ঢাকা বৃহঃস্পতিবার, ৯ই মে ২০২৪, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১


লেগুনায় সিট মিলে পেশী শক্তিতে


৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:৫২

পেশী শক্তির বলে সিট পেতে হয় লেগুনায়। খিলগাঁও থেকে গুলিস্তানগামী যাত্রীদের কাছে লেগুনা সিট পাওয়া যেন সোনার হরিণ। কাউকে ছাড় দেয়া হয় না লেগুনায় ওঠার সময় সে বৃদ্ধ, দুর্বল হোক আর মহিলা হোক না কেন পেশী শক্তির বলেই লেগুনার সিটের যোগ্য করে নিতে হয় নিজেকে।

এমন প্রতিযোগিতাপূর্ণ ভাবে লেগুনায় উঠতে হয় শুক্রবার, শনিবার ব্যতীত সপ্তাহের বাকি দিন গুলোতে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১১টা বা ১২টা পর্যন্ত এভাবেই প্রতিযোগিতা চলতে থাকে লেগুনায় ওঠার।

এই লেগুনা গাড়িগুলো খুব বেশি বড় না হলেও প্রতি সিটে ৬ জন করে বসতে হয়। আর সামনে ড্রাইভার এর পাশে একজনের সিট থাকলেও বসতে হয় দু'জনকে। কিন্তু তাতেও কোনো ক্ষোভ নেই সাধারণ যাত্রীদের মাঝে।

কারণ তাদেরকে নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে যেতে হবে যে কোন পন্থায়। তাই অনেক সময় লেগুনার পিছনে বাঙ্কারে ঝুলতে ঝুলতে অফিসে যেতে দেখা যায় অনেকের।

সকাল আটটা বাজতেই খিলগাঁও রেলগেট, শাহজাহানপুর আমতলায় আশপাশ থেকে ছুটে আসা অফিসগামী মানুষের ঢল নামে। তারা ফকিরাপুল, মতিঝিল, গুলিস্তান যাবার উদ্দেশ্যেই লেগুনায় উঠার প্রতিযোগিতা করে।

কিন্তু লেগুনায় ওঠার প্রতিযোগিতায় সর্বদায় দেখা চাই নারীরা কিংবা দুর্বল লোকেরাই পিছিয়ে পড়ে। অনেক সময় তাদের দেখা যায় লেগুনায় উঠার বৃথা চেষ্টা করে জায়গা না পায়ে পায়ে হেঁটেই অফিসে যাচ্ছে।

লেগুনার জন্য অপেক্ষারত অর্থ মন্ত্রণালয়ের আরিফ নামে এক কর্মচারী নতুনসময়কে জানান, আধাঘন্টা থেকে ৪৫ মিনিট ধরে এখানে অপেক্ষা করছি। কিন্তু পেশী শক্তির বলে গাড়িতে উঠতে না পারায় এখনো অফিসে যেতে পারেনি।

তিনি আরো জানান, এই রোডে কয়েকটা বিআরটিসি বাস দিলে যাত্রীদের জন্য খুব ভালো হয়। কিন্তু এই রোডে বড় কোন বাস ঢুকতে দেয় না সিন্ডিকেটেরা। আর কোনো বাস ঢুকলোও যাত্রী ওঠায় না।

লেগুনা ড্রাইভার আরিফের কাছে তার প্রতিদিনের আয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, মালিককে দিতে হয় ১৫'শত টাকা। আর রাস্তায় স্যার এদের দিতে দিতে সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার সময় আমাদের থাকে না এমন অবস্থা।

তিনি আরো জানান, খিলগাঁও থেকে গুলিস্তান পর্যন্ত পাঁচ থেকে সাত জায়গায় তাদের প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয় না হলে এ রোডে গাড়ি চালাতে দেয় না।

লেগুনা জন্য অপেক্ষারত অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ, মফিদুল, রায়হান, আমেনা বেগম সকলেই একই অভিযোগ করে প্রতিনিধিকে বলেন, এই রোডে কোন বড় বাস ঢুকতে দেয় না। একটি সিন্ডিকেট টিম। যাত্রী ভোগান্তি লাঘবের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করে তারা।

উল্লেখ্য, খিলগাঁও বাসাবো থেকে গুলিস্থান পর্যন্ত এই রোডে ১১৭টি লেগুনা চলাচল করে। প্রতিদিন মালিকের জমা ১৫' শত টাকা।

আইএমটি