ঢাকা শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেব না: নুর


১৭ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৪৩

শেখ হাসিনার অধীনে, আওয়ামী লীগের অধীনে কোনো নির্বাচনে গণঅধিকার পরিষদ অংশ নেবে না। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া কোনো নির্বাচন হতে দেব না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেওয়া মানে আওয়ামী লীগকে আবার ক্ষমতায় বসানো বলে মন্তব্য করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হক নুর।

জাতীয় স্মৃতিসৌধের শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে আজ শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন নুর।

নুর বলেন, ‘কোনো সুস্থ গণতান্ত্রিক চিন্তাভাবনার মানুষ এই ধরনের নির্বাচনে অংশ নেবে না। সেই জায়গা থেকে বিরোধী দলগুলো রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদবিরোধী ও সরকার পতনের আন্দোলনে বিএনপিসহ অন্যান্য দলের সঙ্গে ৪২টি দল যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে একমত হয়েছে।

নুর বলেন, ‘৫১ বছরে আমাদের অর্জন শুধুই একটি স্বাধীন ভূখণ্ড। গণতন্ত্র, স্বাধীন বিচার বিভাগ, বিচারব্যবস্থা আমরা এখনো পাইনি। আজকে এ জন্যই তরুণদের যে স্লোগান, সেটাই আমাদের স্লোগান—মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার, দেশ হবে জনতার।’

নুর বলেন, ‘যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়ে এ দেশের কৃষক-শ্রমিক সাধারণ মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই সংগ্রামের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন একটা সহনশীল সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তোলা ছিল মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য। কিন্তু স্বাধীনতার ৫১ বছরের চিত্র যদি আমরা দেখি, যারা একাধিকবার রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল তারা মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্যের একেবারেই বিপরীতমুখী। স্বাধীনতার আগেও আমাদের যে ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মানুষের মর্যাদার জন্য লড়াই করতে হয়েছে, আজকেও সেই একই লড়াই করতে হচ্ছে।’

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পার করে একটি স্বাধীন দেশে যেভাবে বিরোধী মতকে দমন করা হচ্ছে, রাষ্ট্রযন্ত্র যেভাবে অত্যাচার-নির্যাতন করছে, পাকিস্তান আমলেও এটা ছিল না মন্তব্য করে নুর বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে উল্লেখ আছে, বঙ্গবন্ধুকে সকালে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বিকেলে জামিন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আজকে একটা দলের শীর্ষ নেতা, মহাসচিবসহ অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কিন্তু জামিন দেওয়া হচ্ছে না।’

সবচেয়ে অসভ্য ও সবচেয়ে বর্বর ঘটনা স্বাধীন দেশের নাগরিকদের বাসা থেকে রাতের অন্ধকারে তুলে নিয়ে যাওয়া উল্লেখ করে নুর বলেন, ‘তুলে নেওয়ার পর কারও কারও দেখা মিলছে কারাগারে, কারও কারও লাশ পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে বাংলাদেশে যে যুদ্ধংদেহী অবস্থা তৈরি হয়েছে, এর জন্য সরকার দায়ী। সরকার পরিকল্পিতভাবে তাদের সেইফ এক্সিটের জন্য একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা না করে তৃতীয় শক্তিকে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য দেশকে একটি সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করলে তাদের পরাজয় হবে, আরেকটা রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে। তৃতীয় পক্ষ ক্ষমতায় এলে কিন্তু কেউই লাভবান হবে না।’ এর জন্য সরকারের কাছে আহ্বান থাকবে, কীভাবে বিরোধী পক্ষের আলাপ-আলোচনা করে একটা নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা যায় সে বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো।