ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


নতুন রাজনৈতিক জোট ‘গণতন্ত্র মঞ্চ'


৯ আগস্ট ২০২২ ০৪:৩১

ছবি- সংগৃহিত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সাত দলের সমন্বয়ে ‘গণতন্ত্র মঞ্চ’ নামে নতুন রাজনৈতিক মোর্চার আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আগামী ১১ আগস্ট এই জোটের প্রথম কর্মসূচি ঢাকায় পালন করা হবে। সোমবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জেএসডি সভাপতি আ স ম আব্দুর রব এ জোটের ঘোষণা দেন।

নাগরিক ঐক্য, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জেএসডির, ভাষানী অনুসারী পরিষদ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণসংহতি আন্দোলন ও গণঅধিকার পরিষদ নিয়ে নতুন জোট গঠন করা হয়।

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার আদায়, অন্তত দুই বছরের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন এবং সংবিধান সংশোধন করে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা বাস্তবায়ন- এই তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশ হয়েছে। মঞ্চের প্রধান সমন্বয়কারী হয়েছেন জেএসডি সভাপতি আ স ম রব।

নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে জেএসডি সভাপতি আসম আব্দুর রব বলেন, ষড়যন্ত্র নয়, ওপেন ঘোষণা করে সরকারবিরোধী আন্দোলন করবে গণতন্ত্র মঞ্চ৷ সরকারবিরোধী লড়াইয়ের বিকল্প নেই। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সবাইকে সংগ্রামে অংশ নিতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গণতন্ত্র মঞ্চের রূপরেখা তুলে ধরেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। পাশাপাশি জোটের পক্ষ থেকে আগামী ১১ আগস্ট রাজপথে প্রথম কর্মসূচি ঘোষণা দেন তিনি। তবে সেই কর্মসূচি সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়নি।

রূপরেখায় বলা হয়,

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা এবং অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করতে হবে এবং একটি রাজনৈতিক ঐক্যমতের ভিত্তিতে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে।
রাষ্ট্রের তিন অঙ্গ- জাতীয় সংসদ, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা ও সরকারের জবাবদিহিতার কার্যকরী ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন ও দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় সাংবিধানিক সংস্কার। একইসঙ্গে ফেডারেল পদ্ধতির সরকারব্যবস্থা বিষয়ে আলোচনার জন্য জাতীয় কমিশন গঠন।
বিচার বিভাগের পরিপূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, নিম্ন আদালতকে নির্বাহী বিভাগ থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে তার পরিচালনা ও তদারকি উচ্চ আদালতের হাতে ন্যস্ত করা, প্রধান বিচারপতিসহ বিচারক নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন।
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের নীতিতে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের জীবন ও মর্যাদা নিশ্চিত করা।
দেশে ব্যাপক কর্মসংস্থানস ও অর্থনীতির টেকসই প্রকৃতিবান্ধব ভিত্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল জনগণের জন্য সমান সুযোগের নিশ্চয়তা তৈরি।
জোটের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে গণঅধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়া, নুরুল হক নুর, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, ভাষানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, সব বিরোধী রাজনৈতিক দল ও সংগঠনকে সঙ্গে নিয়ে পৃথকভাবে যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে নামবে গণতন্ত্র মঞ্চ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠান ও বর্তমান সরকারের দ্রুত পদত্যাগ দাবি করে আসছেন সাত দলের শীর্ষ নেতারা।

একই দাবিতে মাঠের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিও একটি বৃহৎ রাজনৈতিক জোট গঠনে কাজ করছে।