‘শেখ হাসিনা ক্ষমতায়, আপনাদের কোন ভয় নেই’

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি হিন্দু ভাই-বোনদের বলবো, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন। আপনাদের কোন ভয় নেই।
তিনি বলেন, আপনারা মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেন। মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়াবেন। আপনার ভোট মানেগুণে মুসলমানির চেয়ে কম নয়। সবারই ভোটার অধিকার সমান। নাগরিকত্বের দিক থেকে মুসলমানদের মতই প্রথম শ্রেণির নাগরিক হিসেবে কাউকে ভয় পাবেন না।
শনিবার রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দিরে শারদীয় দুগোৎসবে মহাসপ্তমীর বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বছরে বছরে দুর্গাপূজার ভক্তের সংখা বাড়ছে। পূজামণ্ডপের সংখাও বাড়ছে গতবারের চেয়ে বেশি। ৪৮২টি পূজামণ্ডপ গতবারের চেয়ে বেশি। শুধু হিন্দুরা নয়, মুসলমানসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও এটাকে সার্বজনীন উৎসবে পরিণত করে। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়, শেখ হাসিনার সরকার যখন ক্ষমতায় আসলে পূজা পার্বণ উৎসব পালনের বিশেষ করে হিন্দু সমাজের বড় উৎসব দুর্গোৎসবে পূজারি ভক্তের সংখ্যা বেড়ে যায়। পরিবেশ থাকে উৎসবমুখর, নিরাপত্তাকে সর্বত্র। সারা বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে। সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় দুর্গাপুজা উৎযাপন হচ্ছে।
চলমান দুর্নীতি, মাদক-সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুদ্ধি অভিযানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সহযোগিতা কামনা করে তিনি বলেন, আজকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে যে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছেন। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাইছি। এটা কোনো দল, ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নয়। বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতিবাজ ও দুর্বৃত্তায়নের চক্র ভেঙে দিতে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজকে উদ্যোগ নিয়েছেন। দুর্বৃত্তায়নের চক্র আজকে ভেঙে দিতে হবে। এই দুর্নীতিবাজরা শুধু মুসলমান নয়, হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবার শত্রু। আপনাদের সম্পত্তির দিকে লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায়। হিন্দুদের সম্পদে যারা লোলুপ দৃষ্টিতে তাকায় তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, লুটেরা সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজ, দুর্নীতিবাজ থেকে শুরু করে আজকে সমাজ জীবনে যারা জনগণের কাছে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতে চায়, যারা আওয়ামী লীগের সরকারের নেতৃত্বে বিশাল অর্জন ম্লান করে দিতে চায়, তাদের দাঁত ভাঙা জবাব দেয়া হবে। তাদেরকে শাস্তি দেয়া হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সে যতই প্রভাবশালীই হোক না কেনো।
তিনি বলেন, দুর্নীতিবাজদের অভিযানের পাশাপাশি স্বাধীনতাবিরোধী, আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারী, যারা অপকর্ম, টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজির সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন-তৃণমূলের সম্মেলন হবে, এই সম্মেলনগুলোতে যাতে বিতর্কিত ব্যক্তিরা কমিটিতে স্থান না পায়। সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। সে ব্যাপারে আমাদের নেতৃবৃন্দ সতর্ক রয়েছে।
ভারতের সঙ্গে আমাদের বর্তমান সম্পর্ক চমৎকার দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নরেন্দ্র মোদি সাহস নিয়ে সীমান্ত সমস্যা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুরাহা করেছে। শান্তিপূর্ণভাবে সিটমহল সমস্যার সমাধান হয়েছে। সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে ভারত এবং আমরা একসাথে কাজ করে যাব। হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব। যেন কোনো অপশক্তি এই হিন্দু সমাজের পূজা উদযাপনে বাধা বিঘ্ন সৃষ্টি করতে না পারে। আপনারা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির পাশাপাশি সতর্ক থাকবেন। মুসলিম সম্প্রদায়ের সকলের কাছে অনুরোধ আপনারাও সর্তক থাকবেন।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাসিম, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সাংসদ হাজি সেলিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ প্রমুখ।
নতুন সময়/এনকে