ঢাকা বুধবার, ১৫ই মে ২০২৪, ১লা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


আগুন নিয়ে খেলবেন না, লাইভে হুমকি মামুনুলের


৮ এপ্রিল ২০২১ ২২:৫৪

ফাইল ছবি

রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনা নিয়ে ফেসবুক লাইভে কথা বলেছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই হেফাজতে ইসলামকে দুর্বল করার জন্যই এসব ঘটনা ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। একই সঙ্গে ফাঁস হওয়া ফোনালাপও তার। 

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুর ৩টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লাইভে আসেন তিনি। এই সময় তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আগুন নিয়ে খেলবেন না।

তিনি বলেন, দেশে একটি অস্থিরতা বিরাজ করছে। এরকম একটি পরিস্থিতি তৈরী করার পেছনে ব্যক্তি মামুনুল হক মুখ্য উদ্দেশ্য নয়, মুখ্য উদ্দেশ্য হলো ইসলামের পক্ষে কণ্ঠগুলো স্তব্ধ করে দেওয়া, ইসলামপন্থাকে বাংলাদেশে দুর্বল করে দেওয়া।

মওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানীকে গ্রেফতার প্রসংগে তিনি বলেন, একইভাবে তাঁর চরিত্রের উপরও কালিমালেপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, চরিত্র হননের যে অশুভ খেলা শুরু হয়েছে, সেটা যদি চলতে থাকে তাহলে কোথাকার পানি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে সেটা কী চিন্তা করেছেন? ইতোমধ্যেই কী দেখছেন না কতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কতো ব্যক্তিগত বিষয় জনসমক্ষে এসে পড়ছে। এটা দেশের শান্তি শৃঙ্খলা, স্থিতিশীল পরিবেশকে, সভ্য সমাজের ভদ্রতাকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করবে।

তিনি বলেন, সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে, কাঁচের ঘরে থেকে অন্যকে ঢিল ছোড়ার মতো বিপজ্জনক প্রক্রিয়া কেউ অবলম্বন করবেন না।

রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে সেখানে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমি আশা করিনি যে, বাংলাদেশ এমন একটা অবস্থায় পৌঁছে গেছে, সন্ত্রাসীরা এমন একটি নিরাপদ জায়গাতেও এভাবে হামলা করতে পারে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, এই ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর কয়েকজন সদস্য। তাদের যদি কোনো যাচাই বাছাইয়ে বিষয় থাকতো, তারা আমার অনুমতি নিয়ে আমার ঘরে প্রবেশ করতে পারতেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য যদি ৩ জন থাকে, সরকার দলীয় ক্যাডার ছিলো ৩০ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী সরকার দলীয় ক্যাডারদের নিয়ে কেন আমার উপর চড়াও হলো, কেন আমাকে হেনস্তা করলো? আমি যদি রুখে না দাঁড়াতাম, তবে আমি নিশ্চিত তারা আমাকে আরো ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিতো।

এর আগে বুধবার সন্ধ্যা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে।

লাইভে মাওলানা মামুনুল হক দাবি করেন, র‍য়্যাল রিসোর্ট-এ তাঁর সংগে থাকা নারীর ছেলে আব্দুর রহমানকে জোর করে ভিডিও বার্তা দিতে বাধ্য করা হয়েছিলো। লিখে দেওয়া স্ক্রিপ্ট তাঁকে ক্যামেরার সামনে বসে পড়তে বলা হয়।

এর আগে গত শনিবার (৩ এপ্রিল) নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের র‍য়্যাল রিসোর্ট-এ এক নারীর সংগে অবরুদ্ধ হন মামুনুল হক। ওই নারীকে নিজের দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন তিন। নাম বলেন, আমেনা তাইয়্যেবা। পরে জানা যায়, এটি তাঁর প্রথম স্ত্রীর নাম। সংগে থাকা নারীর নাম আসলে জান্নাত আরা ঝর্ণা।

ঝর্ণার ছেলে আব্দুর রহমান ভিডিও বার্তায় মামুনুল হককে ‘গাদ্দার’ বলে কটাক্ষ করেন। ফেসবুকে তিনি বলেন, ‘আপনারা কারো অন্ধ ভক্ত হয়েন না। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস কইরেন না। কারণ, সবারই আড়ালে আরেকটা চেহারা থাকে। এই লোকটা (মামুনুল হক) আলেম নামধারী মুখোশধারী একটা জানোয়ার। তার মধ্যে কোনও মনুষ্যত্ব নেই। সে সুযোগের অপেক্ষায় থাকে কাকে কীভাবে দুর্বল করা যায়।’