রাজবাড়ীতে ডিলারদের বিরুদ্ধে বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় ডিলারদের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে ক্রেতাদেরকেও দেয়া হয় না কোনও ভাউচার।
কৃষকদের অভিযোগ, সরকারিভাবে সারের দাম নির্ধারিত থাকলেও ডিলাররা তা মানছেন না। বস্তা ও কেজিতে অনেক বেশি দাম নিচ্ছেন তারা। সরকারি মূল্যে সার চাইলে ডিলাররা বলে 'সার নেই' অথচ বেশি দাম দিলে ঠিকই পাওয়া যায় সার।
তারা বলছেন, ঠিকমত সার দিতে না পারায় যেমন ফসলের ক্ষতি হচ্ছে তেমনি বেশি দামে কেনায় আবাদে বেড়ে যাচ্ছে খরচ। কৃষক বাঁচাতে এই সিন্ডিকেটের বিরদ্ধে সরকরের এখনই ব্যবস্থা নেয়া উচিত বলেও দাবি তাদের। এছাড়া আবদে খরচ বাড়লে ফসল বিক্রির সময় দাম পান না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে চাহিদার তুলনায় বরাদ্দকৃত সারের জোগান কম বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। যার কারণে তারা বাইরে থেকে বেশি দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করছেন বলেও জানান। তবে প্রায় প্রতিটি ডিলারের গোডাউনে সারের বস্তার স্তুপ দেখা গেছে।
প্রসঙ্গত রাজবাড়ীর কালুখালী কৃষি নির্ভর একটি উপজেলা। ৭ ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ উপজেলার প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ শতাংশ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল এবং জেলার মধ্যে কালুখালীর কৃষির গুরুত্ব অনেক বেশি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারিভাবে টিএসপি ২৭ টাকা কেজি দরে ১৩৫০ টাকা বস্তা, এমওপি ২০ টাকা দরে ১০০০ টাকা বস্তা, ইউরিয়া ২৭ টাকা দরে ১৩৫০ টাকা বস্তা ও ডিএপি ২১ টাকা দরে ১০৫০ টাকা বস্তা বিক্রির কথা থাকলেও বস্তা প্রতি ২ থেকে ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে এবং খুচরা পর্যায়ে নেয়া হচ্ছে বেশি দাম।
কালুখালী কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, কালুখালীতে সরকারিভাবে অনুমোদিত মোট ৩১ জন সারের ডিলার রয়েছে। এরমধ্যে বিসিআইসি ডিলার ৭ জন, বিএডিসি ডিলার ৮ জন এবং খুচরা ডিলার রয়েছে ১৬ জন। মূলত এই ডিলাদের মাধ্যমেই সরকার নির্ধারিত মূল্যে কৃষক পর্যায়ে সার পৌঁছানোর কথা।
কৃষকরা জানান, আগে সারের দাম কম ছিল এখন বস্তা প্রতি টিএসপিতে ৪০০, ইউরিয়াতে ৩০০,পটাশে প্রায় ২০০ টাকা বাড়ছে। তারা বলেন, বাজারে সারের দাম বাড়ে কিন্তু ফসলের কোনও দাম পাওয়া যায় না।
এদিকে সারের ডিলাররা বলেন, বেশি দামে আমরা সার বিক্রি করি না। তবে বেশি দামে কিনে আনলে মাঝে মাঝে বিক্রি করা লাগে। আবার কেউ কেউ বলছেন, আমরা সরকার থেকে কৃষকদের জন্য যতটুকু বরাদ্দ পাই অতটুকু সরকারি দামেই বিক্রি করি।
উপজেলা কৃষি অফিসার পূর্ণিমা হালদার বলেন, বাইরে থেকে সার কিনে ডিলারদের বেশি দামে বিক্রির সুযোগ নাই । তাছাড়া বেশি দামে সার কেনা-বেচার সাথে জরিত দুই ডিলারই সমান অপরাধী। প্রমান পেলে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসও দেন এই উপজেলা কৃষি অফিসার।
