ঢাকা সোমবার, ৫ই মে ২০২৫, ২২শে বৈশাখ ১৪৩২


জয় হোক জাতীয় পার্টি’র- মহিদ হাওলাদার


৩১ ডিসেম্বর ২০২২ ০৩:৫৯

ফাইল ছবি

প্রয়াত সাবেক রাষ্ট্রপতি মান্যবর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের হাত ধরে জাতীয় পার্টির জন্ম হয় ১৯৮৬ সালে । তিন যুগেরও বেশি পুরনো এই দলটি জনগণের ম্যান্ডেটেবিশ্বাসী নির্বাচনমুখি একটি উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। দেশে-বিদেশে সুপরিচিত জাতীয় পার্টি এখন সুপ্রতিষ্ঠিত এবং সুসংগঠিত ।

জাতীয় পার্টি প্রতিষ্ঠার প্রথম বছর অর্থ্যাৎ ১৯৮৬ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমাদের পার্টি ৪২ দশমিক ৩ ভাগ ভোট পেয়ে ১৫৩ আসনে বিজয়ী হয় এবং এককভাবে সরকার গঠন করে।

অনুরূপভাবে ১৯৮৮ সালের সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ৬৮ দশমিক ৪ ভাগ ভোট পেয়ে ২৫১ আসনে নিরংকুশ বিজয় অর্জন করে এবং দ্বিতীয় মেয়াদের জন্য সরকার গঠন করে ।

বলাবাহুল্য, জন্মের পর থেকে জাতীয় পার্টি জনপ্রিয়তা অর্জনের যে ধারার সূচনা করেছিল তারই ধারাবাহিকতায় এখন জাতীয় পার্টি বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান জনপ্রিয় রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়েছে।

১৯৯১ সালে রাজনৈতিক পট পরিবর্তন সত্বেও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কারাঅন্তরীণ অবস্থায় রংপুর অঞ্চলের ৫টি আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

কিন্তু ১৯৯১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত জাতীয় পার্টির পথচলা মোটেও কুসুমাস্তীর্ণ ছিল না। ওই সময়কালে ২টি বড় রাজনৈতিক দলের সরকারের রোষানলে পড়তে হয়েছে জাতীয় পার্টির অবিসংবাদিত নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। বিএনপি সরকার তার রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে কারাগারে নিক্ষেপ করে ১৯৯১ সালে। আর হামলা, মামলার কথা তো বলাইবাহুল্য। সেসময় জাতীয় পার্টিকে সমূলে ধ্বংস করার জন্য বিএনপি সরকার উঠেপড়ে লাগে। এমন কোনো নিপীড়নমূলক পন্থা ছিল না যা গ্রহণ করতে পিছপা হয়নি বিএনপি সরকার। এর পিছনে যেমন ছিল প্রতিহিংসার রাজনীতি আবার তেমনি ছিল ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের অপকৌশল। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও জাতীয় পার্টির সমর্থন পাওয়ার আশায় তাঁকে দাবার ঘুটি বানানোর নানা অচেষ্টাও চালিয়েছে বিএনপি।

এদিকে আওয়ামী লীগও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে কম খেলা খেলেনি। তারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে জাতীয় পার্টির সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করেছে, অবলম্বন করেছে নানা অপকৌশল । পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে জুজুর ভয় দেখানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের একমাত্র লক্ষ্য ছিল জাতীয় পার্টির নেতাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে তাঁর কাছ থেকে রাজনৈতিক সমর্থন আদায় করা।

সুতরাং বলা যায়, রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের জন্য যেমন বিএনপি তেমনি আওয়ামী লীগও জাতীয় পার্টি’র চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে বশ করার জন্য নানা কূটকৌশলের আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু আমাদের পার্টি প্রধান ঠান্ডামাথায় অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে এই দুটি দলের সব ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেন এবং জাতীয় পার্টির স্বাধীন অস্থিত্ব বজায় রেখে দলটিকে দৃঢ়ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে সক্ষম হন।

জাতীয় পার্টির প্রয়াত চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সুযোগ্য নেতৃত্বে পার্টি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদে তৃতীয় বিরোধী দল এবং ২০১৪ ও ২০১৮ সালে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আবির্ভূত হয় ।

নানা ঘাত, প্রতিঘাত মোকাবিলা করে জাতীয় পার্টিকে আজকের অবস্থানে নিয়ে আসার পেছনে দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের অপরিসীম অবদান জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা চিরদিন কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করবে।

বর্তমান প্রেক্ষিত: জাতি এখন এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে । এই সময়ে রাজনৈতিক অঙ্গনেও চলছে নানা খেলা। চলছে আমাদের দলের ভেতরে ও বাইরে নানা ষড়যন্ত্র। সুতরাং এই মূহুর্তে যেকোনো মূল্যে জাতীয় পার্টির তৃণমূল নেতা ও কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যারা জেলার দায়িত্বে আছি তৃণমূল পর্যায়ে, আমাদের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবন্ধ রাখতে আমাদের আপ্রাণ চেষ্টা করতে হবে। অতন্দ্রপ্রহরীর মতো সজাগ থাকতে হবে। পার্টির ভিতরে ও বাইরের ষড়যন্ত্র বানচাল করে দিতে হবে। জাতীয় পার্টির সুযোগ্য চেয়ারম্যান জনবন্ধু জি.এম কাদেরের প্রতি আমরা সদা-সর্বদা অনুগত থাকবো।

আমাদের আজকের শপথ হচ্ছে: আমরা পার্টির চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অতীতে যেমন আস্থাশীল ছিলাম, বর্তমানেও তাই আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকবো। জয় হোক জাতীয় পার্টির।