ঢাকা সোমবার, ১৮ই আগস্ট ২০২৫, ৪ঠা ভাদ্র ১৪৩২


জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে হত্যা করা হয় মেজর জাহিদকে


১৭ আগস্ট ২০২৫ ০৭:৫৬

সংগৃহীত

পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ ও সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ভারতের সম্পৃক্ততার তথ্য জানার অপরাধে আওয়ামী লীগ সরকার জঙ্গি নাটক সাজিয়ে মেজর (অব.) জাহিদুল ইসলামকে হত্যা করে। মেধাবী ও চৌকশ সেনা কর্মকর্তা জাহিদুলকে হত্যার মধ্যেই দানবীয় ওই সরকারের খেদ মেটেনি। সরকার মেজর জাহিদের পরিবারকেও নিশ্চিহ্ন করতে সব রকমের চেষ্টা করে। অসহায় পরিবারটির ওপর নেমে আসে অমানবিক, নিষ্ঠুর ও জঘন্যতম নির্যাতন।

 

জঙ্গি নাটক করে মেজর জাহিদের ন্যায় তার অসহায় বিধবা স্ত্রী জেবুন্নাহার ইসলাম ও এতিম দুই কন্যাশিশুকে ডিবির আয়নাঘরে চোখ বেঁধে ৪ মাস ৭ দিন গুম করে রাখা হয়। জেবুন্নাহারের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের নামে চলে মধ্যযুগীয় নির্যাতন। তাকে হুমকি দেওয়া হয়, তিনি যেন তার স্বামীকে জঙ্গি বলে আদালতে স্বীকার করেন। তা না হলে জেবুন্নাহার ও দুই মেয়েকে তার স্বামী জাহিদের মতোই পরিণতি ভোগ করতে হবে। তিনি মিথ্যা স্বীকারোক্তি দিতে বারবার অপারগতা প্রকাশ করেন। এভাবে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি না পেয়ে তার বড় মেয়েকে গ্রেফতার করে তাকেও নির্যাতন শুরু করা হয়। মেজর জাহিদের মেয়েকে গ্রেফতারের সময়ও কথিত জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করা হয়। আজিমপুরের একটি বাসা থেকে তাকে জঙ্গি হিসাবে উদ্ধার দেখানো হয়। পরে তাকে কিশোর ভিকটিম সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হয়।

 

২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে মিরপুর রূপনগর আবাসিক এলাকার বাসা থেকে মেজর জাহিদকে ধরে বাসার নিচে এনে সরাসরি গুলি করে হত্যা করা হয়। এর এক ঘণ্টা আগে তার পরিবারের সদস্যদের জঙ্গি নাটক সাজিয়ে ওই বাসা থেকে উদ্ধার দেখানো হয়। তারপর তাকে ডিবি কার্যালয় নিয়ে যাওয়া হয়। ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চলে। নেওয়া হয় মিথ্যা জবানবন্দি। একই সঙ্গে নিহত মেজর জাহিদের ১টি মামলা ও তার স্ত্রী জেবুন্নাহারের বিরুদ্ধে ২টি সাজানো জঙ্গি মামলা দেওয়া হয়। ওই সরকার তার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে নাটকের পর নাটক করতে থাকে। তাকে প্রথম দফায় ডিবির আয়নাঘরে বন্দি রাখা ও নির্যাতন করার পর আবারও নতুন গল্প তৈরি করে। জেবুন্নাহার যখন কাশিমপুর কারাগারে তখন তাকে আশকোনার একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার দেখায়। এই উদ্ধারের ১৬ দিন পর তাকে ফের কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।