ঐক্য প্রক্রিয়ায় অসন্তুষ্ট কেন যুক্তরাষ্ট্র?

গণফোরাম সভাপতি ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বানে ২২ সেপ্টেম্বরে মহানগর নাট্যমঞ্চে নাগরিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এ মহাসমাবেশের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাটের ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
এক সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার এ মহাসমাবেশে খেলাফত মজলিসসহ ইসলামী ঐক্যজোট, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মতো বেশকিছু উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল অংশ নেওয়ায় অসন্তুষ্ট মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শিয়া বার্নিকাট।
বিভিন্ন দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর তিনটি করে তালিকা তৈরি করে থাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে ‘সবুজ’ তালিকায় থাকে চর্চাকারী দলগুলো। হলুদ চিহ্নিত তালিকায় থাকে জঙ্গিবাদ। সন্ত্রাসে জড়িত থাকতে পারে এমন সম্ভাবনা তৈরি করা হয় এ দলগুলো। আর ‘লাল’ তালিকাভুক্ত হচ্ছে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসের অভিযোগে নিষিদ্ধ সব দল। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের লাল তালিকায় রয়েছে জামায়াতে ইসলামীর নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রশিবির এবং ফ্রিডম পার্টি।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, হলুদ তালিকাভুক্ত অনেকগুলো রাজনৈতিক দল মহানগর নাট্যমঞ্চে অনুষ্ঠিত শনিবারের সমাবেশে যোগ দিয়েছে যাদের মধ্যে খেলাফত মজলিস ছিল অন্যতম। উগ্রপন্থী ধর্মীয় এই দলগুলোর অন্তর্ভুক্তি নিয়েই ক্ষুব্ধ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
কারণ, ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে তাদের আগেই কথা ছিল। দেশে যে নতুন রাজনৈতিক শক্তির উত্থান তারা আশা করেন তাকে সেক্যুলার অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক ধারার অনুসারী হতে হবে। এ কারণেই তারা জামাতকে অন্তর্ভুক্ত করেননি। কিন্তু নাগরিক সমাবেশে অন্যান্য উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জামাতের কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া জামাতের পাশাপাশি মৌলবাদী চিন্তা-চেতনার দলগুলোর উপস্থিতিও ছিল লক্ষণীয়। গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্র যখন জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী ঘোষণা করে, নাগরিক সমাবেশে উপস্থিত অন্তত দুটো দল তখন মার্কিন পতাকা পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত ছিল বলে উল্লেখ করেছে দেশটি।
এসব কারণে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ায় উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে চরম অসন্তোষ জানিয়েছেন বার্নিকাট। এই জোটের মধ্যে যেন কোনো উগ্রপন্থী ধর্মভিত্তিক, মৌলবাদী রাজনৈতিক সংগঠন না থাকে সে ব্যাপারে ড. কামাল হোসেনকে পদক্ষেপ নিতে পরামর্শ দিয়েছেন।
এমএ