ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে আগস্ট ২০২৫, ১৪ই ভাদ্র ১৪৩২


জেমকন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা কাজী শাহেদ আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ


২৮ আগস্ট ২০২৫ ০৮:৪৫

সংগৃহিত

বাংলাদেশের প্রসিদ্ধ ও বহুমাত্রিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান জেমকন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা, স্বাধীনতা-উত্তর সময়ে আধুনিক সাংবাদিকতার পথপ্রদর্শক, দৈনিক আজকের কাগজের প্রকাশক ও সম্পাদক, বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক কাজী শাহেদ আহমেদের দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ (বৃহস্পতিবার, ২৮ আগস্ট)।

২০২৩ সালের ২৮ আগস্ট তিনি ঢাকায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী কাজী শাহেদ আহমেদ ১৯৪০ সালের ৭ নভেম্বর যশোরের পুরাতন কসবার কাজীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্ব পুরুষ যশোরের দেয়াপাড়ার বাসিন্দা ছিলেন।

তৎকালীন পাকিস্তানের লাহোর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। সেনাবাহিনীতে যোগদানের পর তাঁর প্রথম পোস্টিং ছিল মারি ও আজাদ কাশ্মিরে। পরবর্তীকালে ১৯৬৭ সালের শেষের দিকে তিনি রিসালপুর ইয়াং ইঞ্জিনিয়ার্স অফিসার্স কোর্সে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাকালীন প্লাটুন কমান্ডারদের একজন। ১৯৬৯ সালের ২ জানুয়ারি আমিনা আহমেদের সঙ্গে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পারিবারিক জীবনে তাঁর তিন সন্তান—কাজী নাবিল আহমেদ, কাজী আনিস আহমেদ ও কাজী ইনাম আহমেদ নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি সপরিবারে প্রিজনার অব ওয়ার ক্যাম্পে বন্দি ছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণে তাঁর অবদান অসামান্য। তিনি কুমিল্লায় বাংলাদেশ মিলিটারি অ্যাকাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৯ সালে ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। এরপর তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে একে একে প্রতিষ্ঠা করেন জেমিনী সি ফুড, দেশের প্রথম ও একমাত্র অর্গানিক চা বাগান কাজী অ্যান্ড কাজী টি এস্টেট লি., মীনা বাজার, জেমকন লি., জেমকন ইঞ্জিনিয়ারিং, জেম জুট লি.। চিরায়ত এক জ্যোতির্ময় বিশ্বকে ধারণ করে ২০০২ সালে তিনি গড়ে তোলেন ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ।

সমাজসেবা এবং মানবতায় অবদান হিসেবে তিনি যশোরে নিজের অর্থায়নে স্থাপন করেন সন্দীপন এতিমখানা। নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা প্রসারের লক্ষ্যে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন—যা পঞ্চগড়ের অসহায়, হতদরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলেছে আজও।

তাঁর বর্ণাঢ্য জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে লেখক-সত্তা। তাঁর লেখা প্রবন্ধগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘আমার লেখা’, ‘ঘরে আগুন লেগেছে’। তাঁর আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ হলো ‘জীবনের শিলালিপি’। বহুলপঠিত তাঁর উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘ভৈরব’, ‘পাশা’, ‘অপেক্ষা’, ‘দাঁতে কাঁটা পেনসিল’, ‘শিলু ও তাপসের কথা ও কাহিনী’।

বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী এই মহান ব্যক্তির দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে বাংলা ট্রিবিউন পরিবারের পক্ষ থেকে রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা।