এনবিআর বিভক্তির অধ্যাদেশ থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিভক্তির উদ্দেশ্যে জারি করা ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ আপাতত কার্যকর করা হচ্ছে না। এনবিআর কর্মকর্তাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংশোধিত অধ্যাদেশ প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত এনবিআরের কার্যক্রম বিদ্যমান কাঠামো অনুযায়ী চলবে। কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যথারীতি তাদের দায়িত্ব পালন করবেন।
এর আগে গত ১২ মে সরকার রাজস্ব খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে একটি নতুন অধ্যাদেশ জারি করে। এতে এনবিআরকে দুটি ভাগে ভাগ করার প্রস্তাব ছিল, যা নিয়ে এনবিআর কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দেয় এবং তারা আন্দোলনে নামেন। এর প্রেক্ষিতে ২০ মে দীর্ঘ বৈঠক হয় আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে সরকারের চার উপদেষ্টার এবং রাজস্ব নীতি সংস্কার সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সদস্যদের। আলোচনায় অংশ নেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ১৩ জন প্রতিনিধি।
বৈঠকে এনবিআরের প্রতিনিধিরা তাদের উদ্বেগ ও আপত্তির বিষয়গুলো তুলে ধরেন। উপদেষ্টারাও তা গুরুত্বসহকারে শোনেন এবং আশ্বস্ত করেন যে, সকল অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করেই অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে। তার আগে এটি কার্যকর করা হবে না।
অর্থ মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে জানায়, আলোচনার মাধ্যমে যে বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো হয়েছে তা গ্রহণযোগ্য। সেই আলোচনার ফল উপেক্ষা করে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে পুনরায় অসহযোগ কর্মসূচি ঘোষণা করা কোনোভাবেই যৌক্তিক নয় বলে মনে করে মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে যেসব বিষয় উল্লেখ করা হয়:
১. যেহেতু অধ্যাদেশটি প্রয়োজনীয় সংশোধন করে বাস্তবায়ন করার কাজটি অনেক সময়সাপেক্ষ, সেহেতু জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সকল কার্যক্রম পূর্বের ন্যায় অব্যাহত থাকবে এবং কাস্টমস ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ বিদ্যমান ব্যবস্থায় সকল কার্যক্রম সম্পাদন করবেন।
২. বিসিএস (কর) ও বিসিএস (শুল্ক ও আবগারী) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষূন্ন রেখে পৃথকীকরণের প্রশাসনিক কাঠামো কিভাবে প্রণীত হবে তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও গুরুত্বপূর্ণ সকল অংশীজনদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনা হবে।
৩. বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সকল কার্যক্রম পূর্বের ন্যায় অব্যাহত থাকবে।
৪. কাস্টমস ও কর ক্যাডারের সদস্যদের কোন পদ-পদবি কমানোর কোন পরিকল্পনা সরকারের নেই বরং সংস্কার কাজ সম্পাদন হলে তাদের পদসংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং সচিব পদে নিয়োগসহ পদোন্নতির সুযোগ আরো অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে।