়নি। দুর্নীতি, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে আমরা সোনার বাংলা গড়ে তুলব।

ছয়দফা বাস্তবায়নে ছাত্রলীগের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে খালিদ মাহমুদ বলেন, ছয় দফা যখন বঙ্গবন্ধু দিলেন তখন আওয়ামী লীগের অনেক নেতাই কিন্তু ছয় দফার বিরুদ্ধে আরও অনেক দফা দিয়ে বেরিয়ে গেলেন। অনেকেই সেটাকে মানেন নাই, অনেকে আওয়ামী লীগ থেকে চলে গেছেন। কিন্তু ৪৮ সালে তিনি যে ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করলেন, ছাত্রলীগ কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ছয় দফাকে এক দফায় পরিণত করলো। সেই ছাত্রলীগ মহান নেতা বঙ্গবন্ধুকে জনগণের কাছে যেভাবে তুলে ধরলেন এবং বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে মানুষ গ্রহণ করলো সত্তরের নির্বাচনে তার প্রতিদান দিলেন। সত্তরের নির্বাচন যখন হয় তখন বাংলাদেশে অনেকেই নেতা। সবাই বলে আমি নেতা। পাকিস্তানে যারাই যায়, সে-ইনেতা। পাকিস্তানিরা সেভাবেই দেখতেন আমাদের। সত্তরের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের একক নেতায় পরিণত হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। শেখ মুজিব একক নেতায় পরিণত হলেন বলেই ৭ মার্চে তিনি বললেন, আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি, তোমাদের যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে।

বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পেরেছি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, সেই ঐক্যকে যদি আমরা ধরে রাখতে পারি তাহলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে আমরা বলতে পারবো, পিতা মুজিব তুমি যে আদর্শ আমাদের কাছে রেখে গেছো সে আদর্শ ধারণ করে আমরা তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে পারবো।

বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি রেদুয়ান খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকটে বলরাম পোদ্দার, একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আমানুল হক, সঙ্গীতশিল্পী রফিকুল আলম, অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী, সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অরুন সরকার রানা প্রমুখ।