ঐক্যের ভেতর অনৈক্যের সুর

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ, বিশ্বাস-অবিশ্বাস আর আস্থা-অনাস্থার দানা বেঁধেছে। তাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে অনৈক্য ক্রমেই স্পষ্ট হয়েছে। বিষয়টি সরাসরি স্বীকার করছেন না ঐক্যের উদ্যোক্তা ও সমমনা দলের নেতারা।
সোমবার নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনের বক্তব্যে স্পষ্ট মতবিরোধ দেখা দেয়। পরে অবশ্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় সেই অবস্থান থেকে সরে আসেন তিনি।
পরদিন মঙ্গলবার ড. কামাল হোসেনের বাসায় জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতাদের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। পরে তা বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ড. কামাল হোসেন যোগ না দেয়া এবং এর আগে ড. কামাল হোসেনের বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে বদরুদ্দোজা চৌধুরী না আসায় তাদের মনস্তাত্ত্বিক ঐক্য নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। বিষয়টি নিয়ে ঐক্য প্রক্রিয়ার অন্যতম এই উদ্যোক্তা বলছেন, এখন পর্যন্ত মতবিরোধ কিংবা দ্বন্দ্বের কোনো কিছু দেখছেন না তিনি।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, 'উনারা একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আছে একটু সমস্যা। সেটা পরিবারের মধ্যেও থাকে।'
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'এর আগে তিনি যেতে পারেননি কারণ তিনি অসুস্থ ছিলেন। এখন সুস্থ তাই যাচ্ছেন। ডক্টর কামাল কাল অসুস্থ ছিলেন এটা বলেছেন।'
বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় অনুষ্ঠিত বৈঠক থেকে বিএনপি'র এক নেতা গোপনে মোবাইল ফোনে লন্ডনে সংযুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর উপস্থিত নেতাদের মোবাইল ফোন আলাদা কক্ষে রাখা হয়। ওই বৈঠক থেকে লন্ডনে এক নেতার সঙ্গে মোবাইল ফোনে গোপনে সংযুক্ত থাকার ঘটনায় বৈঠক পণ্ড হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লেও তা অস্বীকার করছেন উপস্থিত নেতারা।
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, 'এখান থেকে বাইরে কোন কল যাচ্ছিল। যদি বাইরে কল করা হয়ে থাকে হতেই পারে। আমরা খেয়াল করে দেখিনি।'
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন,' বিএনপির তো লোক ছিল এ তারেক রহমানকে জানাতেই পারে। তাতে সমস্যা কি। এর জন্যে তো কায়দাকানুনের দরকার নেই।'
বৈঠকে অংশ নেয়া বিএনপি'র ভাইস চেয়ারম্যান ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বিষয়টি অস্বীকার করেন। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, 'কোন জায়গায় আমি ফোন নিয়ে যাই না। আমি গাড়িতে ফোন রেখে যাই। যদি ফোন নিয়েও যাই তাহলেও ওইটুকু শিক্ষা ভদ্রতা আমার আছে এমন কাজ আমি করবো না।'
এসব বিষয়ে ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতারা বলছেন, জনগণ সাড়া দেয়ায় নতুন এই রাজনৈতিক মঞ্চকে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে একটি মহল।
আরকেএইচ