ঢাকা শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


ভোলা কোর্টের পিপি কিরণের দৃষ্টান্ত স্থাপনে কাদঁলো ভুক্তভুগী নারী


১৮ মে ২০১৯ ২১:৪৮

নতুনসময় ছবি

চরফ্যশনের আধুনিক নির্যাতনের আরেক নাম নলীনী 'ফাতেমা"। তার শশুর বাড়ির লোকজন আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার জন্য শরিরে আগুন ধরিয়ে দিলে হাত হইতে উপরের দিকে ৮০% অংশ পুড়ে যায়। থানায় মামলা হলেও কোন প্রকার প্রতিকার পাননি আগুনে পোড়া আসহায় নারী। থানা পুলিশ যা করার তাই করলেন।

মৃত্যু পথযাত্রী নারীকে ভয় দেখিয়ে জোর পূর্বক স্বীকারোক্তি নিলেন যে, সে আগুন পোহাতে গিয়ে নিজের শরিরে নিজেই আগুন দিয়েছেন। এই স্বীকারোক্তি দেখিয়ে পুলিশ মামলাটির ফাইনাল রিপোর্টও দেন।

এদিকে, শ্বশুর পক্ষের লোকজন ভিকটিমকে চাপ দিতে থাকেন কোর্ট থেকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য। আসহায় ভিকটিম ভয়ে ভয়ে মামলাটি কোর্ট থেকে প্রত্যাহারের জন্য ভোলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুানালের পিপি কিরণ তালুকদারের কাছে আসেন।

কিরণ তালুকদার অসহায় নারীর কথা শুনে আশ্বস্ত করে বলেন, তোমার কোন ভয় নেই বোন তুমি আমার কাছে সব খুলে বল। সাথে সাথে এই প্রজ্ঞাবান পিপি একটি যুক্তিও দাঁড় করালেন যে, যদি আগুন পোহাতে গিয়ে তোমার গায়ে আগুন লাগে তাহলে তোমার শরিরের নিচের অংশে আগুন লাগবে। আপনার হাত হইতে উপরের দিকে আগুন লাগলো কিভাবে? এসব কথা শুনে আসহায় মেয়েটি কান্নাজড়িত কন্ঠে সব কথা খুলে বললেন পিপির কাছে।

পিপি তিনি সাথে সাথে ওই মামলাটির পূর্নঃ তদন্ত ও বিচারের জন্য পুলিশের দেয়া ফাইনাল রিপোর্টের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু ট্রাইবুনালে নারাজী দাখিল করেন। ভোলার প্রথম নারী শিশু ট্রাইবুনালের বিজ্ঞ জজ তো নাছর বান্দা।

গত ৭ নভেম্বর ন্যায় বিচারের স্বার্থে ওই কর্ম দিবসে প্রথমেই গুরুত্ব দিয়ে ভিকিটিমের কথা শুনেন এবং মামলাটি সরাসরি আমলে নিয়ে সকল আসামীকে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারির আদেশ দেন। নারী শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের মানবতার বিচারক আতোয়ার রহমান। পিপি গোলাম মোরশেদ কিরণ তালুকদারের নারাজী শুনানীর দিন সকল বিজ্ঞ আইনজীবীগন ও বিচার প্রার্থী মানুষ অধীর আগ্রহে উক্ত মামলাটি শুনেন এবং জজ আতোয়ার রহমানের ন্যায় বিচারে তৃপ্ত করেন ভোলার বিচার পাড়া।

বিচারকের আদেশ ও পিপি কিরণ তালুকদারের মহানুভবতায় শত বেদনার মাঝেও আনন্দের কান্না কাঁদলেন ওই দিন কোর্ট প্রঙ্গনে আসা বিচার প্রার্থীরা। পরবর্তীতে ওই মামলার সকল আসামীগন জেল হাজতে প্রেরণ হয়।এ বিচারে সকল আইনজীবীরা ফিরে পেলেন তাদের হারানো সম্মান। আর একজন মানবতার ফেরিওয়ালা পিপি প্রমান করলেন বিবেক আজও বেচেঁ আছে।’

ছবি ভোলা নারী শিশু কোর্টে পিপি এ্যাড: গোলাম মোরশেদ কিরণ

এদিকে, মামলাটি অন্যদিকে প্রবাহিত করার সাথে জড়িতদের তদন্ত করে গ্রেফতারের দাবি জানান সাধারণ জণগন। নুসরাতের হত্যার পরও মাঠে ময়দানে প্রভাবশালীদের বেপরোয়া দেখে আজও মানুষ হতবাক। নারী নির্যাতন হলেই কিছু অসাধু চক্র কিংবা স্থানীয় প্রভাবশালীরা মোটা অংকের বিনিময় অপরাধীদের আশ্রয় দিতে সাহায্য করেন আর এতেই চরম আইনি ব্যবস্থায় বাধাঁ পরে । এসকল ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থার নেয়ারও দাবি জানান জনসাধারণ।বেশির ভাগ নারী নির্যাতন কাজে প্রভাবশালীদের হাত থাকায় দিন দিন অপরাধীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।সমাজ থেকে নারীদের নির্যাতন উক্ত্যাক্ত বন্ধে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন সমাজ বিশ্লেষকরা।

নতুনসময়/আল-এম