ঢাকা শনিবার, ১৮ই মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


স্বাধীনের ৪৮ বছর পর রাজাকারদের তালিকার প্রয়োজনটা কী?


১৮ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৪৯

রাজাকারদের তালিকা প্রকাশ করা প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ স্বাধীনের ৪৮ বছর পর রাজাকারদের তালিকার প্রয়োজনটা কী? এটা সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বলা হচ্ছে পূর্বের তালিকায় অনেক ভুল আছে, তাহলে পাকিস্তানিদের রাজাকারদের তালিকা তৈরি করবেন? তিনি বলেন, তারা মুক্তিযুদ্ধাদের প্রডাক্ট হিসেবে কাজ করে। একই ভাবে আজকে তারা মুক্তিযুদ্ধা এবং রাজাকারদের তালিকা করে আসল মুক্তিযুদ্ধা ও প্রকৃত রাজাকারদের নাম বাদ দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। মঙ্গলবার(১৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিজয় দিবসের র‌্যালির উদ্বোধনের পূর্বে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে আজকে আমরা দেখতে পাচ্ছি এই সরকার অন্যায় ভাবে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে জোর করে জনগণের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় বসে আছে। আজকে আমরা দেখতে পাই আমাদের যেই ভাই গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছে সেই ভাই গুম হয়ে যাচ্ছে। চার-পাঁচ বছর পার হয়ে যায় আমাদের সেই ভাইয়ের সন্তানেরা তাদের পিতার খোঁজ পায় না। ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ বলেন তারা মুক্তিযুদ্ধের ধারক বাহক কিন্তু এরাই দেশের সকল গণতন্ত্র হত্যা করেছে। এরা ১৯৭৫ সালে বাকশাল কায়েম করে দেশের গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করেছিল। ৭৫ আওয়ামীলীগের সময় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল এবং মানুষ না খেয়ে মারা গেছিলো। সেই আওয়ামী লীগ এখন আবার আমাদের ওপর জোর করে ক্ষমতায় চেপে বসেছে। আমাদের লক্ষ লক্ষ দেশ প্রেমিক মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে এই দেশকে কারাগারে পরিণত করেছেন। তারা আমাদের সকল অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে জোর করে ক্ষমতায় আছে।’

আওয়ামীলীগ মুক্তিযুদ্ধকে একটি প্রোডাক্ট হিসেবে ব্যবহার করে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরে প্রকৃত রাজাকারদের বাদ দিয়ে তারা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রাজাকারদের তালিকা তৈরি করেছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আজকে এই র‍্যালির নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার যিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের সহধর্মিণী। যিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দী ছিলেন। কিন্তু আজকের দুঃখভারাক্রান্ত মন নিয়ে দেশনেত্রীকে ছাড়াই আমাদের এই র‍্যালিতে অংশ নিতে হচ্ছে। এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার লক্ষ্যে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা অবশ্যই আমাদের গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে মুক্ত করে আনবো। আপনারা সকল বিভেদ ভুলে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার জন্য একটি ইস্পাতকঠিন ঐক্য গড়ে তুলুন এবং এই সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশনেত্রীকে মুক্ত করুন।’

প্রসঙ্গত, র‍্যালিতে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন,মির্জা আব্বাস,গয়েশ্বর চন্দ্র রায়,বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস- চেয়ারম্যান মোঃ শাহজাহান শামসুজ্জামান দুদু,চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক,আব্দুস সালাম,হাবিবুর রহমান হাবিব,আবুল খায়ের ভূঁইয়া,আব্দুল হাই,সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী,যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন,শ্যামা ওবায়েদ, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ,শহিদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

নতুনসময়/আইকে