যে সব কারনে সংলাপে সাড়া দেবে না আ.লীগ

সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সংলাপসহ সাত দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলটির সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে চিঠি দিয়েছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। রোববার
গণফোরাম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু এ চিঠি দেন। এ চিঠি পাওযার পর ক্ষমতাসীন দলের নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করেছেন। তবে আওয়ামী লীগ যে ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের কোনো উদ্যোগ নেবে না সেটি এক প্রকার নিশ্চিত।
আওয়ামী লীগের সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের চিঠির উত্তর কীভাবে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে আজ সোমবার আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত নেবে। এছাড়া পাঁচটি কারণে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে সাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।
এই পাঁচটি কারণ হলো:
১। ঐক্যফ্রন্ট চিঠিতে যে ৭ দফা এবং ১১ দফা উল্লেখ করেছে তা সংবিধান বিরোধী। এসব নিয়ে আলোচনা করাটা হবে সংবিধানের লঙ্ঘনের সামিল। যেহেতু সংবিধানের বাইরে গিয়ে সংলাপে অংশ নেওয়া গণতন্ত্রের রীতিনীতির মধ্যে পড়ে না তাই আওয়ামী লীগ ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপে আগ্রহী নয়।
২। ওই চিঠিতে যে দাবিগুলো আছে সেগুলো অধিকাংশই নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ইতিমধ্যেই নির্বাচনের ক্ষণ গণনা শুরু হয়ে গেছে। তাই এই মুহূর্তে এসব দাবিদাওয়া নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা সরকারের এখতিয়ারের বিষয় নয়। ফলে ঐক্যফ্রন্টের প্রস্তাবিত দফা নিয়ে আলোচনায় যেতে আগ্রহী নয় সরকার।
৩। বিএনপি-জামায়াতকে নিয়েই ঐক্যফ্রন্ট গঠন করা হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী দল জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ঐক্যফন্টের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ যোগসূত্র রয়েছে। আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে কোন রকম সংলাপে যেতে রাজি নয়। ফলে ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে নেতিবাচক উত্তর দেবে দলটি।
৪। গত ১০ অক্টোবর একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে আদালতের পর্যবেক্ষণে বিএনপি সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা অবস্থায় বিএনপি রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার জন্যই তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের ওপর সহিংস হামলা চালিয়েছিল বলেও আদালতের পর্যবেক্ষনে উঠে আসে। ফলে এমন সহিংস-সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো ধরনের সংলাপে যেতে কোনোভাবেই আগ্রহী নয় আওয়ামী লীগ।
৫। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান দল বিএনপিতে আদালত কর্তৃক স্বীকৃত দুর্নীতিবাজরা নেতৃত্বে রয়েছেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত, দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াও দুটি দুর্নীতি মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত হয়ে লন্ডনে পালিয়ে আছেন। এছাড়া তারেক জিয়া আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সন্ত্রাসী হিসেবেও স্বীকৃত। এমন সব দুর্নীতিগ্রস্ত-সন্ত্রাসী নেতা যে জোটের মধ্যে রয়েছে সে জোটের সঙ্গে সংলাপে আগ্রহী নয় আওয়ামী লীগ।
এসব কারনেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সংলাপের আহ্বানে সাড়া না দেয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগের। আজকালের মধ্যেই এ ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাবে দলটি। তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
আরকেএইচ