আন্দোলনের নামে সহিংসতা হলে সমুচিত জবাব: কাদের

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে আন্দোলনের নামে সহিংসতা করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে 'সমুচিত জবাব' দেয়া হবে বলে বিএনপিকে সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে মৎসজীবী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
এর আগে বেলা ১১টায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন উদ্বোধন কররেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, 'আজকে খালেদা জিয়ার মুক্তির কথা তারা বলছে। আমরা সেটা বারবার বলেছি উনি আদালতে মামলার রায়ে দণ্ডিত, সে কারণে জেলে আছেন। আপনারা আইনি লড়াই করে তাকে মুক্ত করুন। এতে আমাদের সরকারের কোন হস্তক্ষেপ থাকবে না।
"কিন্তু বিএনপি আদালত মানে না, আইনের শাসন মানেনা, বিচার মানেনা, শালিশ মানেনা। আদালত প্রাঙ্গণে তারা খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আদালতের উপর চাপ দিতে সেখানে তারা ভাঙচুর করেছে। তারা পুলিশের উপর হামলা করেছে, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে। আদালত প্রাঙ্গণকে রণাঙ্গনে পরিণত করেছে। এরা ক্ষমতায় আসলে দেশে গণতন্ত্র ও আইনের শাসন স্বাধীন বিচারব্যবস্থার তাদের হাতে নিরাপদ নয়।"
তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার বলতে চাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, গণতান্ত্রিক পথে রাজনৈতিকভাবে আমরা মোকাবিলা করব। কিন্তু আপনারা যদি মনে করে সহিংসতা সৃষ্টি করে, দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করবেন; তাহলে আপনারা বোকার স্বর্গে আছেন।'
"আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য হলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। আজকে সবাই প্রস্তুত হয়ে যান, এখনো ষড়যন্ত্র চলছে, এখনো চক্রান্ত চলছে। শেখ হাসিনার জনপ্রিয় সরকারকে হটানোর চক্রান্ত চলছে। এই চক্রান্ত রুখতে হবে। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।"
ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে সারা বিশ্বে বিভিন্ন জনমত জরিপে আমাদের নেত্রী প্রশংসিত হচ্ছেন। সারা দুনিয়ায় বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা। আজকে রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়ে শেখ হাসিনা যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সারা দুনিয়া তার প্রশংসা করছে। দেশে এতো উন্নয়ন, এতো অর্জন... বিএনপি এবং তার দোসররা উন্নয়ন দেখে না। তারা চোখে কালো চশমা পরেছে। কালো চশমা দিয়ে তারা উন্নয়ন দেখতে পায় না।
"জনগণ তাদের (বিএনপি) চায় না, আন্দোলন করতে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ। এখন তাদের অবলম্বন হচ্ছে প্রেসব্রিফি, তাদের অবলম্বন করছেন নালিশ। বিএনপি এখন বাংলাদেশে নালিশ পার্টি হয়ে গেছে এখন দেশে ঠাঁই না পেয়ে বিদেশিদের কাছে নালিশ দ্বারে দ্বারে ধরনা দিচ্ছে।"
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে মৎস্যজীবী লীগের নেতাকর্মীদের উৎসাহ-উদ্দীপনায় অভিনন্দন জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের সম্মেলন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার মতোই। সারাদেশ থেকে প্রতিনিধিরা এসেছেন এবং বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা আমি আমাদের নেত্রী আমাদের সকলের অভিভাবক দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আমি জানিয়েছি।
একই সঙ্গে তিনি প্রত্যাশা করেন মৎস্যজীবী লীগের নতুন নেতৃত্ব সংগঠনটিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
"আজকে মৎস্যজীবী লীগের সমাবেশে সম্মেলন উপলক্ষে আমি আপনাদের উপস্থিতি দেখে অনুপ্রাণিত হচ্ছি এবং আমরা যারা এখানে আছি তারা অভিভূত। আপনাদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি মৎস্যজীবী লীগকে আগামী দিনে নানা ঘটনার মধ্য দিয়ে আরও শক্তিশালী করবে, আরো গতিশীল করবে, আরো প্রাণবন্ত করবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার উন্নয়নের মহাসড়কে যে অভিযাত্রা, উন্নয়নের দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে, আমাদের এই মুক্তির সংগ্রামের কান্ডারী শেখ হাসিনার সেই আন্দোলনকে আরো বেগবান করবে। আরও ত্বরান্বিত করবে এটাই আমি আপনাদের কাছে প্রত্যাশা করি।"
তিনি বলেন, 'মৎস্যজীবী লীগের সত্যিকার অর্থেই মৎস্যজীবীদের প্রতিনিধিত্বশীল নেতৃত্ব দরকার কোন চাঁদাবাজের দোকান আমরা শুনতে চাই মৎস্যজীবীদের সাথে কোন সম্পর্ক নেই ঢাকায় বসে বসে একটা কার্ড বানিয়ে, নাম কার্ড বানিয়ে জায়গায় জায়গায় দিয়ে চাঁদাবাজি করবে এমন নেতা আমাদের দরকার নেই।'
"মৎসজীবী লীগের সবাইকে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিতে। তারা মৎস্যজীবী লীগ কোন অর্থে ব্যাকগ্রাউন্ড জানতে হবে, ব্যাকগ্রাউন্ড না জেনে এখানে বসে ক্ষমতার দাপটে নেতাগিরি করবেন নিয়মিত বিভিন্ন অফিসে গিয়ে চাঁদাবাজি করবে এ ধরনের লোককে বাদ দিতে হবে। দেখলাম যে মৎস্য উৎপাদনে আমরা তৃতীয় স্থানে। কাজেই এখানে একটা সুন্দর ভালো ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব দরকার", বলেন ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি'র আহ্বায়ক নারায়ন চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরো বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ।