ঢাকা শুক্রবার, ২রা মে ২০২৫, ২০শে বৈশাখ ১৪৩২


ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতিকে পেটালেন ঢাবি বর্তমান সভাপতি


২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:১৮

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শাখা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাসের বিরুদ্ধে। লিফটে ওঠা নিয়ে কথা কাটাকাটির জের ধরে তাকে মারধর করা হয়।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) নতুন ভবনে ঘটনাটি ঘটে। এতে রুহুল আমিন ছাড়াও আরও দুইজন আহত হন। আহতদের ঢামেক হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রুহুল আমিনের বড়ভাই ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুর রহিমের শাশুড়ি ঢামেকে মারা যান। তার লাশ নিতে আসেন রুহুল আমিন, আব্দুর রহিম, তার স্ত্রী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা রানা। সে সময় ঢাবি ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস ও তার বড় ভাই এবং ভাবি লিফটে চড়ছিলেন। তাদের সঙ্গে সঞ্জিতের কয়েকজন অনুসারীও লিফটে উঠেন।

এসময় রুহুল আমিন সঞ্জিতের অনুসারীদের কয়েকজনকে লিফট থেকে নেমে তাদেরও ওঠার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেন। বিষয়টি নিয়ে সঞ্জিতের ভাইয়ের সঙ্গে রুহুলের কথা কাটাকাটি হয়।

কথা কাটাকাটির ৪০ মিনিট পর ঢাবি ছাত্রলীগের বিভিন্ন হল থেকে শতাধিক নেতাকর্মী ঢামেকের নতুন ভবনের ৮ তলায় উঠে রুহুল আমিনকে বেধড়ক মারধর শুরু করেন। মারতে মারতে রুহুলকে ৮ তলা থেকে দ্বিতীয় তলায় নিয়ে আসেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। এ সময় হাসপাতালে আসা রোগী ও দর্শনার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।

এসময় ওই এলাকায় থাকা ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা ও ঢাকা কলেজ শাখার ছাত্রলীগ কর্মী কাজী শাওন ও মমিনুর রহমান রকিকেও মারধর করেন তারা। শাওন আলিয়া মাদ্রাসার ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ও মমিনুর ঢাকা কলেজের ২০১২-১৩ সেশনের ম্যানেজমেন্টের শিক্ষার্থী।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি রুহুল আমিন জানান, ‘বড় ভাইয়ের সামনে ছোট ভাইকে মারধর কতটা হৃদয়বিদারক। দুই ঘণ্টা যাবত তারা আমার খালার লাশ আটকে রেখেছিল। এটা মেনে নেওয়া যায় না। ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিতের ২০-২৫ জন অনুসারী আমাকে মারধর করেছে।’

রুহুল আমিন আরও জানান, ‘আমাকে মারতে মারতে সঞ্জিত নিজেই ৮ তলা থেকে নিচে নিয়ে আসে। মারার পাশাপাশি আমাকে শিবির বলে অপবাদ দেয়। যতক্ষণ পর্যন্ত এর বিচার না হবে ততক্ষণ আমি খাব না, কেউ যদি আমাকে জোর করে তবে আমি আত্মহত্যা করব। এই কমিটির দ্বারা আমি যে অপমানের শিকার হয়েছি তা হাজার বার জন্ম নিলেও ভুলব না।’

এ বিষয়ে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সঞ্জিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘রুহুল আমিন আমার ভাই ও ভাবিকে ধাক্কা দিয়েছিলেন। আমার ভাই পরিচয় দেওয়ার পরও গালি দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কর্মীরা যায়। আমি তাদের নিয়ে ক্যাম্পাসে চলে আসি।’

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘এটা অত্যন্ত দুখঃজনক। একজন সিনিয়র নেতা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও একটা হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তিনি। তার ওপর এ রকম হামলা অবশ্যই নিন্দনীয় ও ন্যাক্কারজনক। ওনাকে আমরা বলেছি লিখিত অভিযোগ দিতে। আমরা তদন্ত করে এটার বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেবো।’

আইএমটি