দেড়শ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দেড়শ’ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে বিএনপি। গত সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির নেতারা। এসময় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভিডিও কনফারেন্সে ছিলেন। মনোনয়নের বিষয়টি নিশ্চিত করতে চূড়ান্ত প্রার্থীদের ফোনে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি আজ অনানুষ্ঠানিকভাবে চিঠিও দেয়া হতে পারে।
বাকিদের ২০ দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে আসন বণ্টন নিয়ে চূড়ান্ত হওয়ার পর চিঠি দেয়া হবে। তবে ত্রুটির কারণে যেসব আসনে মূল প্রার্থী বাদ পড়েছেন, সেখানে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এ ছাড়া নির্বাচন পরিচালনাসহ সার্বিক বিষয় দেখভাল করতে ১২টি উপকমিটি গঠনেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই কমিটিগুলো হচ্ছে, নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, নির্বাচন কমিশন, মিডিয়া কমিটি, সোস্যাল মিডিয়া কমিটি, অর্থ কমিটি, প্রচার কমিটি ইত্যাদি।
এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য জানান, অন্তত ১৫০ আসনে একক প্রার্থীর তালিকা করা হয়েছে। রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে চূড়ান্ত হওয়া দেড়শ আসনে বিএনপির প্রার্থীদের চিঠি দেয়া হবে। ৮ তারিখের মধ্যেই চূড়ান্ত প্রার্থীদের আনুষ্ঠানিক চিঠি দেবে বিএনপি। তবে ২০ দল ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকরা যেসব আসন চেয়েছে, এ তালিকায় সেসব আসন নেই। একক প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র না দিয়ে অধিকাংশ আসনেই একাধিক মনোনয়নপত্র দেয় বিএনপি।
এ বিষয়টি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, এটা চূড়ান্ত করার কোনো বিষয় নয়। আমরা মনোনয়নের চিঠি দেওয়ার সময় একজনকে চূড়ান্ত করে বাকিদের বিকল্প প্রার্থী হিসেবে দিয়েছি। কিছু জায়গায় মূল প্রার্থী সরকারের কৌশলে যাচাই-বাছাইয়ে বাদ পড়েছে। এর মধ্যে আমাদের জনপ্রিয় নেতা খালেদা জিয়াও রয়েছেন। আশা করি, সবাই তাদের প্রার্থিতা ফিরে পাবেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘কৌশলগত কারণে’ প্রায় প্রতিটি আসনেই একাধিক প্রার্থীকে দলীয় মনোনয়ন দেয় বিএনপি। মামলা, ঋণখেলাপি ও তথ্যগত জটিলতার কারণে অনেকের মনোনয়ন বাতিল হয়ে গেছে। প্রার্থিতা ফিরে পেতে অনেকে ইতিমধ্যে ইসিতে আপিলও করেছেন। এর মধ্যেই বিএনপির নীতিনির্ধারকরা প্রার্থী যাচাই-বাছাই করে অন্তত ১৫০ আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। লন্ডনে অবস্থানরত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই এগুলো চূড়ান্ত করা হয়। মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশনে উত্তীর্ণ হওয়ার পর জনপ্রিয় ও যোগ্যতা বিবেচনায় বাকি আসনে ৮ ডিসেম্বর একক প্রার্থীকে চিঠি দেবে বিএনপি। এছাড়া ২০-দলীয় জোটের শরিকদের আসন বণ্টন মোটামুটি চূড়ান্ত হয়েছে। তবে আরেক জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিকদের সঙ্গে এখনও আসন বণ্টন চূড়ান্ত করতে পারেনি দলটি। তবে ৮ ডিসেম্বরের মধ্যেই দল, জোট ও ফ্রন্টের ধানের শীষের একক প্রার্থী তালিকার চিঠি দেয়া হবে। তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ৯ ডিসেম্বর।
বিধি অনুযায়ী বিএনপি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে চিঠি দিয়ে যাকে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়ার কথা বলবে সেই হবে বিএনপি বা জোটের প্রার্থী।
বাকিরা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই নির্বাচন করা থেকে বাদ পড়বেন। ১০ ডিসেম্বর সারা দেশে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে।
সূত্র জানায়, দলের একক প্রার্থী ঘোষণা করতে গত ২ দিন বিএনপির নীতিনির্ধারকরা গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
বৈঠকে কোন কোন আসনে একক প্রার্থী ঘোষণা করা যায় তার তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। আজ থেকে চূড়ান্ত হওয়া একক প্রার্থীদের অনানুষ্ঠানিক চিঠি দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়।