গোরস্থানেও পুলিশ মোতায়েন প্রয়োজন: নজরুল

আওয়ামী লীগ সরকারের উচিত গোরস্থানেও পুলিশ মোতায়েন করা যেন মৃতরা এসে নির্বাচনে ঝামেলা সৃষ্টি না করতে পারে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জোট সমন্বয়কারী নজরুল ইসলাম খান এ মন্তব্য করে বলেন, দেড় বছর আগে, যিনি মারা গেছেন তিনি নাকি পুলিশের ওপর ইটপাটকেল মেরেছেন।
মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাংলাদেশ লেবার পার্টি আয়োজিত এক সংহতি সমাবেশে এই মন্তব্য করেন তিনি।
নজরুল বলেন, আমাদের দলের লোকজন আগস্ট মাসে মারা গেছেন যিনি, তিনি নাকি সেপ্টেম্বর মাসে পুলিশকে আক্রমণ করেছেন। যারা জীবিত আছে তারাই শুধু এই সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে না, যারা মারা গেছে তারাও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই হলো আমাদের দেশের পরিস্থিতি। মৃত মানুষেরও মুক্তি নেই এই সরকারের হাত থেকে।
তিনি বলেন, আবার আমরা যখন মিটিং মিছিল করি, পুলিশ দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায় যাতে করে কোনো ঝামেলা না হয়। এখন দেখা যাচ্ছে গোরস্থানে পুলিশ মোতায়েন করা দরকার, যদি মৃতরা এসে ঝামেলা করে। যারা মারা গেছে তারাও নাকি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন।
তিনি আরও বলেন, গত কয়েকদিনে আমাদের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার মামলা দেওয়া হয়েছে। কি অদ্ভুত একটি দেশ, এই দেশের জন্যই কি মুক্তিযুদ্ধ করলাম। পত্রিকায় এসেছে পরিবেশ দূষণে মৃত্যুর হার দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ এই দেশে। কিন্তু এই হিসাব কেউ করে নাই, যে রাজনৈতিক দূষণে বিশ্বে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যাবে এই দূষণে।
নজরুল ইসলাম বলেন, গত কয়েকদিনেই হাজার হাজার মামলা দেওয়া হয়েছে, লাখ লাখ আসামি করা হয়েছে। আমাদের মিটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হয়, আমাদের কর্মীরা আসার সময় গ্রেফতার হন কিংবা যাওয়ার সময় গ্রেফতার হন। মিটিংয়ে আসলে তাদের ফিরে যাওয়ার উপায় থাকেনা।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের নিউইয়র্ক যাওয়া নিয়ে আওয়ামি লীগ নেতৃবৃন্দের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, হাছান মাহমুদ সাহেব মাঝেমধ্যে উল্টাপাল্টা কথা বার্তা বলেন। যার কারণে তাদের দলের নেত্রী সাজেদা চৌধুরীও প্রকাশ্যে মিটিংয়ে বলেছিলেন, দেশের মধ্যে বহু বেয়াদপ দেখেছি, এরকম দেখি নাই।
জোটের সমন্বয়কারী বলেন, হাছান মাহমুদ বলেছিলেন যে ফখরুল ইসলাম সাহেব জাতিসংঘে কারো দাওয়াতে যাননি, এটা মিথ্যাচার করা হয়েছ। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তর। আমাদের এখানে যে সচিবালয় আছে এখানে কি এপয়েন্টমেন্ট ছাড়া, পাশ ছাড়া যেতে পারবেন? মির্জা ফখরুল যে এখন থেকে নিউইয়র্ক গেলেন, সেখানে জাতিসংঘের মহাসচিবের প্রতিনিধি তার সঙ্গে কথা বললেন কোনো দাওয়াত ছাড়া? এরকম তো হয়না কখনও। এর আগে এক সহকারী মহাসচিব এসেছিলেন তারানকো। তার সঙ্গে দুই জোটের শীর্ষ নেতারা দেখা করেছেন।
খালেদা জিয়াকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব সরকারের এমন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ব্রিটিশ আইন থেকে বলা হয়েছে, আপনি যখন জেলখানায় ঢুকেন তখন আপনার ওজন মাপা হয়। জেল থেকে বের হওয়ার সময় ওজন মেপে যদি কম পাওয়া যায় তাহলে আপনি তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দিতে পারবেন। অর্থাৎ যারা সরকারের হেফাজতে থাকবে, তাদের নিরাপত্তা এবং সুস্থতা দেখার দায়িত্ব সরকারের।
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, খালেদা জিয়া ক্রমান্বয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তিনি কোনো সাধারণ নাগরিক নন। আমি সরকারকে অনুরোধ করবো তার চিকিৎসার ব্যবস্থা কোনো বিশেষায়িত হাসপাতালে করার জন্য।
বাংলাদেশের লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জিনাফ সভাপতি লায়ন মিয়া মোঃ আনোয়ার, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।
একেএ