নির্বাচনী গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন আ.লীগের যে চার নেতা

মনোনয়ন না পেলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মনোনয়নবঞ্চিত চার কেন্দ্রীয় নেতাকে । শনিবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি তাদের এ দায়িত্ব দেন। মনোনয়ন না পেলেও এ চার নেতা ৩০০ আসনে প্রার্থী মূল্যায়ন করবেন এবং নির্বাচনী গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন।
এ ছাড়া কোনো আসনে যেন বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকে, সে জন্য সমন্বয়ের কাজ করবেন তারা। আজ থেকে তারা কাজ শুরু করবেন। গণভবন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত চার নেতার মধ্যে দুজন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও অপর দুজন সাংগঠনিক সম্পাদক। তারা হলেন-জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও বিএম মোজাম্মেল হক।
জাহাঙ্গীর কবির নানক মোহাম্মদপুর-আদাবর আসনের টানা দুবারের এমপি। এবারও তিনি ওই আসন থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। তার আসনে মনোনয়ন পেয়েছেন নগর আওয়ামী লীগ নেতা সাদেক খান।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান ফরিদপুর-১ আসন থেকে নির্বাচন করেন। এবারও তিনি ওই আসন থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন।কিন্তু শেষ পর্যন্ত মনোনয়নবঞ্চিত হন এ হেভিওয়েট।
সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম মাদারীপুর থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। দল তাকে মনোনয়ন দেয়নি। মনোনয়নবঞ্চিত হয়েছেন মোজাম্মেল হকও।
জাতীয় নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রার্থী মূল্যায়নের কাজটি এতদিন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাই দেখতেন।
এখন সেই দায়িত্ব জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে চার নেতা দেখবেন। আজ রোববার থেকেই তারা কাজ শুরু করবেন। সারাদেশে জেলায় জেলায় গিয়ে আসনভিত্তিক প্রার্থী মূল্যায়ন শুরু করবেন।
চার নেতার একজন বলেন, সভাপতি আমাদের হাতে ৩০০ আসনের প্রার্থীদের বিবরণ তুলে দিয়েছেন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৬৪ আসনে ২৮১ প্রার্থী এবং বাকি ৩৬ আসনে মহাজোটের ঘোষিত প্রার্থী রয়েছেন।
এ ছাড়া ১৭টি আসনে দুজন করে যে প্রার্থী দেয়া হয়েছে, তার মূল্যায়ন তৃণমূলে করতে বলা হয়েছে। জনপ্রিয়তা ও ভোটের মাঠের অবস্থা থেকে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে একক প্রার্থীর প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে দায়িত্বশীলদের।
এ ছাড়া যেসব আসনের জোটের ও মহাজোটের একাধিক প্রার্থী রয়েছে, তার একটি তালিকাও দেয়া হয়েছে। এসব তালিকায় থাকা প্রার্থী, দলের মধ্যে থাকা বিদ্রোহী প্রার্থীদের নিয়েও কাজ করতে বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি নির্দেশনা দিয়েছেন, উইনেবল প্রার্থীর ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেয়া যাবে না। জোটের আসনগুলোতে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
কোনোভাবেই যেন একটি আসনেও বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকে, সেদিকেও টিম সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট, কেন্দ্রভিত্তিক কমিটি, প্রচার-প্রচারণার বিভিন্ন দিক স্থানীয় নেতাকর্মীদের অবহিত করার কাজটিও দেয়া হয়েছে প্রতিনিধিদলকে।
প্রয়োজনে এ বিশেষ টিমে দলের অন্য নেতাদের সমন্বয়ের কথাও বলেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ এ চার সদস্য বৈঠক করে প্রার্থী মূল্যায়নে এলাকাভিত্তিক সফরের তালিকা করবেন বলে জানা গেছে।
গণভবন সূত্রে জানা যায়, শনিবার রাতের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টুঙ্গিপাড়া সফরের বিস্তারিত আলোচনা হয়। ১১ ডিসেম্বর টুঙ্গিপাড়া নিজ জন্মভূমিতে নির্বাচনী প্রচারণার মধ্য দিয়ে একাদশ জাতীয় নির্বাচনের প্রচারকাজ শুরু করবেন শেখ হাসিনা। এর পর দেশের গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি জেলা ও বিভাগীয় শহর সফর করবেন তিনি।